ছাত্র সমাজের কোটা সংস্কারের আন্দোলনে এক মাস ধরে স্থবিরতা বিরাজ করছে দেশের ব্যবসাবাণিজ্যে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশবাসীর জীবন-জীবিকায় ভয়ংকর সংকট দেখা দিতে পারে। ছাত্র আন্দোলন এবং সহিংস পরিস্থিতি দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের মধ্যে আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। দেশের যেসব শিল্প বিদেশ থেকে কাঁচামাল আমদানির ওপর নির্ভরশীল, সেখানেও বিরাজ করছে অনিশ্চয়তা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সর্বগ্রাসী জাতীয় সংকটে। এ অবস্থায় কীভাবে দেশের ব্যবসাবাণিজ্য ঘুরে দাঁড়াবে তা প্রধান আলোচ্য বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বলা হয়ে থাকে অর্থনীতি রাজনীতির প্রাণ। রাজনীতি ইতিবাচক না নেতিবাচক অবস্থায় চলবে তা অনেকাংশে অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর নির্ভরশীল। দেশের অর্থনীতি সুস্থ ধারায় ফিরে না এলে তা রাজনীতিকে আরও অসহিষ্ণু করে তুলবে ও স্থিতিশীলতার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। অর্থনীতিতে ইতিবাচক গতি সৃষ্টিতে ব্যবসায়ীদের পাশে ঋণ সহায়তা নিয়ে ব্যাংকিং খাত দাঁড়াবে এমনটিই মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। স্বস্তির খবর হলো, ব্যাংক খাতের উদ্যোক্তারা ব্যবসায়ীদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিদ্যমান অসহিষ্ণু পরিস্থিতিতে দেশের পোশাকশিল্প ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হলেও এ খাতের উদ্যোক্তারা মনে করেন সার্বিক সহযোগিতা পেলে তাদের পক্ষে দ্রুতই ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে। ব্যবসায়ীদের পরামর্শ প্রতিটি ক্ষেত্রেই সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সব মহলকে বাণিজ্যবান্ধব ভূমিকা রাখতে হবে। ব্যবসাবাণিজ্যের সুযোগ বাড়াতে রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়টিও অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন প্রাসঙ্গিক। ন্যায্য দাবি আদায়ে ছাত্র শুধু নয়, নাগরিকদের রাজপথে নামতে হবে এমন সংস্কৃতির অবসানে জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায়ও যত্নবান হতে হবে। সংবিধানে উল্লিখিত গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নিশ্চিত হলে জনক্ষোভ ও অসহিষ্ণুতার প্রবণতা অনেকাংশে রোধ করা যাবে। দেশ ও জাতির স্বার্থে সব মহলের সুমতিও প্রত্যাশিত।