যাদের ধানের খেতে একটানা ২ মাস পর্যন্ত ৮-১০ ইঞ্চি পানি জমে থাকে, তারা তাদের জমিতে অপেক্ষাকৃত বড় মাপের গলদা চিংড়ির পোনা চাষ করতে পারেন। ধানের খেতে প্রাকৃতিক খাদ্যের অভাব হয় না। এ ছাড়া দ্রবীভূত অক্সিজেনও থাকে। সুতরাং খুব সামান্য পরিচর্যা করলেই গলদা চিংড়ির ভালো ফলন পাওয়া যায়। ধানের খেতে ২-৩ ইঞ্চি মাপের চিংড়ির দ্বারা বিঘাপ্রতি ২,০০০টি পোনা জোগাড় করতে হবে। ধানের খেতে চারদিকে এমনভাবে বেড়া দিতে হবে যাতে পোনা বাহিরে যেতে না পারে। এভাবে মাস দুয়েক পর পোনা বড় হয়ে গেলে ধানের খেত থেকে তুলে বাজারে বিক্রি করা যাবে। যেসব চাষির ধানের খেতে ধান কাটার পরও পানি জমা থাকে তারা আরও কিছুদিন গলদা চিংড়ির প্রতিপালন করে নিতে পারেন অথবা ধানখেত থেকে চিংড়ি পোনা তুলে নিয়ে অন্য ডোবায় আরও মাস দুয়েক রেখে দিলে তারা আকারে বেশ বড় হবে। পুকুরের মিঠা পানিতে গলদা চিংড়ির চাষ করে ভালো ফলন পেতে হলে কতকগুলো পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে। যেমন - ১. পুকুরে নিয়মিত পানির স্রোতের ব্যবস্থা করতে হবে। ২. পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের মাত্রা পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখতে হবে। ৩. নিয়মিত প্রাকৃতিক ও পরিপূরক খাদ্যের জোগান দিতে হবে। ৪. গলদা চিংড়ির মজুতের হারের প্রতি সজাগ থাকাও সময়মতো রোগ দমন করতে হবে। ৫. সময় সময় পুকুরের পানি কিছুটা বাইরে বের করে নতুন পানি পুকুরে প্রবেশের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। এভাবে পুকুরের পানি পরিবর্তন করলে পানির মধ্যে নাইট্রোজেন ঘটিত যে সমস্ত বিষাক্ত পদার্থ ও অন্যান্য গ্যাস জমা থাকে সেগুলো কমে যায় ফলে পুকুরের পানি চিংড়ি চাষের অনুকূল হয়। এসব বিষাক্ত পদার্থ চিংড়ির শরীরে প্রতিক্রিয়া করে ফলে চিংড়ির ভালো ফলন হয় না। পুকুরে সব সময় পচনক্রিয়া বন্ধ করে দিলে পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের অপচয় হয় না। এর ফলে সব সময় পুকুরে দ্রবীভূত অক্সিজেন মজুত থাকে।