সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
শিক্ষকের কথা

মূল্যবোধ সৃষ্টির বড় জায়গা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

মূল্যবোধ সৃষ্টির বড় জায়গা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

দেশের বিদ্যমান শিক্ষা ব্যবস্থার সামগ্রিক মান নিয়ে প্রশ্ন ও বিতর্ক রয়েছে। বছর বছর পাসের হার বাড়লেও সেই অনুযায়ী মান বাড়ছে কিনা তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ রয়েছে। শিক্ষার মান কীভাবে প্রত্যাশা মাফিক বাড়ানো যায়, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের করণীয় কী, সহশিক্ষা-শিক্ষা কার্যক্রম কীভাবে শিক্ষার্থীদের মাঝে মানবিক গুণাবলির বিকাশে ভূমিকা রাখে এসব বিষয়ে কথা বলেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিংসে স্থান পাওয়া দিনাজপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবু বকর সিদ্দিক। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের  দিনাজপুর প্রতিনিধি —রিয়াজুল ইসলাম

 

প্রশ্ন  : জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবারের মতো দেশের কলেজগুলোর র্যাংকিংস প্রকাশ করেছে। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখেন?

অধ্যক্ষ : শিক্ষা প্রতিষ্ঠান র্যাংকিংস পৃথিবীর অনেক দেশেই রয়েছে। যদিও আমাদের ক্ষেত্রে এটি নতুন। র্যাংকিংস থাকা ভালো। তবে এর ইনডিকেটরগুলো যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।

প্রশ্ন : কলেজ র্যাংকিংয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে আপনার প্রতিষ্ঠান সেরা দশটির একটি। এ সফলতার পেছনে কোন কোন বিষয় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন?

অধ্যক্ষ : দিনাজপুর সরকারি কলেজ অনেক পুরনো ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিষ্ঠান। দেশের যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এর বৃহৎ ক্যাম্পাস, প্রশাসনিক কাঠামো, আর্থিক স্বচ্ছতা, একাডেমিক মান এবং সহশিক্ষা কার্যক্রমের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

প্রশ্ন : বিগত বছরগুলোয় বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলে আপনার প্রতিষ্ঠানের সফলতার কারণ কী?

অধ্যক্ষ : শিক্ষার্থীদের পাঠগ্রহণে মনোনিবেশ,  পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিশেষ আগ্রহ এর পিছনে ভূমিকা রেখেছে।

প্রশ্ন : দেশের শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। মান বাড়াতে হলে সংশ্লিষ্ট সবার করণীয় কী বলে আপনি মনে করেন?

অধ্যক্ষ : শিক্ষার মান বাড়াতে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ভূমিকা রাখতে হবে। পাঠদানের ব্যাপারে শিক্ষকদের আরও সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে হবে। শিক্ষার্থীদেরও নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিতি থেকে সময়মতো পড়াশোনা করতে হবে। মেধাবীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। তাহলেই শিক্ষার গুণগত মান বাড়বে বলে আমি মনে করি। সেইসঙ্গে সব ধরনের ও সর্বপ্রকারের মাদক ও অপকর্ম থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দূরে থাকতে হবে। তাদের মনে রাখতে হবে, শিক্ষাগ্রহণ ও পাঠদানের মাধ্যমেই দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা যায়।

প্রশ্ন : শিক্ষার মান বাড়ানোর ক্ষেত্রে শিক্ষকরা কি ভূমিকা রাখতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

অধ্যক্ষ : একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাই সব কিছুর মূল নিয়ামক। তাদের প্রয়োজনীয় পরিবেশ নিশ্চিত করলেই শিক্ষার মান বাড়বে। যেমন ৬০ জন শিক্ষার্থীর জন্য একটি ক্লাস সেশন সীমাবদ্ধ রাখলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

প্রশ্ন : শিক্ষকদের মান নিয়েও প্রশ্ন আছে। এ থেকে উত্তরণে করণীয় কী?

অধ্যক্ষ : শিক্ষকদের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই বলে আমার মত।  তাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। একজন শিক্ষক ৬টির বেশি ক্লাস নিলে তার মান রক্ষা হবে কীভাবে?

প্রশ্ন : মূল্যবোধের অবক্ষয় এখন সমাজের সর্বস্তরে প্রতীয়মান হচ্ছে। এর উন্নয়নে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কী ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন? আপনার প্রতিষ্ঠান এক্ষেত্রে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে?

অধ্যক্ষ : পরিবেশের পর মূল্যবোধ সৃষ্টির বড় একটি জায়গা হলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সমাজের সার্বিক পরিবেশ ভালো হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এছাড়া নিয়মিত ক্লাস মনিটরিং করতে হবে।

প্রশ্ন : সহশিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষার মান উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের মাঝে মানবিক মূল্যবোধের বিকাশের ক্ষেত্রে কীভাবে ভূমিকা রাখে?

অধ্যক্ষ : সহশিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। এককথায় বলা যায়, পড়াশোনার পাশাপাশি দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত হতে হবে সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ জরুরি।

প্রশ্ন : আপনার শিক্ষাজীবনের কোনো মধুর স্মৃতি থাকলে বলুন।

অধ্যক্ষ : ড. দূর্গাদাস ভট্টাচার্য একবার আমাদের ঘড়ি ধরে সাড়ে ৭ মিনিটের একটি পরীক্ষা নিয়েছিলেন। বলা বাহুল্য ছাপানো প্রশ্নে।

সর্বশেষ খবর