আমাদের এক দার্শনিক বন্ধু জ্ঞান ও মেধার পার্থক্য নির্ণয় করেছেন। তার মতে, জ্ঞান ও মেধার পার্থক্য আকাশ-পাতাল। মেধাবীরা একান্তভাবেই স্মৃতিনির্ভর। সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে। পক্ষান্তরে জ্ঞানীদের রয়েছে সঠিকভাবে বিদ্যমান বাস্তবতা উপলব্ধির অন্তর্দৃষ্টি। যে কারণে মেধাবীদের পক্ষে ভালো সংগঠক, প্রশাসক, আবিষ্কারক অথবা দেশ ও জাতিকে উপহার দেওয়ার মতো মহৎ গুণের অধিকারী হওয়া আদতেই কঠিন। বন্ধু দার্শনিকের মতে, জ্ঞান ও মেধার পার্থক্যের কারণেই বাংলাদেশের প্রশাসনে মেধাবীদের জয়জয়কার হলেও তারা জাতিকে দুর্নীতি ছাড়া আর কিছু উপহার দিতে পারেনি। বেনজীর ও মতিউরের মতো দুর্নীতির মহারাজরাও মেধাবী হিসেবেই চাকরি পেয়েছিলেন। প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনও পরিচালিত হয়েছে মেধাবীদের দ্বারা। জ্ঞান ও মেধার মধ্যে পার্থক্য স্বীকার করেও বলা যায়, এ দুটির সমন্বয় ঘটলে তা হয় সোনায় সোহাগা। আজ যাদের নিয়ে লিখব তাদের স্মৃতিশক্তি ছিল ঈর্ষণীয়। সে অর্থে তারা মেধাবী। তবে তারা যে একই সঙ্গে ছিলেন জ্ঞানী। দেশ জাতি ও মানব সমাজের জন্য তাদের মহৎ অবদান থেকেই তা উপলব্ধি করা যায়।
বিশ্বের বৃহত্তম দেশ রাশিয়া এক সময় ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। দুনিয়া কাঁপানো বিপ্লবের মাধ্যমে রাশিয়ায় সমাজতন্ত্র কায়েম হয়। এ বিপ্লবের নায়ক ছিলেন মহামতি লেনিন। ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিনকে বলা হয় সর্বকালের অন্যতম সেরা মেধাবী ও জ্ঞানী নেতা। লেখালেখির জগতে তার অবস্থানও অতি শীর্ষে। ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন যেসব রাজনৈতিক প্রবন্ধ লিখেছেন তা পড়তে গেলে যে কারোর বছর কেটে যাবে। লেনিনের লেখার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য কী? বিদগ্ধ পাঠক ও গবেষকদের মতে, তিনি তার কোনো লেখায় আগের কোনো লেখার পুনরাবৃত্তি এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। একজন রাজনৈতিক নেতা ও দার্শনিকের স্মৃতিশক্তি কতটা তীক্ষè হলে এটা সম্ভব তা আজও একটি গবেষণার বিষয়। কর্মিসভা ও সমাবেশে বক্তব্য রাখার সময়ও লেনিন একই কথার পুনরাবৃত্তি করতেন না। লেনিন পশ্চাৎপদ রাশিয়াকে দুনিয়ার শীর্ষ ক্ষমতার অধিকারী দেশে পরিণত করেছিলেন। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের ভাগ্য নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে লেনিনের দেশ সোভিয়েত ইউনিয়ন। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন হলেও তিনি আজও দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষের শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি।
আমাদের জাতীয় ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বলা যায়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-উত্তর রাজনীতি আবর্তিত হয়েছে এ রাজনীতিককে কেন্দ্র করে। তার পক্ষে কিংবা বিপক্ষেই প্রবাহিত হয়েছে রাজনীতির মূল স্রোত। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পরও রাজনীতিতে তার সরব উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ তার শাহাদাতবরণের দীর্ঘকাল পরও বঙ্গবন্ধুকেন্দ্রিক রাজনীতি থেকে সরে আসতে পারেনি। মনে হয়, এখনো তিনি আগলে আছেন পুরো দলের নেতৃত্ব।
বঙ্গবন্ধু তাঁর স্মরণশক্তির জন্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নন্দিত ছিলেন। এক-দেড় দশক আগে যাদের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন তাদের নামও তিনি ঠিক ঠিক মনে রাখতে পারতেন। এ গুণের জন্য তিনি পক্ষ-বিপক্ষের লোকদের মোহাবিষ্ট করতেও সক্ষম হতেন। মুসলিম লীগ নেতা মরহুম অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আইনুদ্দীন তার এক লেখায় বঙ্গবন্ধুর এ অনন্য গুণের কথা স্মরণ করেছেন। আইনুদ্দীন ছাত্রজীবনে পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনকামী একটি ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সে সময় দেখা হয় তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সঙ্গে। দীর্ঘকাল পর এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু আইনুদ্দীনকে দেখে নাম ধরেই ডাক দেন। জিজ্ঞেস করেন, কেমন চলছে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড? শেখ মুজিব তাঁর দলের হাজার হাজার কর্মীর নাম মনে রেখেছেন অনন্য স্মরণশক্তির গুণে। এমনকি সাধারণ কারোর সঙ্গে বহু বছর পর দেখা হলেও তিনি স্মৃতি মন্থন করতে পারতেন। তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে মরহুম তাজউদ্দীন আহমদের স্মরণশক্তিও ছিল প্রশংসা করার মতো। ঘনিষ্ঠজনরা তাঁকে জীবন্ত ডিকশনারি বলে অভিহিত করতেন।
বাংলাদেশের রাজনীতির আরেক দিকপাল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানী। দেওবন্দ মাদরাসায় কিছুদিন পড়লেও কোনো সনদ অর্জন করেননি। বলা হয় মওলানা উপাধিটিও আরোপিত। পরবর্তীতে মওলানা ভাসানী আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে থাকতেই দল ছেড়ে গঠন করেন বাম ঘরানার দল ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি তাঁর ন্যাপ। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় ঘাটতি থাকায় অনেকের বিবেচনায় তিনি মেধাবী নন। তবে এ প্রজ্ঞাবান রাজনীতিকের তুলনা একমাত্র তিনিই। যার রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে পিএইচডি করা হয়েছে পশ্চিমা দুনিয়ার একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। সর্বকালের সেরা মহিলা রাজনীতিবিদ ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। ইংল্যান্ডের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া জানা প্রধানমন্ত্রী জন মেজর এবং ব্রাজিলের ক্লাস থ্রি পাস প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা নিজেদের কখনো মেধাবী বলে দাবিও করেননি। তবে তারা নিজেদের রাজনীতির জ্ঞানালোকে সারা বিশ্বকে আলোকিত করেছেন। বিশ্বনেতা হিসেবে আবির্র্ভূত হয়েছেন।
মেধা নিয়ে লিখতে গিয়ে মনে পড়ছে খ্যাতনামা মুসলিম মনীষী ইমাম গাজ্জালীর কথা। এ জ্ঞানসাধক ছোটবেলায় কোনো কিছুই ঠিকমতো মনে রাখতে পারতেন না। স্মরণশক্তির ঘাটতির কারণে ইমাম গাজ্জালী যা কিছু পড়তেন বা নতুন যা কিছু জানতেন তা খাতায় টুকে রাখতেন। একবার মরু পথে কোনো স্থানে যাচ্ছিলেন। একদল ডাকাত ওই জ্ঞানতাপসের পথ রোধ করে। সবকিছু ছিনিয়ে নেয় তারা। ইমাম গাজ্জালী টাকা-পয়সা, জিনিসপত্র সবকিছু দিতে রাজি হলেও তার খাতাপত্রগুলো ডাকাতরা যাতে না নিয়ে যায় সে বিষয়ে অনুরোধ করতে থাকেন। সর্দার ইমাম গাজ্জালীর অনুরোধ পাত্তা দেননি। নাছোড় গাজ্জালী ডাকাত দলের পেছনে ছুটতে ছুটতে চিৎকার করে বলেন, তোমরা আমার সব জ্ঞান এভাবে কেড়ে নিও না। ডাকাত দলের সর্দার জানত খাতাগুলো তাদের কোনো কাজেই লাগবে না। ইমাম গাজ্জালীর আহাজারিতে ডাকাত সর্দার একপর্যায়ে ধমক দিয়ে বলে- ‘যে জ্ঞান ডাকাত নিয়ে যেতে পারে তার কোনো মূল্য নেই, সেই জ্ঞান দিয়ে তুমি কী করবে?’
এই একটি কথা ইমাম গাজ্জালীর দিব্যদৃষ্টি খুলে দেয়। এরপর থেকে তিনি কখনো খাতায় কোনো কিছু লিখে রাখতেন না। একনিষ্ঠতার গুণে পরবর্তীতে অসামান্য স্মৃতিশক্তির অধিকারী হন এ মনীষী। ইসলামী জ্ঞান ভান্ডারে ইমাম গাজ্জালীকে একজন দিকপাল হিসেবেই ভাবা হয়।
চেষ্টা করলে স্মরণশক্তি যে বাড়ানো সম্ভব তার আরেক প্রমাণ জগদ্বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন। এ মহান পদার্থ বিজ্ঞানী আপেক্ষিকতাবাদ ও মধ্যাকর্ষণ সূত্র আবিষ্কার করে বিজ্ঞান সাধনার সোনালি দ্বার উন্মোচন করেন। অথচ ছোটবেলায় পড়াশোনায় তার মন ছিল না। বই নয় তার ঝোঁক ছিল চারদিকের সবকিছুতেই। স্মরণশক্তি ছিল সাধারণ মাপের চেয়েও কম।
বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের বাবা ছিলেন তার সময়ের নামজাদা ইঞ্জিনিয়ার। পুত্রের স্মরণশক্তির ঘাটতি দেখে ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিলেন আতঙ্কিত। ৯ বছর বয়সে স্কুলে পাঠানো হয় আইনস্টাইনকে। পড়াশোনায় তিনি ছিলেন বেজায় খারাপ। মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রথমবার ফেল করেন। দ্বিতীয়বার উত্তীর্ণ হন কোনোক্রমে। স্মরণশক্তিতে ঘাটতি থাকায় বাবার ইচ্ছানুযায়ী ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে সাহস পাননি আইনস্টাইন। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি নিজের এ ঘাটতি সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠেন। ভুলো মন হওয়ার বদনাম ঘোচাতে উঠেপড়ে লাগেন এ বিজ্ঞানী। শেষ পর্যন্ত একাগ্রতার জয় হয়। বলা হয়, আইনস্টাইন তার স্মৃতিশক্তিকে যতটা ব্যবহার করতে পেরেছেন সে সাধ্য আর কারোর হয়নি। অবাক হলেও সত্যি, মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি নোবেল পুরস্কার পান। আইনস্টাইনকে একবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- চেষ্টা করে স্মরণশক্তি কি বাড়ানো যায়? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার ছেলেবেলা এবং এখনকার অবস্থার সঙ্গে তুলনা করলেই এ প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে।’
বিশ্ব সাহিত্যে গ্রিক কবি হোমার এক অমর নাম। ছোটবেলায় তিনিও ছিলেন ক্ষীণ স্মরণশক্তির অধিকারী। অল্প বয়সেই দুর্ভাগ্যের শিকার হন এ মহান কবি। ভাগ্য বিপর্যয়ের কারণে তাঁকে সর্বহারা হতে হয়। ভবঘুরে জীবনের একপর্যায়ে তিনি অন্ধ হয়ে যান। অন্ধ অবস্থায় তিনি এক দোকানে বসে নিজের রচিত ট্রয় যুদ্ধের গীতি কবিতা আবৃত্তি করে শোনাতেন লোকজনকে। অন্ধ হওয়ার আগে যে কবি কিছুই মনে রাখতে পারতেন না, পরবর্তীতে তিনি শুধু কবিতা রচনাই নয়, তা পুরোপুরি মুখস্থ রাখার কৌশলও রপ্ত করেন। মহাকবি হোমারের এ অনন্য স্মরণশক্তির কারণেই তার রচিত ‘ইলিয়ড’ ও ‘অডিসি’ দুটি মহাকাব্য দুটি শেষ পর্যন্ত হারিয়ে যায়নি।
স্মরণশক্তির দিক থেকে খ্যাতনামা বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনও ছিলেন এক সময় খুব দুর্বল। পরবর্তী জীবনে নিজের স্মৃতিশক্তির কথা বলতে গিয়ে এডিসন বলেছেন, ছোটবেলায় স্মরণশক্তি এতই কম ছিল যে, পাঠ্যবইয়ের পড়া তিনি কিছুতেই মনে রাখতে পারতেন না। ফলে স্কুল থেকে তাঁর নামে প্রায়ই অভিযোগ আসত। অথচ তাঁর মা চাইতেন ছেলে পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ হবে। মায়ের এ স্বপ্ন পূরণে এডিসনের আগ্রহের ঘাটতি ছিল না। কিন্তু তারপরও কোনো কিছুই মুখস্থ রাখতে পারতেন না তিনি। ফলে তাঁকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়। এডিসন যেদিন স্কুল ছাড়েন সেদিন তাঁর মায়ের চোখে অঝোরে অশ্রু ঝরে। যা এ বিজ্ঞানীর মনে রেখাপাত করে। পরবর্তী জীবনে এডিসন সেদিনের স্মৃতি মন্থন করে বলেছেন, ‘ছোটবেলার সে দৃশ্য মনে পড়লে আজও তার কান্না পায়।’ বলেছেন, ‘আজ আমি পাতার পর পাতা মুখস্থ রাখতে পারি। আর ভাবী আহা আমার মনে রাখার এ ক্ষমতা যদি ছোটবেলায় থাকত।’
স্মরণশক্তির দিক থেকে জাতিগতভাবে প্রাচীন আরবদের কৃতিত্ব সম্ভবত সবচেয়ে বেশি। আরবরা মুখস্থ বিদ্যায় ছিল ভীষণ পটু, আরব সমাজে স্মৃতিশক্তির অধিকারীরা বিশেষ মর্যাদা পেতেন। ইসলামপূর্ব যুগে মক্কার ওকাজের মেলা ছিল আরব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ মেলায় যারা কবিতা মুখস্থ বলতে পারতেন তারা বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হতেন।
স্মৃতিশক্তি চর্চায় ইসলাম ধর্মের অবদানও অনস্বীকার্য। মুসলমানরা পবিত্র কোরআনকে ঐশী গ্রন্থ বলে বিশ্বাস করে। বিশাল আকারের এ ধর্মীয় গ্রন্থ অবিকৃতভাবে মুখস্থ করাকে ভাবা হয় পুণ্যের কাজ। যারা পবিত্র কোরআন মুখস্থ পড়তে পারেন তাদের কোরআনে হাফেজ বলা হয়। সারা দুনিয়ায় এমন হাফেজ কয়েক লাখ। কোরআন মুখস্থের সময় উচ্চারণ যাতে অবিকৃত থাকে সে বিষয়ে সবিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। গত ১৪ শ বছরে আরবি ভাষার অনেক বিবর্তন ঘটলেও কোরআনের একটি অক্ষরও পরিবর্তন হয়নি। কোরআন পাঠ ও কণ্ঠস্থ করার চর্চা মধ্যযুগের মুসলমানদের মধ্যে জ্ঞান স্পৃহার জন্ম দেয়। জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির ক্ষেত্রে এ অভ্যাস যে তাৎপর্য ভূমিকা রাখে তার প্রমাণ মধ্যযুগের জ্ঞানচর্চার ইতিহাসে মুসলমানরাই এগিয়ে।
স্মৃতিশক্তির বিকাশে আরবদের কৃতিত্বের আরেকটি পরিচয় হলো হাদিস সংকলন। মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর বাণীকে হাদিস বলা হয়। মহানবীর জীবনাবসানের প্রায় ২০০ বছর পর হাদিস সংকলন সম্পন্ন হয়। মহানবীর বাণী সংকলন সম্ভব হয়েছিল আরবদের স্মরণশক্তি চর্চার অসামান্য গুণের ফলেই। মহানবীর জীবিত অবস্থায় সঙ্গী বা সাহাবাদের যে উপদেশ দিতেন তা পুরুষানুক্রমে চর্চা হয়। ফলে ২০০ বছর পর তা সংকলন করা হলেও হাদিসের বাণীগুলো যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অবিকৃত থেকেছে সে বিষয়ে সন্দেহের অবকাশ কম।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক