সোমবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা
পরামর্শ

অতি সিরিয়াসনেস পরীক্ষাভীতি তৈরি করে

অতি সিরিয়াসনেস পরীক্ষাভীতি তৈরি করে

প্রাথমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা বা জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার স্তর বিন্যাসের পাশাপাশি সনদ ও স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় আরও আগ্রহী করে গড়ে তোলা। কিন্তু অভিভাবকদের বাড়াবাড়ির কারণে ফল হচ্ছে উল্টো। মনে হয় তারাই এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার্থী। ঠিক সেভাবেই সন্তানদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রেসার দেওয়া হয় যাতে তারা ভালো বা সর্বোচ্চ জিপিএ অর্জন করতে পারে। তাদের পড়ার টেবিলে গভীর রাত পর্যন্ত থাকতে বাধ্য করা হয়। এত ছোট বয়সে এই চাপ ভয়ানক। তাই অভিভাবকদের উচিত পরীক্ষার ব্যাপারটি ওদের বয়স অনুযায়ী যতটা সম্ভব স্বাভাবিকভাবে একটি আনন্দঘন চমৎকার আয়োজন তথা আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে উপস্থাপন করা। যেমন তোমরা বেশ কটা দিন এক সঙ্গে নতুন একটা ভেন্যুতে পরীক্ষা দেবে, ইস কি মজা... যা আমাদের সময় ছিল না এবং পরীক্ষা শেষে তোমরা সবাই পাবে কালারফুল একটি সার্টিফিকেট, ওয়াও... কি মজার, কি আনন্দের। অনেকটা এভাবে। আর পরীক্ষার আগে নিয়মিত স্কুল, লেখাপড়া বিশেষ করে সময় ধরে বেশি বেশি লেখা, বানান রীতি চর্চা ও সময়ানুবর্তিতার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

বিশেষ করে যেসব শিক্ষার্থী অনেকটা নার্ভাস প্রকৃতির, তাদের ব্যাপারে শিক্ষক কিংবা অভিভাবকদের উচিত ছাত্রের ধরন অনুযায়ী কাউন্সিলিং প্রদান করা। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীই আছে, যারা প্রশ্ন হাতে নিয়ে যদি দেখে যে; প্রথম প্রশ্নটিই আনকমন, তখন ঘটতে পারে অনেক অঘটনই! তাই সেসব মুহূর্ত যাতে তারা সুন্দরভাবে মোকাবিলা করতে পারে, সে জন্য তাদের এই মর্মে বুঝাতে হবে যে, প্রথমটি কমন পড়েনি বা

ভালো উত্তর দিতে পারনি বিধায় হতাশ না হয়ে বরং অন্যগুলো এমনভাবে উত্তর কর; যাতে ভালো লিখতে না পারাটি পুষিয়ে যায়। বিশেষ করে এক অনিষ্টের জন্য যাতে দশ অনিষ্ট না হয় সেদিকে তোমার সতর্ক থাকতে হবে। আর মনে রাখবে, একটা কমন না পড়লে অন্যগুলো ভালোভাবে লিখে, সেটা পুষিয়ে নেওয়ার, যে কৌশল এর নামই পরীক্ষা। ঠিক এভাবে বুঝাতে হবে। কারণ প্রস্তুতি যত ভালোই হোক না কেন, প্রশ্ন কমন নাই পড়তে পারে বা কোনো একটির উত্তর লেখা ভালো নাও হতে পারে।

ফলে বিষয়টিকে মেনে নিয়ে পরীক্ষার হলে নিজেকে স্বাভাবিক রেখে আগে ভালো জানা প্রশ্নোত্তরগুলো যাতে শেষ করতে পারে, সেই পরামর্শ দিতে হবে। অন্তত পরীক্ষার আগে এসব বিষয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করার মাধ্যমে পরীক্ষার্থী যে কোনো পরিস্থিতিতে যাতে স্বাভাবিক থাকে, সেই চেষ্টা করতে হবে।

অন্যদিকে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাজেশন বা নোটনির্ভর পড়াশোনার মতো সর্বনাশা চিন্তাভাবনা ভুলেও না করে তাদের মূল পাঠ্যবই আগা-গোড়া পড়তে অভ্যস্ত করতে হবে। আর বেশি নম্বর পেতে সঠিক বানানের যথাযথ ব্যবহার এবং প্রশ্নানুযায়ী সময় বণ্টন করে উত্তর লেখার অভ্যাস করতে হবে, বিশেষ করে বাংলা ও ইংরেজিতে। তোমরা সুস্থ দেহমনে সুন্দরভাবে পরীক্ষা দাও এ দোয়াই করি।

সর্বশেষ খবর