দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তাদের নামে আজগুবি হত্যা মামলায় হতবিহ্বল সুশীলসমাজসহ সচেতন মহল। একে শিল্প খাত ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন অংশীজনরা। তৈরি পোশাক শিল্পে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে পরিকল্পিতভাবে। ছাত্র-জনতার গণ অভ্যুত্থানে অর্জিত বিজয়ে দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকার এখন রাষ্ট্র সংস্কারের মহা-কর্মযজ্ঞে নিয়োজিত। এ সময় সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলতে বিশেষ মহল নানা চক্রান্ত ষড়যন্ত্রের প্যাঁচ-পয়জার কষে চলেছে বলেই মনে হচ্ছে। শিল্প সুরক্ষায় সরকার ও সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রয়োজন। আইনজ্ঞদের ভাষ্য- শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীদের নামে গায়েবি হত্যা মামলা শুধু আইনের খেলাপই নয়, ব্যবসাবান্ধব পরিবেশেরও পরিপন্থি। অধিকাংশ মামলার বাদী চেনেন না আসামিকে। আসামিও বাদীর নাম শোনেননি। অথচ হত্যা মামলা হয়ে গেছে এমন অনেক বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর নামে, যাদের কোনো রাজনীতি-সংশ্লিষ্টতা নেই। কী বিচিত্র! ব্যবসায়িক কারণেই সরকারের সঙ্গে সৌজন্যতামূলক সদ্ভাব রাখতে হয় ব্যবসায়ীদের। কিন্তু তারা অধিকাংশই কোনো দলের সঙ্গে জড়িত নন। কিন্তু এমনও দেখা গেছে- যেখানে যে ঘটনায় জড়িয়ে এমন একজন ব্যবসায়ীকে আসামি করা হয়েছে; যেখানে তিনি জীবনেও কখনো যাননি। যারা এহেন হীন কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সমাজ ও অর্থনীতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির যে কোনো অপচেষ্টা পূর্ণশক্তি দিয়ে প্রতিহত করা সরকারের জরুরি কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি ব্যবসায়ী সমাজ পূর্ণ আস্থা জ্ঞাপন করেছেন। তারা রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্ট ব্যবসা-সংস্কৃতির বিলোপ ঘটিয়ে নতুন অধ্যায় সূচনা করতে চান। ব্যবসায়ী সমাজের এ সদিচ্ছা সাধুবাদ দাবি করে। ব্যবসা-বাণিজ্য-শিল্প জাতীয় অর্থনীতির প্রাণশক্তি। ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা সমাজের হাতে এর স্টিয়ারিং। সেই ব্যবসায়ীদের যদি হাত-পা বেঁধে স্থবির করে দেওয়া হয়- সে স্থবিরতা কার্যত আঘাত করবে জাতীয় অর্থনীতিকে। যা জাতিকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এটা কিছুতেই হতে দেওয়া যায় না।