রবিবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা : বাংলা প্রথমপত্র

ফারুক আহম্মদ, সহকারী শিক্ষক, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল

বঙ্গভূমির প্রতি — মাইকেল মধুসূদন দত্ত

সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

১। এম এ পাস করা যুবক আশিক। বহু চেষ্টা করে একটি চাকরি পায় আশিক। চাকরির সুবাদে তাকে অস্ট্রেলিয়া যেতে হবে। কিন্তু আশিক কোনো মতে দেশ ছেড়ে বিদেশে পাড়ি দিতে চাই না। সকলের অনুরোধে আশিক পাড়ি জমায় অস্ট্রেলিয়ায়। কিন্তু সেখানে আশিকের মন টেকে না। মনে পড়ে বাবা-মায়ের কথা, গ্রামের কথা এবং গ্রামের মানুষের কথা। ভুলতে পারে না শৈশবের স্মৃতিময় মাঠ-ঘাট, নদীর কথা। তাই আশিক সিদ্ধান্ত নিল দেশে ফিরে যাবে। দেশে ফিরে আশিক কৃষি কাজ করবে কিন্তু বিদেশে আর থাকবে না।  

ক.  শমন অর্থ কী?

খ.  রেখো, মা, দাসেরে মনে-বলতে কী বোঝায়?

গ.  উদ্দীপকে ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার যে মিল পাওয়া যায় তা ব্যাখ্যা কর।

ঘ.   উদ্দীপকের দেশাত্মবোধ এবং ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার দেশাত্মবোধে যে

     পরিচয় বহন করে তা নিজের মতো করে মূল্যায়ন কর।

ক. উত্তর : শমন অর্থ  মৃত্যুর দেবতা।

খ. উত্তর : রেখো, মা, দাসেরে মনে-বলতে দেশমাতা মাতৃভূমি যেন কবিকে মনে রাখে কবি দেশমাতার কাছে সেই মিনতি করেছেন।

প্রত্যেক মানুষের আশা বা স্বপ্ন হলো কীর্তিমান হয়ে বেঁচে থাকা। মৃত্যুর পরও যেন মানুষ তাকে স্মরণ রাখে এটা প্রত্যেক মানুষের চিরায়ত কামনা। তাই ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় কবি স্বদেশকে মা আর নিজেকে তার সন্তান হিসেবে কল্পনা করেছেন। মায়ের অনুগত সন্তান হিসেবে মায়ের কাছে তার আকুতি যেন চিরকাল তাকে মনে রাখে।    

গ. উত্তর : উদ্দীপক এবং ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার মধ্যে যে মিল রয়েছে তা হলো স্বদেশের প্রতি প্রেম ভলোবাসা এবং মমত্ববোধ।

স্বদেশপ্রেম মানুষের একটি মানবিক গুণ। স্বদেশকে আঁকড়ে ধরে অনেকে বেঁচে থাকতে চাই। বৈদেশিক প্রাচুর্যও অনেককে মুগ্ধ করে না। তাই কবি বিদেশে থেকেও যেমন দেশকে ভুলতে পারেনি, তেমনি আশিক ভালো চাকরি করলেও স্বদেশের প্রেমে চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে এসেছে। 

‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় স্বদেশের প্রতি কবির শ্রদ্ধা ও মমত্ববোধ তীব্রভাবে প্রকাশ পেয়েছে। কবি দেশকে মা হিসেবে কল্পনা করেছেন। কবি বিদেশে থাকলেও দেশকে মনে রেখেছেন। তাই কবি দেশমাতার কাছে মিনতি করেছেন যেন তাকে মনে রাখে। যদি তিনি কোনো অপরাধ করেও থাকে তা যেন মা ক্ষমা করে দেয় এবং দেশের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকে। কবি দেশকে ভালোবাসে বলেই দেশ মাতৃকার স্মৃতিতে পদ্মফুলের মতো ফুটে থাকতে চাই। অন্যদিকে উদ্দীপকে আশিক দেশকে ভালোবেসে চাকরি ছেড়ে দেয়। বহু চেষ্টার পর আশিক অস্ট্রেলিয়ায় একটি ভালো চাকরি পায়। সকলের অনুরোধে আশিক অস্ট্রেলিয়ায় গেলেও দেশকে সে ভুলতে পারে না। শৈশবের স্মৃতি তাকে বারবার দেশের কথা মনে করিয়ে দেয়। তাই সে কোনো কাজে মন বসাতে পারে না। অবশেষে স্বদেশের টানে আশিক চাকরি ত্যাগ করে দেশে ফিরে আসে। তাই বলা যায়, উদ্দীপক ও ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার মধ্যে যে মিল পাওয়া যায় তা হলো স্বদেশপ্রেম।

ঘ. উত্তর : দেশাত্মবোধের অপূর্ব নিদর্শন প্রকাশিত হয়েছে উদ্দীপক ও ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায়। উভয়ের দেশাত্মবোধের মধ্যে নিজ দেশের প্রতি ভালোবাসা ও মমত্ববোধের পরিচয় বহন করে। জন্মভূমি মায়ের মতো স্নেহময়ী। জন্মভূমির প্রকৃতিতে মানুষ লালিত পালিত হয়। তাই প্রবাস জীবনে মানুষের মাঝেও যে দেশাত্মবোধ শত ধারায় প্রসারিত হয় উদ্দীপক ও ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় সেটাই প্রকাশিত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর