রবিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

না-ফেরার দেশে আল মাহমুদ

সোনালী কাবিনের কবিকে শেষ শ্রদ্ধা

না-ফেরার দেশে চলে গেলেন সোনালী কাবিনের কবি আল মাহমুদ। শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে রাজধানীর ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের এই অন্যতম প্রধান কবি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে তাকে ‘লাইফ সাপোর্ট’ দেওয়া হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কবি আল মাহমুদকে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন বাংলা সাহিত্যের এই প্রথিতযশা কবি। ওইদিন ইবনে সিনা হাসপাতালে তাকে প্রথমে সিসিইউতে ও পরে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৌড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আল মাহমুদ। তাঁর পুরো নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৬৮ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। কবি আল মাহমুদ কবিতার পাশাপাশি গল্প-উপন্যাস লিখেও দৃষ্টি কাড়েন। প্রাবন্ধিক হিসেবেও তিনি ছিলেন অনন্য। সাংবাদিকতাকে একসময় পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। স্বাধীনতার পর ‘গণকণ্ঠ’ নামের জনপ্রিয় দৈনিকের সম্পাদক ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নেন। আল মাহমুদের প্রতিটি সৃষ্টি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের দাবিদার। তবে ‘সোনালী কাবিন’ লিখে তিনি জীবন্ত কিংবদন্তি হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হন। ‘আমাদের ধর্ম হোক ফসলের সুষম বণ্টন’ সোনালী কাবিনের এ পঙ্ক্তির মাধ্যমে আল মাহমুদ স্বাধীনতার পর তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সমাজতান্ত্রিক ধ্যান-ধারণা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। সাংবাদিকতার জন্য তাঁকে এক বছর কারাজীবন ভোগ করতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তাঁকে জেল থেকে মুক্তি দিয়ে শিল্পকলা একাডেমির সহকারী পরিচালক পদে চাকরি দেন। সমাজবাদী চিন্তা-চেতনা আল মাহমুদকে সমাজ বদলের সৈনিক হিসেবে পরিচিত করে তুললেও তিনি সেই মতাদর্শ থেকে এক পর্যায়ে সরে আসেন। সোনালী কাবিনের বক্তব্যকে কখনো অস্বীকার না করলেও তাঁর সঙ্গে যাঁদের সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাঁদের অনেকেরই ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। তার পরও আল মাহমুদ দেশের সাহিত্যাঙ্গনে বেঁচে থাকবেন সোনালী কাবিনের কবি হিসেবে। আধুনিক বাংলা কবিতার এই অন্যতম প্রাণপুরুষকে আমাদের শেষ শ্রদ্ধা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর