মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন

মুফতি হেলাল উদ্দীন হাবিবী

জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন

মহান আল্লাহ তায়ালা যে সব দিনকে বিশেষভাবে বরকতময় ও মর্যাদাবান করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো জুমার দিন। এ দিনকে কেন্দ্র করে পৃথিবীতে সংগঠিত হয়েছে অসংখ্য অলৌকিক ও ঐতিহাসিক ঘটনা। মহামহিম স্র্রষ্টা পবিত্র কোরআনে ‘জুমা’ নামে একটি সূরা নাজিল করে দিবসটিকে করেছেন আরও মহিমান্বিত। পুণ্যময় এ দিনটি মুমিনের জন্য সওয়াব বৃদ্ধি, গুনাহ মোছন ও দয়াময় স্র্রষ্টার নৈকট্য লাভের বিশেষ মুহূর্ত। মহিমান্বিত এ দিবস প্রতি সপ্তাহে আমাদের মাঝে ফিরে আসে। হজরত আবু লুবাবা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, জুমার দিন সব দিনের সরদার। আল্লাহ তায়ালা এ দিনে আদম (আ.)কে সৃষ্টি করেছেন। এ দিনে তাঁকে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। এ দিনে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে মৃত্যুদান করেছেন এবং  কেয়ামত এ দিনেই সংগঠিত হবে। (ইবনে মাজাহ) জুমার দিন প্রসঙ্গে প্রিয়নবী (সা.) আরও ইরশাদ করেন, মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন। (ইবনে মাজাহ)। জুমার দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো জুমার নামাজ আদায় করা ও খুতবা শ্রবণ করা। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! যখন জুমার দিনে জুমার নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (মসজিদে) গমন কর এবং ক্রয়-বিক্রয় (দুনিয়াবি যাবতীয় কাজকর্ম) বন্ধ করে দাও। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর; যদি তোমরা জানতে। (সূরা জুমা, আয়াত -৯)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, জুমার দিন ফেরেশতাগণ মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে যান। প্রথম আগমনকারীর নাম প্রথমে; এভাবে মসজিদে আগমনকারীদের নাম লিপিবদ্ধ করেন। অতঃপর যে ব্যক্তি অতি প্রত্যুষে মসজিদে গমন করে, সে একটি উট সদকা করার সওয়াব লাভ করে। তারপর আগমনকারী গাভী, তারপর আগমনকারী দুম্বা, তারপর আগমনকারী মুরগি ও তারপর আগমনকারী ডিম সদকা করার সওয়াব লাভ করে। যখন ইমাম খুতবা প্রদানের জন্য আসেন অর্থাৎ খুতবা শুরু করেন, তখন ফেরেশতাগণ খাতা বন্ধ করেন এবং খুতবা শ্রবণে মশগুল হন। (বুখারি, মুসলিম)

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে, অতঃপর জুমার নামাজের জন্য মসজিদে আসে, খুব মনোযোগসহ খুতবা শ্রবণ করে এবং খুতবার সময় চুপ থাকে, তার এই জুমা থেকে বিগত জুমা পর্যন্ত এবং অতিরিক্ত আরও তিন দিনের গুনাহ্ সমূূহ মাফ করে দেওয়া হয়। (মুসলিম)।  হজরত আওস ইবনে আওস সাকাফী (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, আমি রসুলুল্লাহ (সা.) কে ইরশাদ করতে শুনেছি, যে ব্যক্তি জুমার দিন উত্তমরূপে গোসল করবে, প্রত্যুষে মসজিদে যাবে, পায়ে হেঁটে যাবে; কোনো বাহনে আরোহণ করবে না, ইমামের নিকটবর্তী হয়ে বসবে, মনোযোগসহ খুতবা শ্রবণ করবে এবং খুতবার সময় কোনো প্রকার কথা বা কাজকর্মে লিপ্ত হবে না, সে জুমার জন্য যত কদম হেঁটে আসবে, প্রত্যেক পদক্ষেপের বিনিময়ে এক বছরের রোজা ও তাহাজ্জুদ নামাজ পালনের সওয়াব লাভ করবে। (আবু দাউদ, তিরমিজি)।

লেখক : খতিব, মাসজিদুল কোরআন জামে মসজিদ, যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।

সর্বশেষ খবর