সোমবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
উচ্চশিক্ষা

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের করণীয়

শরীফ খান

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের করণীয়

দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শেষে ভর্তি প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গেছে। আর বাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হবে। তাই এর মধ্যে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থী তাদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। তবে এ বছর এইচএসসি উত্তীর্ণ বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাননি। আর সুযোগ না পাওয়াটাও স্বাভাবিক কারণ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের তুলনায় আসন সংখ্যা যে বেশ সীমিত। তাই শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ বরাবরের মতো এবারও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। শিক্ষার্থীদের এ কঠিন বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স হয়নি বলে তারা কিন্তু উচ্চশিক্ষা গ্রহণ থেকে বিরত থাকবে না। এদের একটা অংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ধরনের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবে। আরেকটা অংশ কোথায় পড়বে, কোন বিষয়ে পড়বে, কোন পথে এগুবে এ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। এক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো ফলধারী মহসিনের [ছদ্মনাম] ঘটনাটি বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। সে এ বছর একটি শীর্ষসারির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ পরিবর্তনকারী ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে ঠিকই কিন্তু ইংরেজিতে ভালো স্কোর না থাকায় পছন্দের বা ভালো বিষয়ে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ফলে ওই ইউনিটের আওতাধীন নিচের দিকের ‘একদমই নরমাল’ কোনো বিষয়ে বা মেধাতালিকা ও ইংরেজিতে প্রাপ্ত স্কোর অনুযায়ী মনোনীত বিষয়ে পড়বে কিনা এ নিয়ে দ্বিধায় পড়েছে সে। উপরন্তু ভবিষ্যৎ নিয়েও তাকে এবং তার অভিভাবককে চিন্তা করতে হচ্ছে কারণ তারা ভালো করেই জানে নরমাল বিষয়ে পড়াশোনা করার ভবিষ্যৎ খুব একটা উজ্জ্বল না। তাই শিক্ষার্থীদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ ধাপে এসে সিদ্ধান্তহীনতায় না ভোগে ত্বরিত সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। তবে গৃহীত সিদ্ধান্ত যেন সময়োপযোগী ও ভবিষ্যতের জন্য কল্যাণকর হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মাথায় রাখতে হবে তারা পাবলিক বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গতানুগতিক বা যে বিষয়-ই পেলাম তাতেই পড়াশোনা করবে নাকি চাকরি উপযোগী বিষয়ে দেশের বাইরে কোথাও পড়াশোনা করবে।

শিক্ষার্থীদের অনেকেই হয়তো জানে না দেশের কোথাও পড়াশোনা করতে যে খরচ হয় সে একই বা আরও কম খরচে চীন, মালয়েশিয়া, জাপানসহ অনেক দেশে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। তাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিবঞ্চিত ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে কিনা এ নিয়ে যারা সিদ্ধান্তহীনতা ও দ্বিধায় ভুগছে তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই বিদেশে উচ্চশিক্ষাবিষয়ক কনসালটেন্সি ফার্ম ‘বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’ এক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ৭ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া ‘আন্ডারগ্র্যাজুয়েট অ্যাডমিশন উইক’ নামে সপ্তাহব্যাপী এ বিশেষ কর্মসূচিতে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের এক্সপার্ট ও সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। অ্যাডমিশন উইকে শিক্ষার্থীদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুবিধাদি, যোগ্যতা অনুযায়ী তারা কোন কোন দেশে ও কোন কোন বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারবে এ বিষয়ে সামগ্রিক তথ্য প্রদান করা হচ্ছে। অর্থাৎ এককথায় এতে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পুরো দিকনির্দেশনাই পাবে। এখানে যোগ্যতা অনুযায়ী বিদেশে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে বিস্তারিত জানার সুযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের। সেই সঙ্গে যেসব শিক্ষার্থী দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবর্ষ বা প্রথম সেমিস্টার বা দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত তারাও অ্যাডমিশন উইকে অংশ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগ সম্পর্কে জানতে পারবে।

অ্যাডমিশন উইকের সেবা : বিদেশে ভর্তি সপ্তাহ উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের নানান ধরনের সুবিধা দিচ্ছে আয়োজক প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে ‘অন-স্পট’ ভর্তি ছাড়াও রয়েছে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ সাপেক্ষে স্কলারশিপ প্রাপ্তির সম্ভাবনা, ফি-বিহীন সার্ভিস, নির্দিষ্ট কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ফ্রি বিমান টিকিটসহ আরও নানা রকম সেবা ও বিদেশে উচ্চশিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য। একেক দিন একেক দেশে উচ্চশিক্ষার নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের মূল্যবান পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। আজ ১৪ নভেম্বর নিউজিল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ওয়ান-টু-ওয়ান পরামর্শ দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, চীন ও রাশিয়া এবং জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার বিষয়ে দিনব্যাপী সেশন হয়ে গেছে। তবে শিক্ষার্থীরা চাইলে এখনও যে কোনো দিন তাদের পছন্দের দেশে পড়াশোনার বিষয়ে জানতে পারবে। এজন্য আগ্রহী শিক্ষার্থীদের সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে ঢাকার গুলশান-২ প্লট-২২-এ অবস্থিত বিএসসি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের অফিসে। আরও জানতে কথা বলতে পারেন ০১৭২০-৫৫৭১১৮-১০৬, ০১৭২০৫৫৭১০৪ নম্বরে। বিদেশে উচ্চশিক্ষার্থে আবেদন ও স্টুডেন্ট ভিসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে অনেক শিক্ষার্থীরই যথাযথ জ্ঞান থাকে না। এক্ষেত্রে কনসালটেন্সিগুলো মূল্যবান পরামর্শ দিয়ে থাকে। শিক্ষার্থীদের মনে রাখা উচিত, ভবিষ্যতে তারা নিজেদের কোথায় ও কোন অবস্থায় দেখতে চান এ ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় এখনই। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং চাকরির বাজারের বিদ্যমান সংকট বিবেচনায় অভিভাবকদেরও উচিত তাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের বিষয়ে সঠিক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। তা না হলে তুমুল প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে দেশে ‘নরমাল’ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা শেষে ভবিষ্যতে চাকরি না পেয়ে গ্লানিময় জীবনযাপনের মুখে পতিত হতে পারে আপনার প্রিয় ও আদরের সন্তানটি।

সর্বশেষ খবর