শনিবার, ৯ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

উচ্চশিক্ষিতদের বেকারত্ব

সামাজিক অস্থিরতার হুমকি সৃষ্টি করছে

বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে আশঙ্কাজনকভাবে। বেকারত্বের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় ডিঙানো চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে দিনমজুরদের সমান আয়ের চাকরি পাওয়াও দুরূহ হয়ে উঠছে। নিয়োগদাতারা উচ্চ বেকারত্বকে যথেচ্ছতা প্রদর্শনের সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করছেন। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গড়ে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে নামমাত্র বেতন দিয়ে। ব্রিটিশ সাময়িকী ইকোনমিস্টের ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শিক্ষিত বেকারের হার সবচেয়ে বেশি। প্রতি ১০০ জন স্নাতক ডিগ্রিধারী তরুণ-তরুণীর মধ্যে ৪৭ জন বেকার। আর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, বেকারের মধ্যে চিকিৎসক-প্রকৌশলীদের হার ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। নারী চিকিৎসক-প্রকৌশলীর মধ্যে বেকারত্বের হার প্রায় ৩১ শতাংশ। এর পরই আছেন উচ্চমাধ্যমিক ডিগ্রিধারীরা। তাদের ক্ষেত্রে বেকারত্বের হার ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ২০টি সর্বাধিক বেকারত্বের দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির তথ্যমতে, বাংলাদেশে বেকার যুবকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯০ থেকে ’৯৫ সাল পর্যন্ত ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী বেকার যুবকের সংখ্যা ছিল ২৯ লাখ। কিন্তু ২০০৫ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে তা প্রায় ৫ গুণ বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ৩২ লাখে। বিবিএসের সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, ২০১৭ সালে সারা দেশে ৬ কোটি ৩৫ লাখ কর্মক্ষম মানুষ ছিল। ২০১৭ সালে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর ৬ কোটি ৮ লাখ নারী-পুরুষের কাজ ছিল। বাকি ২৭ লাখ ছিল বেকার। দেশে উচ্চশিক্ষিত বেকারত্বের হার মাত্রাতিরিক্তভাবে বৃদ্ধি পাওয়া সামাজিক অস্থিরতার আশঙ্কা সৃষ্টি করছে। পরিস্থিতির অবনতি না চাইলে বেকার সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে উৎকোচ ও অস্বচ্ছতার যে মচ্ছব চলে তার অবসানে চাকরিতে নিয়োগের একটি স্বতন্ত্র কমিশন গঠনের কথা ভাবতে হবে। রসাতলে যাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ফেরাতে উচ্চশিক্ষিতদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখা উচিত।

সর্বশেষ খবর