শিরোনাম
বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা
ঢাবি ‘খ ইউনিট’ ভর্তি পরীক্ষা

‘সবকিছু পড়ার ইচ্ছা দমাতে হবে’

নূর হোসেন নয়ন, শিক্ষার্থী আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

‘সবকিছু পড়ার ইচ্ছা দমাতে হবে’

দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন পূরণ করতে হলে শুধু মেধাবী হলেই চলবে না সেজন্য কৌশলী ও চোখকান খোলা রেখে প্রস্তুতি নিতে হবে। তোমরা যারা কলা অনুষদের অধীন ‘খ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছ তাদের প্রস্তুতিকে আরও কীভাবে শাণিত করা যায় এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাতালিকায় প্রথম স্থান লাভকারী নূর হোসেন নয়ন। আশা করি তার পরামর্শ ভর্তি পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেতে তোমাদের সহায়তা করবে।

পাঠ্যবই খুব বেশি করে পড়তে হবে : পরীক্ষায় বাংলা ও ইংরেজি অংশে পাঠ্যবই থেকে প্রচুর প্রশ্ন আসে। তাই পাঠ্যবই ভালো করে পড়লেই এসব প্রশ্নের উত্তর করা সহজ হবে। বাংলার ক্ষেত্রে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ‘সাহিত্য পাঠ’ এবং নবম-দশম শ্রেণির ‘বাংলা ভাষার ব্যাকরণ’ বই দুটো খুবই উপকারি।

ব্যাকরণে জোর দাও : বাংলা ও ইংরেজি অংশে ব্যাকরণ থেকে অবধারিতভাবে প্রশ্ন আসে। এক্ষেত্রে যে কোনো ভালো ব্যাকরণ বই কিংবা কোচিংয়ের শিটের সাহায্য নিতে পার। ব্যাকরণে ভালো করার ওপরই তোমাদের কাঙ্ক্ষিত সাফল্য অনেকটা নির্ভর করে।

শব্দভাণ্ডার বাড়াতে হবে : বাংলা ও ইংরেজি শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ থাকাটা তোমাকে অন্যদের থেকে এগিয়ে দেবে। বাংলা শব্দের জন্য উচ্চ মাধ্যমিকের যে কোনো ভালো বই এবং ইরেজির জন্য প্রথমত উচ্চ মাধ্যমিকের ইংরেজি পাঠ্যবইয়ের সব শব্দ দখলে থাকতে হবে। এছাড়া বাজারে প্রচলিত যে কোনো সাপ্লিমেন্ট জাতীয় বইয়ের সাহায্য নিতে পার।

সাম্প্রতিক বিশ্ব সম্পর্কে সচেতন থাকবে : দেশ ও বিশ্বে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, রাজনীতির হালচাল, সাহিত্য, ক্রীড়া জগৎ, অর্থনীতির উত্থান-পতন, গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বার্ষিকী, চমকপ্রদ আবিষ্কার, বিখ্যাত পুরস্কার, তারকা প্রস্থান এসব বিষয় নিজেদের মতো করে নোট করে রাখতে হবে। মোট কথা, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির উপর ভালো নজর রাখবে।

লক্ষ্যে ফোকাস রাখতে হবে : নিজেদের সামর্থ্যকে কোনোভাবে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। নিজেকে সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার অন্যতম মেধাবী হিসেবে কল্পনা করে পরিশ্রম করে যেতে হবে।

বিগত বছরের প্রশ্ন দেখে নাও : বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নগুলো অনুশীলন করলে প্রশ্ন পদ্ধতি সম্পর্কে চমৎকার ধারণা পাওয়া যাবে। যথাসম্ভব সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন সমাধান করার কর।

সবকিছু পড়তে যাবে না :  যা সামনে পাবে তাই পড়ে ফেলার ইচ্ছা দমাতে হবে। নির্ধারিত কিছু বিষয়ের ওপর জ্ঞান রাখলেই পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি হয়ে যাবে। অনেক বেশি বই কেনার চেয়ে নির্ধারিত বইগুলো বারবার শেষ করাটাই তো তোমাদের ভালোভাবে প্রস্তুত করে তুলবে।

নিজের মধ্যে প্রেরণা জাগাও : প্রতিদিন সকালে নিজেকে নিজে প্রেরণা দাও। নিজের আত্মবিশ্বাস জাগাতে প্রয়োজন হলে নিজের কাঙ্ক্ষিত বিশ্ববিদ্যালয় একদিন ঘুরে আসতে পার। পূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে যারা পরীক্ষা দেয় তারা বাকিদের থেকে এগিয়ে থাকে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে থাক :  সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু মেধাবীরা নয় বরং অসাধারণ মেধাবীরাই পড়ে একথা মনে রেখ। কেউ যখন ফেসবুক টুইটারে সময় কাটাচ্ছে তখন যদি তুমি ব্যাকরণটা আরেকটু ঝালিয়ে নাও তবে তুমি নিঃসন্দেহে তার চেয়ে এগিয়ে থাকবে। একটানা পড়াশোনা করে মনটা ক্লান্ত হলে ৫-১০ মিনিটের ব্রেক নিয়ে একটু হাঁটাচলা কিংবা প্রিয় কোনো গান শুনে নিজেকে আবার সজীব করে তুলতে পার।

 বেশি বেশি রিভিশন দাও : এতদিনে যতটুকু পড়েছ সে সম্পর্কিত প্রশ্নগুলো সমাধানের চেষ্টা কর। পরীক্ষার আগের ১০ দিন রাখ আগের জ্ঞানটুকু অনুশীলনের মাধ্যমে ঝালিয়ে নেওয়ার। এ সময় নতুন বই, নোট বা সাজেশন পড়া থেকে বিরত থাক।

পরীক্ষার কেন্দ্রে রিফ্রেশড থাকবে : পরীক্ষার হলে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। খুব যত্ন সহকারে সময় নিয়ে এবং প্রয়োজন হলে সম্মানিত শিক্ষকের সহায়তা নিয়ে তথ্যের অংশগুলো পূরণ করবে। যেহেতু মাইনাস নম্বর আছে সেহেতু যথেষ্ট ভেবে উত্তর দেবে।  যে অংশে বেশি জ্ঞান রাখ তার আগে উত্তর করলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে।

তোমাদের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা। পরিশ্রম থাকলে সাফল্য আসবেই।

সর্বশেষ খবর