মঙ্গলবার, ১৪ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা
বাংলা প্রথমপত্র

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা

ফারুক আহম্মদ, সহকারী শিক্ষক, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা

তৈলচিত্রের ভূত : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

  সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

১।   সাতক্ষীরার ভোমরা এলাকা থেকে গুজব ওঠে যে, একটি ১০-১২ বছরের মেয়ে স্বপ্নে ওষুধ পেয়েছে। যা খেলে সব রোগ ভালো হয়ে যায়। এই সংবাদ চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে দলে দলে লোক ছুটে আসে মেয়েটির কাছে। এক সময় তাকে পুঁজি করে আরও অনেকে এই ব্যবসা শুরু করে। ফলে প্রতারণার শিকার হয় গ্রামের সাধারণ মানুষ।

     ক.  নগেনদের লাইব্রেরিতে কয়টি ছবি টাঙানো ছিল?

     খ.  মামার প্রতি শ্রদ্ধাভক্তিতে নগেনের মন ভরে উঠল কেন?

     গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।

     ঘ. প্রকৃত শিক্ষার অভাবে এখনো গ্রামের সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রতারণার শিকার হচ্ছে- উদ্দীপক এবং ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

     ক. উত্তর : নগেনদের লাইব্রেরিতে তিনটি ছবি টাঙানো ছিল।

     খ. উত্তর : মামা নগেনকে নিজের ছেলেদের মতোই ভালোবাসতেন জেনে পরলোকগত মামার প্রতি শ্রদ্ধাভক্তিতে নগেনের মন ভরে উঠল।

     নগেন মামা বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করত। তাই মারা যাওয়ার আগে নগেনের মামা নগেনকেও নিজের ছেলেদের সমান টাকাকড়ি দিয়ে গেছেন। মামার এরকম উদারতা সে কোনোদিন কল্পনাও করতে পারেনি। তাই নগেন মনে মনে মামাকে ঘৃণা করত। কিন্তু যখন জানতে পারল যে, মামা তাকে নিজের ছেলেদের মতোই ভালোবাসতেন তখন পরলোকগত মামার প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধাভক্তিতে নগেনের মন ভরে উঠল।

     গ. উত্তর : উদ্দীপকের সঙ্গে ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে মানুষের অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

     প্রত্যেক ঘটনার পেছনে কোনো না কোনো কারণ থাকে। আর মানুষ যখন এই কারণ খুঁজে বের করতে পারে না, তখনই মানুষের মনের মধ্যে কুসংস্কার দানা বেঁধে ওঠে। অপর ব্যক্তি যা বলে তাই অন্ধভাবে বিশ্বাস করে। ফলে ফল হয় খারাপ।

     উদ্দীপকে সাতক্ষীরার ভোমরা এলাকার একটি মেয়ে স্বপ্নে ওষুধ পেয়েছে। যা খেলে সব রোগ ভালো হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে সারা এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। দলে দলে লোক ছুটে আসে তার কাছে। কিন্তু কিছুদিন পরে তাকে পুঁজি করে একদল লোক গ্রামের সাধারণ মানুষকে ঠকাতে শুরু করে। এভাবেই মানুষ প্রতিনিয়ত কুসংস্কারের পেছনে ছুটছে। অন্যদিকে ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে মামা নগেনকে নিজের ছেলেদের মতোই ভালোবাসতেন জেনে পরলোকগত মামার প্রতি শ্রদ্ধাভক্তিতে নগেনের মন ভরে উঠল। তাই মামাকে প্রণাম করার জন্য এক রাতে নগেন মামার ফটো স্পর্শ করে।  কিন্তু ফটোটি স্পর্শ করা মাত্রই নগেনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। নগেন ভাবে মামার ছবিতে প্রেতাত্মা ভর করেছে। তাই মামা আমাকে ঘৃণা করে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে। সঠিক কারণ বের করতে না পেরে নগেন এরকম আবোল-তাবোল বকতে থাকে। কিন্তু আসল ঘটনা ছিল বিদ্যুতের শকট। এই ধরনের কুসংস্কার ও মানুষের অন্ধবিশ্বাসের মিল খুঁজে পাওয়া যায় উদ্দীপক ও ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে।   

     ঘ. উত্তর : প্রকৃত শিক্ষার অভাবে এখনো গ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রতারণার শিকার হচ্ছে— মন্তব্যটি যথার্থ।

     গ্রামের অধিকাংশ মানুষ এখনো অশিক্ষিত। ফলে কোনো ঘটনার কারণ তারা বুঝতে পারে না। তাই একদল লোক তাদের ঠকানোর জন্য প্রস্তুত থাকে। তারা অপব্যাখ্যা দিয়ে মনগড়া নিয়ম তৈরি করে। আর নিয়মে পড়ে গ্রামের সাধারণ মানুষ প্রতারণার শিকার হন।

     উদ্দীপকে দেখা যায় যে, সাতক্ষীরার ভোমরা এলাকার একটি মেয়ের স্বপ্নে পাওয়া ওষুধ খেলে সব রোগ ভালো হয়ে যায়। এই খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে দলে দলে লোক আসতে থাকে তার কাছে। আর যারা আসে তারা অধিকাংশই অশিক্ষিত। তাই একদল লোক ওই মেয়েকে পুঁজি করে একসময় নিজেরাই ব্যবসা শুরু করে। ফলে প্রতারণার শিকার হয় গ্রামের সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে কোনো প্রতারণার শিকার না হলেও অশিক্ষার নমুনা পাওয়া যায়। কারণ নগেনের মতো অসংখ্য লোক ভূত বিশ্বাস করে। তারা জানে না পৃথিবীতে ভূত বলে কিছু নেই। কারণ সে শিক্ষা গ্রামের মানুষকে দেওয়া হয় না। তাই নগেন মামার চিত্র স্পর্শ করে ধাক্কা খেলে ভাবে ভূতে তাকে ফেলে দিয়েছে। আর এই বিশ্বাস মানুষের মধ্যে জন্মেছে কুসংস্কারের কারণে এবং প্রকৃত শিক্ষার অভাবে।

সর্বশেষ খবর