সোমবার, ৪ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ডাকসু নির্বাচন

ভয়ভীতি হীন পরিবেশ কাম্য

দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে অঘোষিত নিষেধাজ্ঞার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ডাকসুর ভিপি পদে ২১ ও জিএস পদে ১৪ জন প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আভাস মিললেও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় রয়েছে একটি বাদে অংশগ্রহণকারী সব ছাত্র সংগঠনের মধ্যে। ছাত্রলীগ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের দাবি করলেও প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ভয়ভীতি ও হুমকি ধমকির অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা চায় ডাকসু নির্বাচন যেন কোনোভাবেই কলঙ্কিত না হয়। যারাই জিতুক, নির্বাচনের রায়ে যেন ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের প্রতিফলন হয়। দেশে গণতন্ত্র চর্চার পরিবেশ বজায় রাখার জন্যও সুষ্ঠুভাবে ডাকসু নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া দরকার। ডাকসুসহ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সামরিক শাসনামলেও ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়েছে। আইয়ুব, ইয়াহিয়া এবং স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমান, এরশাদের সামরিকতন্ত্রের আমলেও নির্বাচন বন্ধ হয়নি। নব্বইয়ের গণআন্দোলনের ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু তাজ্জব করা তথ্য হলোÑ গণতান্ত্রিক শাসনের আমলেই বন্ধ হয়ে যায় ডাকসুসহ দেশের সব ছাত্র সংসদের নির্বাচন। ছাত্র সংসদ নির্বাচন গঠনমূলক ছাত্ররাজনীতির বিকাশে যেমন অবদান রেখেছে তেমন জাতীয় রাজনীতিতে প্রশিক্ষিত নেতা সৃষ্টিতে রেখেছে ভূমিকা। ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ছাত্ররাজনীতি যেমন বিপথগামী হয়েছে তেমন তার অপপ্রভাব পড়েছে জাতীয় রাজনীতিতেও। রাজনীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধরা রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়ার বদলে কালো টাকার মালিক এবং পেশিশক্তির পূজারিরা জেঁকে বসার সুযোগ পেয়েছে। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা নষ্টের পেছনে অঙ্গীকারবদ্ধ নয় এমন বর্জ্য-জনদের রাজনীতিতে জেঁকে বসার ঘটনা অনেকাংশে দায়ী। আমরা আশা করব ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিকে সুস্থ ধারায় ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। ভয়ভীতিহীনভাবে শিক্ষার্থীরা ভোট দিয়ে ডাকসুতে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পাবে আমরা সে প্রত্যাশাই করতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর