মঙ্গলবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

এসএসসি বাংলা প্রথমপত্র

ফারুক আহম্মদ

এসএসসি বাংলা প্রথমপত্র

বইপড়া

প্রমথ চৌধুরী

 

সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর

১. আব্দুর রাজ্জাক একজন বিশিষ্ট উকিল। ওকালতিতে সুনাম অর্জনের জন্য তিনি সর্বদা আইনবিষয়ক বই পড়েন। এর বাইরে তিনি কোনো বই পড়েন না এবং কেনেন না। কারণ তিনি মনে করেন, পেশাগত বই না পড়ে সাহিত্যের বই পড়লে পেশার উন্নয়ন হয় না। 

ক. ‘সবুজপত্র’ পত্রিকার সম্পাদক কে?

খ. পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক নয়-ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপকে আব্দুর রাজ্জাকের ভাবনার সাথে ‘বইপড়া’ প্রবন্ধের লেখকের ভাবনার বৈসাদৃশ্যের দিকটি ব্যাখ্যা কর।

ঘ. আব্দুর রাজ্জাকের মতো অসংখ্য বাঙালির দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য কী করা প্রয়োজন বলে তুমি মনে কর- উদ্দীপক ও ‘বইপড়া’ প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ কর।

ক. উত্তর : ‘সবুজপত্র’ পত্রিকার সম্পাদক হলো প্রমথ চৌধুরী।

খ. উত্তর : পাস করা আর শিক্ষিত হওয়া এক কথা নয় কারণ পাস করা বিদ্যা মনের পরিবর্তন ঘটায় না, কিন্তু প্রকৃত শিক্ষা মনের পরিবর্তন ঘটায়।

মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করার জন্য প্রয়োজন প্রকৃত শিক্ষা। কেননা প্রকৃত শিক্ষার মধ্য দিয়ে মানুষের চোখ খুলে যায়। অন্যদিকে যারা শুধু পাস করার জন্য পড়ে তাদের মনের চোখ খোলে না। তাদের মনের অপমৃত্যু ঘটে। মনুষ্যত্ববোধ হারিয়ে ফেলে। তাই পাস করা ও শিক্ষিত হওয়া এক নয়।

গ. উত্তর : উদ্দীপকের আব্দুর রাজ্জাকের ভাবনার সাথে ‘বইপড়া’ প্রবন্ধে লেখকের ভাবনার বৈসাদৃশ্য হলো জ্ঞান অর্জনে দুইজনের দুই মত।

উদ্দীপকে পেশার উন্নয়নে বই পড়ার প্রতি অনীহা সম্পর্কে আলোচিত হয়েছে। আব্দুর রাজ্জাক একজন বিশিষ্ট উকিল। ওকালতিতে সুনাম অর্জনের জন্য তিনি আইনবিষয়ক বই ব্যতীত অন্য কোনো বই পড়েন না। তার ধারণা সাহিত্যের বই বা অন্য কোনো বই পড়ে পেশার উন্নয়ন সম্ভব নয়।

অন্যদিকে ‘বইপড়া’ প্রবন্ধে লেখক জ্ঞানার্জনের জন্য বইপড়ার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। যা আব্দুর রাজ্জাকের ধারণা হতে ভিন্ন। প্রবন্ধে লেখক পেশাগত উন্নয়নের সাহিত্যের বইপড়ার যুক্তিনিষ্ঠ বক্তব্য তুলে ধরেছেন। লেখকের ধারণা যাদের জ্ঞানের ভাণ্ডার শূন্য, তাদের ধনের ভাণ্ডারও শূন্য। যে জাতি জ্ঞানে বড় নয়, সে জাতি মনেও বড় নয়। আর জাতিকে ধনে ও মনে বড় হতে হলে সাহিত্যের বইপড়া অপরিহার্য। আব্দুর রাজ্জাকের ভাবনার সাথে ‘বইপড়া’ প্রবন্ধে লেখকের ভাবনার বৈসাদৃশ্য হলো একজনের বই পড়ার প্রতি অনীহা আর অপরজনের বই পড়ার প্রতি গুরুত্ব আরোপ।

ঘ. উত্তর : আব্দুর রাজ্জাকের মতো অসংখ্য বাঙালির দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া আর তার জন্য প্রয়োজন বইপড়া।

আমাদের সমাজে এমন কিছু স্বার্থপর লোক আছে যারা নিজ পেশা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাদের ধারণা সাহিত্যচর্চা মানুষের কোনো ব্যক্তিসত্তার পরিবর্তন ঘটায় না। কিন্তু সাহিত্যই একমাত্র বিষয় যা পাঠের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তা- চেতনার পরিবর্তন ঘটায়।

উদ্দীপকে বইপড়ার প্রতি অনীহা তুলে ধরা হয়েছে। আব্দুর রাজ্জাক একজন বিশিষ্ট উকিল। তিনি মনে করেন, ওকালতি পেশায় সুনাম অর্জনের জন্য আইনবিষয়ক বই পড়ার প্রয়োজন। সাহিত্যের বই পড়ে কখনও পেশার উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব নয়। আব্দুর রাজ্জাকের মতো অসংখ্য বাঙালি আছে যারা মনে করেন পেশার উন্নয়নের জন্য শুধু প্রয়োজনীয় বই পড়লেই হয়।

অন্যদিকে ‘বইপড়া’ প্রবন্ধে লেখক এসব সংকীর্ণমনা লোকদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য বইপড়ার কথা বলেছেন এবং পেশাগত উন্নয়নের যৌক্তিক মন্তব্যও পেশ করেছেন। লেখকের মতে, যে জাতি যত শিক্ষিত, সে জাতি তত উন্নত। তিনি আরও বলেন, দর্শন, বিজ্ঞান প্রভৃতি সাহিত্যের ভেতরই পূর্ণরূপে প্রকাশ পায়। তাছাড়া সাহিত্যচর্চার মাধ্যমেই মানুষ প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ওঠে। আর প্রকৃত শিক্ষায় মানুষের মনের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়। মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত হয়। ফলে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিরও পরিবর্তন ঘটে। তাই আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, আব্দুর রাজ্জাকের মতো সংকীর্ণমনা অসংখ্য বাঙালির দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া।             

 

সহকারী শিক্ষক

আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর