শিরোনাম
শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফিরে আসুক পাটের সুদিন

সরকারি খাতের অবলুপ্তি কাম্য

বাংলাদেশকে একসময় বলা হতো সোনালি আঁশের দেশ। দেশের রপ্তানি আয়ের সিংহভাগ অর্জিত হতো পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে। পাটশিল্প ছিল দেশের প্রধান শিল্প এবং দেশের শিল্পশ্রমিকের সিংহভাগ জড়িত ছিল এ খাতের সঙ্গে। দেশের কৃষকের নগদ অর্থের অন্যতম উৎস বলে বিবেচিত হতো পাট। কালের বিবর্তনে কৃত্রিম তন্তুর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাট তার রমরমা অবস্থান হারালেও এখনো হারিয়ে যায়নি পাটজাত পণ্যের সম্ভাবনা। পাট উৎপাদনের সঙ্গে যেহেতু লাখ লাখ কৃষক জড়িত এবং এখনো যেহেতু পাটশিল্পের সঙ্গে হাজার হাজার শ্রমিকের জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল সেহেতু পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বুধবার জাতীয় পাট দিবসের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাট ও পাটপণ্য রপ্তানির জন্য প্রণোদনা সুবিধা দানের ঘোষণা দিয়েছেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন, পাট একসময় অর্থনীতির বুনিয়াদ ছিল। আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে ছিল পাটের সম্পৃক্ততা। ছয় দফা আন্দোলনের ঘোষণায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের অর্থনৈতিক বৈষম্যের কথা বলতে গিয়ে পাটের অবদানের বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। ’৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও পাট অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিল। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার প্রায় ৯০ ভাগ আসত পাট খাত থেকে। কিন্তু কিছুটা কৃত্রিম আঁশের আগ্রাসন আবার কিছুটা ’৭৫-পরবর্তী সরকারগুলোর অব্যবস্থাপনার কারণে দেশের পাট খাতে মন্দা নেমে এসেছিল। মাঝে কিছুটা সময় পাটের মন্দ সময় গেলেও এখন নতুন করে পাটশিল্পের সুদিন ফিরে আসছে। সারা বিশ্বের মানুষ ক্ষতির দিক বিবেচনায় নিয়ে কৃত্রিম আঁশের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে আবার পাটের মতো প্রাকৃতিক আঁশের দিকে ঝুঁকছে। পাশাপাশি পাটের বহুমুখী ব্যবহার বাড়ছে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাট উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনায় যে অঙ্গীকারবদ্ধ বক্তব্য দিয়েছেন তা প্রশংসার দাবিদার। পাটের সুদিন ফিরিয়ে আনতে সরকারি খাতের অবলুপ্তি ঘটিয়ে পুরোপুরিভাবে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবতে হবে।

পাটের গবেষণায় আরও বেশি মনোযোগ দেওয়াও জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর