বুধবার, ৬ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই

কাউকে ছাড় দেওয়া যাবে না

মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের দ্ব্যর্থহীন রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সর্বাত্মক যুদ্ধ সত্ত্বেও বন্ধ হচ্ছে না এর আগ্রাসন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একের পর এক অভিযান, ক্রসফায়ার, গোয়েন্দা তৎপরতা সত্ত্বেও মাদক মাফিয়ারা সারা দেশে তাদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক টিকিয়ে রাখতে সমর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাদক নেটওয়ার্ক টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে দেশের বিভিন্ন স্থানের অন্তত ৫৬ জন জনপ্রতিনিধি, শতাধিক প্রভাবশালী নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নানা পর্যায়ের কয়েক শ লোভী সদস্যের ভূমিকা রয়েছে।

সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী মাদক ব্যবসার সঙ্গে রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা থেকে খোদ সংসদ সদস্য পর্যায়ের কোনো কোনো জনপ্রতিনিধিও সম্পৃক্ত। আছেন ‘সিআইপি’ মর্যাদা পাওয়া ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আর সরকারি কর্মকর্তারাও। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রতিবেদনেও এসব প্রভাবশালী ব্যক্তিকে মাদক মাফিয়ার নেপথ্য শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সে তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। জনপ্রতিনিধি, পরিচয়ধারী রাজনৈতিক নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো কোনো সদস্য শুধু নন, নানা পেশার লোক জড়িত মাদক ব্যবসার সঙ্গে। এমনকি আছেন মসজিদের ইমাম পরিচয়ধারীরাও। মাদক ব্যবসার সঙ্গে চলচ্চিত্রের বেশ কয়েকজন অভিনেত্রীসহ শোবিজের অন্তত একডজন গ্ল্যামার গার্লের সন্ধান পেয়েছেন গোয়েন্দারা। নাটক, সিনেমা ও মিউজিক ভিডিও তৈরির শুটিংয়ের নামে দলবেঁধে কক্সবাজার-টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন ঘুরে ইয়াবার বড় বড় চালান নিয়ে ঢাকায় ফেরার তথ্যও রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। এর আগে বেশ কয়েকটি অভিযানে শুটিং গ্রুপের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধারের নজির রয়েছে। মাদক আগ্রাসন বন্ধে একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ সত্ত্বেও এর আগ্রাসন পরিপূর্ণভাবে থামানো যাচ্ছে না এ ব্যবসায় মুনাফার হার কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ হওয়ার কারণে। কঠিন হলেও দেশের যুবসমাজকে রক্ষা এবং আইনশৃঙ্খলার জন্য সৃষ্ট হুমকি রোধে আরও সুসমন্বিতভাবে মাদকবিরোধী লড়াই চালাতে হবে। এর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে জরুরিভাবে। শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্টদের এ ক্ষেত্রে সম্পৃক্ত করার কথা ভাবতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর