শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

শিক্ষার উন্নয়ন

দুর্বলতা দূর করতে হবে

বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়ন এবং উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে উদ্ভাবন ও গবেষণাকে গুরুত্ব দেওয়ার সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটি তাদের এক প্রতিবেদনে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে চারটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়ার সুপারিশ করেছে। বুধবার রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট প্রতিবেদন ২০১৮-তে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কিত সুপারিশ তুলে ধরা হয়। বিশ্বব্যাংকের ‘লার্নিং টু রিয়ালাইজ এডুকেশন্স প্রমিজ-২০১৮’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে শিক্ষার গুণগতমানে ঘাটতি রয়েছে। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের যা শেখানো হচ্ছে তা পর্যাপ্ত নয়। পঞ্চম শ্রেণিতে ১১ বছর পর্যন্ত যে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে তা মূলত সাড়ে ছয় বছরেই পাওয়ার কথা। ফলে অন্যান্য দেশের তুলনায় সাড়ে চার বছর পিছিয়ে থাকছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। তবে প্রাথমিক শিক্ষায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ও জেন্ডার সমতা সাফল্যজনক। প্রতিবেদনে শিক্ষকদের গুণগতমানে ঘাটতি থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। বিশেষ করে অঙ্ক ও বিজ্ঞানে শিশুদের দুর্বলতার কারণ হিসেবে শিক্ষকদের অদক্ষতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, উচ্চশিক্ষায় গবেষণা ও উদ্ভাবনে দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে দেশের প্রাথমিক শিক্ষার যে ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে তাতে বাস্তব চিত্রেরই প্রতিফলন ঘটেছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে জাতীয় বাজেটের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হলেও তার সিংহভাগই অপচয় ঘটছে প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে যোগ্য শিক্ষকের অভাবে। প্রাথমিক শিক্ষকরা বাংলাদেশের বিবেচনায় তুলনামূলক আকর্ষণীয় বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা পেলেও চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে যোগ্যতার বদলে উৎকোচ প্রাধান্য পাওয়ায় বহু ক্ষেত্রে অযোগ্যরাই শিক্ষক হিসেবে ঠাঁই পেয়েছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে উদ্ভাবন ও গবেষণা উপেক্ষিত হওয়ায় দক্ষ জনবলের অভাবে চাকরির ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে লোক আনা হচ্ছে। এর বিপরীতে দেশে উচ্চশিক্ষিতদের ভয়াবহ বেকারত্ব সৃষ্টি হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাংকের সুপারিশগুলো প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার এবং আমাদের বিশ্বাস, শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বলতা কাটাতে সুপারিশগুলো যথাযথভাবে বিবেচনা করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর