বৃহস্পতিবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিশ্ব ইজতেমার অবদান

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

বিশ্ব ইজতেমার অবদান

আজ থেকে টঙ্গীর তুরাগপাড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাবলিগ জামাতের বিশ্ব ইজতেমা। পৃথিবীতে ইসলাম প্রচারের অন্যতম মাধ্যম হলো দাওয়াতে তাবলিগ। আর এ তাবলিগের মাধ্যমে আজ পৃথিবীর আনাচে-কানাচে দিকদিগন্তে ছড়িয়ে পড়েছে আল্লাহর একাত্মবাদ ও আল্লাহর বাণী। আর এ তাবলিগের মাধ্যমে পথহারা মানুষ পাচ্ছে সঠিক পথের সন্ধান এবং পাচ্ছে অন্ধকারের অতল গহ্বর থেকে মুক্তির পথ। আর এ তাবলিগ তথা আল্লাহর দীনকে মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং পথহারা মানুষকে সুপথের সন্ধান দেওয়া এবং মানুষকে জাহান্নামের উত্তাপ অনল থেকে মুক্তি দিয়ে সব শান্তির কেন্দ্রস্থল জান্নাতের দিকে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যেই এ বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হয়। আর এ বিশ্ব ইজতেমাই গোটা মানব জাতির জন্য আল্লাহর এক অমূল্য দান। বিশ্ব ইজতেমা, শব্দটি বাংলা ও আরবি শব্দের সম্মিলনে সৃষ্ট। আরবি ইজতেমা অর্থÑ সম্মেলন, সভা বা সমাবেশ। আর ধর্মীয় কোনো কাজে বহু সংখ্যক মানুষকে একত্রিত করাকে ইসলামের পরিভাষায় ইজতেমা বলে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে পৃথিবীর বহুসংখ্যক দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যেখানে সমবেত হন তাকে বিশ্ব ইজতেমা বলে। আর সাধারণত প্রতিবছর শীতকালে বাংলাদেশের তুরাগ নদীর তীরে যে বিশ্ব ইজতেমা সংগঠিত হয় সেটাই মুসলিম জাহানে বিশ্ব ইজতেমা নামে সুপ্রসিদ্ধ ও সুপরিচিত।

আল্লাহতায়ালা মানব জাতির কল্যাণে যুগে যুগে অসংখ্য অগণিত নবী-রসুল প্রেরণ করেছেন। যারা আল্লাহর একাত্মবাদ ও প্রকৃত দীন পথহারা ও দিশাহারা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে তাদের আল্লাহর প্রকৃত পথে নিয়ে আসেন এবং সর্বশেষ আল্লাহর রসুল (সা.)-কে গোটা মানব জাতির জন্য এক অপূর্ব রহমত হিসেবে প্রেরণ করেন। যিনি গোটা মানব জাতিকে ইসলামের সুশীতল ছায়ার দিকে আহ্বান করেন এবং তিনি যাবতীয় মিথ্যা, কুসংস্কার, অশ্লীল কাজ ও সর্বপ্রকার পথভ্রষ্টতা থেকে মানুষকে সুপথের দিকে আহ্বান করেন এবং তিনি তার এ দায়িত্বগুলো সাহাবায়ে কেরামসহ গোটা মানব জাতির ওপর রেখে গেছেন এবং বিশেষভাবে রেখে গেছেন তার উত্তরসূরি আলেমদের ওপর এবং তার সে উত্তরসূরি আলেমদের মধ্যে অন্যতম আলেম হলেন হজরত ইলিয়াস (রহ.), যিনি ভারতের উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুর এলাকার ইসলামী দাওয়াত তথা তাবলিগের প্রবর্তন করেন এবং একই সঙ্গে এলাকাভিত্তিক সম্মিলন বা ইজতেমারও আয়োজন করেন। বাংলাদেশে ১৯৫০-এর দশকে তাবলিগ জামাতের প্রচলন করেন মাওলানা আবদুল আজিজ (রহ.)।

বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় মারকাজ বা প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ থেকে এ সমাবেশ কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা করা হয়। পুরো সমাবেশের আয়োজনই করে থাকেন একঝাঁক ধর্মপ্রাণ মুসলমান স্বেচ্ছাসেবক। আর্থিক শারীরিক সহায়তা দিয়ে প্রথম থেকে শেষাবধি তারা এ সমাবেশকে সফল করতে সচেষ্ট থাকেন।  আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাবলিগ জামাতের কার্যক্রমে অংশগ্রহণের তৌফিক দান করুন।

            লেখক : ইসলামী গবেষক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর