শিরোনাম
রবিবার, ৩ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিষফোঁড়ার নাম রোহিঙ্গা

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দায়িত্ব নিতে হবে

রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের ওপর বিষফোঁড়ার মতো চেপে বসেছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে আশ্রয় দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু এ সংকটের সম্মানজনক সমাধানে যথাযথ প্রয়াস চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রাখার চেষ্টা করেনি তারা। জাতিসংঘের ভূমিকা এ ক্ষেত্রে ঠুঁটো জগন্নাথের মতো। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যেন করার কিছু নেই। দুই বন্ধু দেশ চীন ও ভারতের ভূমিকাও হতাশার। জাতিসংঘ সদর দফতরে মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন, বাংলাদেশের আন্তরিক প্রচেষ্টার পরও মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। একে দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা লোকজনকে আশ্রয় দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ আর নেই। নিরাপত্তা পরিষদে শুক্রবার ভোরের বৈঠকের মধ্য দিয়ে প্রায় এক মাস পর রোহিঙ্গা ইস্যু আবার আলোচনায় ফিরলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বরং এ বৈঠক হওয়া নিয়েই ছিল অনিশ্চয়তা। চীন ও রাশিয়া মিয়ানমার ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠানে আপত্তি জানায়। পরিষদের ১৫টি সদস্যের মধ্যে অন্তত নয়টি সদস্য বৈঠকে বসতে আগ্রহী হওয়ায় চীন ও রাশিয়া তা ঠেকাতে পারেনি। তবে আহূত বৈঠকেও দুই দেশের মিয়ানমারপ্রীতি প্রকাশ পায়। বৈঠকে বিশেষ আমন্ত্রণে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার অংশ নেয়। পররাষ্ট্র সচিব মিয়ানমারের সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে সন্ত্রাসের ব্যাপারে বাংলাদেশের কোনো ধরনের ছাড় না দেওয়ার নীতিও পরিষদে তুলে ধরেন। তিনি আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আনান কমিশনের সুপারিশগুলোর পূর্ণ বাস্তবায়ন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্ত অগ্রগতির জন্য নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা এবং মিয়ানমারের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গাদের জন্য সেইফ জোন সৃষ্টির প্রস্তাব দেন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে পররাষ্ট্র সচিবের ক্ষোভ খুবই যুক্তিসংগত। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকটের কোনো পক্ষ নয়। ঘনবসতির দেশ হওয়া সত্ত্বেও ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ভার বাংলাদেশকে বহন করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ যেহেতু জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, সেহেতু হয় সমস্যার সমাধান, নয় অবাঞ্ছিতদের নিজেদের জিম্মায় নিতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।

সর্বশেষ খবর