শনিবার, ২ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা

বাংলা প্রথমপত্র

ফারুক আহম্মদ, সহকারী শিক্ষক, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল

অনুচ্ছেদ : বাংলা নববর্ষ

সারা বছরের সমস্ত দুঃখ ও সমস্ত গ্লানি ঘুচিয়ে নতুন করে প্রতিবছর ফিরে আসে ১ বৈশাখ। নতুন পসরা সাজিয়ে আগমন ঘটে নতুন বছরের। এ দিনটিই বাঙালিদের কাছে বাংলা নববর্ষ নামে পরিচিতি। নববর্ষ সকল দেশের, সকল জাতির আনন্দ-উৎসবের দিন। আমরা সুখ-শান্তি-সমৃদ্ধি ও কল্যাণের প্রত্যাশা নিয়েই মহা ধুমধামের সঙ্গে নববর্ষ উদ্যাপন করে থাকি। বাঙালি জাতিসত্তা বিনির্মাণে এবং স্বাধীনতা অর্জনে রয়েছে নববর্ষের ভূমিকা। অধিকাংশ পণ্ডিত ও ঐতিহাসিকগণেরা মনে করেন, মুঘল সম্রট আকবার ১৫৫৬ সাল থেকে বাংলা সন চালু করেন। পরে জমিদার ও নবাবেরা নববর্ষে পূণ্যাহ ও হালখাতার আয়োজন করতেন। ১৯৫৪ সালে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এই দিনটি ছুটি ঘোষণা করলে নববর্ষ আরো জমজমাট হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পরিবার বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে নববর্ষ পালন করায় সে আয়োজন দেশময় ছড়িয়ে পড়ে। তারাই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে সারা দেশব্যাপী বৈশাখি মেলার উৎসব আয়োজন করা হয়।  ১৯৬৭ সাল থেকে ‘ছায়ানট’ রমনার পাকড়মূলে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছে তা বর্তমানে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ আয়োজন করে মঙ্গল শোভাযাত্রা। বিভিন্ন পেশার মানুষ এই শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে বরণ করে নেয় নববর্ষকে। নববর্ষের প্রধান আকর্ষণ হলো বৈশাখি মেলা।  দেশের বিভিন্ন স্থানে এই মেলার অয়োজন করা হয়। নববর্ষের সবচেয়ে প্রাচীন মেলা হলো ঠাকুরগাঁয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদের মেলা এবং চট্টগ্রামের মহামুনির বৌদ্ধপূর্ণিমা মেলা। ১৯০৭ সাল থেকে কক্সবাজারসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের নানা স্থানে আয়োজন করা হয় ‘জব্বারের বলী’ খেলা। নববর্ষ উপলক্ষে শহরের পাশাপাশি গ্রামেও বিভিন্ন মেলার আয়োজন করা হয়। এ মেলা চলে সপ্তাহ থেকে মাসব্যাপী পর্যন্ত। এ মেলাগুলোতে পাওয়া যায় মাটি,বাঁশ ও বেতের তৈরি জিনিসপত্র। আগে এসব মেলা থেকেই মানুষ সারা বছরের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে রাখত। মেলাগুলোতে নানা বিনোদনেরও আয়োজন করা হয়ে থাকে। পুতুল নাচ, সার্কাস, কীর্তন, যাত্রা, নাগরদোলাসহ নানা আনন্দের আয়োজন করা হয়। এছাড়া গরুর দৌড়, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগের লড়াই, হাডুডু খেলাসহ আরো অনেক কিছুর আয়োজন হয়ে থাকে মেলাগুলোতে।

সর্বশেষ খবর