মঙ্গলবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নকল ভেজাল ওষুধ

অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন

ওষুধ উৎপাদনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশকে শীর্ষ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বাংলাদেশ থেকে ওষুধ রপ্তানি হয় ইউরোপ আমেরিকার অনেক দেশে। ওষুধের মান সম্পর্কে যেসব দেশ আপসহীন সেসব দেশেও রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশি ওষুধ। অথচ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ওষুধের বাজারে চলছে সীমাহীন নৈরাজ্য। মানহীন ও নকল ভেজাল ওষুধ বাণিজ্যের অরাজক পরিস্থিতির জন্য কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র মুখ্য ভূমিকা পালন করছে এমন অভিযোগ প্রবল। কঠোর মনিটরিং ও কার্যকর শাস্তির ব্যবস্থা না থাকায় ভেজালকারীরা বেপরোয়া হয়ে ওঠার সুযোগ পাচ্ছে। যেসব কোম্পানি নকল ও ভেজাল ওষুধ তৈরির দায়ে অভিযুক্ত, সেগুলোই ঘুরেফিরে বার বার এ তৎপরতায় লিপ্ত হচ্ছে। ভেজাল ও নকল ওষুধের কারণে অনেক সময় রোগী সুস্থ হওয়ার বদলে হয়ে পড়ছে আরও অসুস্থ। প্রাণহানির ঘটনাও কম নয়। কিন্তু দায়ী ব্যক্তিরা পার পেয়ে যাচ্ছেন আইনের ফাঁকফোকরের সুবাদে। ফলে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ওষুধ নকল ভেজালের হোতারা থেকে যাচ্ছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। নকল ওষুধ প্রস্তুত ও ভেজাল ওষুধ বিপণনে রাজধানীর মিটফোর্ডকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট, ফার্মেসিগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কোনো কোনো নেতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। সরকারের মাঠপর্যায়ে থাকা ড্রাগ সুপারদের যোগসাজশে দেশজুড়ে সংঘবদ্ধভাবে গড়ে উঠেছে নকল-ভেজাল ওষুধের বিশাল নেটওয়ার্ক। ওষুধ নকল ভেজাল কিংবা মানহীন ওষুধ বিপণন বন্ধ করতে হলে এসব সুসংবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। মানহীন ওষুধ কোম্পানিগুলোর লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নেওয়াও জরুরি। নকল ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বিপণনের অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের মতো কঠিন সাজা সংবলিত আইন প্রণয়নের কথাও ভাবতে হবে। ওষুধের নামে প্রতারণা বন্ধেও নিতে হবে কঠোর ব্যবস্থা।  মানুষ ওষুধ ব্যবহার করে রোগ নিরাময়ের জন্য।  নকল ভেজাল ওষুধ নিরাময়ের বদলে জীবনহানির আশঙ্কা সৃষ্টি করে। যা কোনো সভ্য সমাজে চলতে দেওয়া উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর