রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা : বাংলা

মেহেরুন্নেসা খাতুন

প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা : বাংলা

পঁচিশে মার্চ রাতে আক্রান্ত হয় সংবাদপত্র অফিসগুলোও। প্রধান সংবাদপত্রগুলোর অনেক অফিসে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা। সেই রাতে হত্যা করে বহু সাংবাদিককে। পঁচিশে মার্চের রাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা ‘দৈনিক সংবাদ’ অফিসে আগুন দেয়। লেখক ও সাংবাদিক শহীদ সাবের সে রাতে ওই অফিসেই ঘুমুচ্ছিলেন। ঘুমন্ত অবস্থায় সংবাদ অফিসে পুড়ে মারা যান তিনি। শহীদ হন সেলিনা পারভীন। মাত্র ২৫ বছর বয়সে প্রাণ দেন কবি সাংবাদিক মেহেরুন্নেসা। তারা হত্যা করে প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে। তখন তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান গণপরিষদে তিনিই প্রথম বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তুলেছিলেন।

কুমিল্লার বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে শত্রু সেনারা তাকে হত্যা করে। অধ্যক্ষ যোগেশ চন্দ্র ঘোষ, দেশবাসীর স্বাস্থ্যসেবার জন্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আয়ুর্বেদীয় একটি প্রতিষ্ঠান, সাধনা ঔষধালয়। ৮৪ বছর বয়স্ক ওই মানুষটিও রেহাই পাননি পাকিস্তানি শত্রুদের হাত থেকে। তাকেও হত্যা করে পাকিস্তানি সেনারা। এ দেশের সাধারণ মানুষের মঙ্গল ও কল্যাণের জন্য নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন রণদা প্রসাদ সাহা। দানশীলতার জন্য লোকে তাকে ডাকত ‘দানবীর’ বলে। হত্যা করা হয় তাকে। চট্টগ্রামের বিখ্যাত সমাজসেবক ছিলেন নতুন চন্দ্র সিংহ। শত্রু সেনারা তাকেও রেহাই দেয়নি। একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের স্মরণ করে আমরা ফুল দিতে যাই শহীদ মিনারে। তখন আমাদের মনে আর মুখে বেজে ওঠে একটি গান— ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’। এ গানে সুর দেন আলতাফ মাহমুদ। প্রতিভাবান ওই সুরসাধকের প্রাণ কেড়ে নেয় পাকিস্তানি বাহিনী।

১.         সঠিক উত্তর লেখ :               ১–৫=৫

            ক. অনুচ্ছেদটি তোমার পাঠ্যবইয়ের কোন গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে?

            i. চিরদিন যাঁরা স্মরণীয়   ii. স্মরণীয় যাঁরা চিরদিন

            iii. বীরের রক্তে স্বাধীন এ দেশ

            iv. বুদ্ধিজীবী হত্যার কাহিনী

            খ. মাত্র ২৫ বছর বয়সে কে প্রাণ দেন?

            i. শহীদ সাবের  রর. সেলিনা পারভীন  

            iii. মেহেরুন্নেসা   iv. ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত

            গ. ‘দানবীর’ কে ছিলেন?

            i. রণদা প্রসাদ সাহা  ii. নতুন চন্দ্র সিংহ

            iii. যোগেশচন্দ্র ঘোষ iv. আলতাফ মাহমুদ

            ঘ. একুশে ফেব্রুয়ারি আমরা শহীদ ভাইদের স্মরণ করি কেন?

            i. ওই দিন তারা শহীদ হয়েছিলেন বলে

            ii. ওই দিন আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাই বলে

            iii. ওই দিন আমরা একুশের প্রভাতফেরিতে যাই বলে

            iv. ওই দিনটির জন্যই বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পায় বলে।

            ঙ. কত সালে প্রথম পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তোলা হয়?

            i. ১৯৪৭ সালে   ii. ১৯৪৮ সালে   iii. ১৯৫২ সালে     iv. ১৯৫৪ সালে   

২.         নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ : ১+২+২=৫

            ক. ‘সাংবাদিক’ কোন পদ?

            খ. শহীদ সাবের কে ছিলেন? তিনি কীভাবে শহীদ হন? দুটি বাক্যে লেখ।

            গ. ‘সাধনা ঔষধালয়’ কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন? তার সম্পর্কে দুটি বাক্য লেখ।

৩.         প্রদত্ত শব্দগুলোর অর্থ লেখ :                 ৫        

            আগুন, সমাজসেবক, প্রতিভাবান, রেহাই, মঙ্গল

৪.         প্রদত্ত অনুচ্ছেদটির মূল বক্তব্য লেখ।        ৫            

            অনুচ্ছেদটি পড়ে ৫, ৬ ও ৭ নম্ব্বর প্রশ্নের উত্তর লেখ।           

বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের একটি ক্ষুদ্র অথচ জনবহুল দেশ। এখানে মাত্র ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ১৬ কোটি লোকের বসবাস। জনসংখ্য বৃদ্ধিতে যেসব সময় সব দেশের জন্য সমস্যা, সে কথা অবশ্য সত্য নয়। মূল সমস্যা হলো জনসংখ্যার স্ফীতি। থমাস ম্যালথাসের মতে, ‘কোনো দেশের জনসংখ্যা সে দেশের মোট খাদ্যোৎপাদন অপেক্ষা বেশি হলে ওই জনসংখ্যাজনিত সমস্যাকে জনসংখ্যা স্ফীতি বলে।’ জনসংখ্যাজনিত সমস্যার কারণে মানুষ দারিদ্র্যপূর্ণ জীবনযাপনে বাধ্য হয়। এটি তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণে বিরাট অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। এর মূল কারণ হলো সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি। ধনী, বৃহৎ ও স্বল্প জনসংখ্যার দেশে জনসংখ্যা খুব একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়নি। তবে উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশে জনসংখ্যা স্ফীতি মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠেছে। এগুলোর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে এ সমস্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী ২০২৫ সালে বাংলাদেশের লোকসংখ্যা প্রায় ২০ কোটিতে পৌঁছুলে এ দেশের মানুষের মৌলিক মানবাধিকার পরিস্থিতি যে ভয়াবহ হতে পারে তা সহজে অনুমেয়। শিক্ষার অভাবই এ দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির উচ্চহারের প্রধান কারণ। বাংলাদেশের জলবায়ু ও এর ভৌগোলিক অবস্থানও এখানকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে বিশেষভাবে দায়ী। বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহও জনসংখ্যা বৃদ্ধি দ্রুততর করে। পুরুষপ্রধান সমাজে পুত্রসন্তানের আশায় অনেকেই অধিক সন্তান জন্মদান করে। এ সামাজিক কুসংস্কার আমাদের দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য কারণ। এ ছাড়া জন্ম ও মৃত্যু হারের তারতম্য, নারী শিক্ষার অভাব, দারিদ্র্য, চিত্তবিনোদনের অভাব, খাদ্যাভ্যাস প্রভৃতি জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ রূপে কাজ করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী হতে পারে অজ্ঞতা দূর করা ও শিক্ষার হার বৃদ্ধি। রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি বা দুটির বেশি সন্তান গ্রহণকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। ধর্মীয় কুসংস্কার জন্মনিয়ন্ত্রণের পথে একটি বড় অন্তরায়। তাই প্রচারমাধ্যমগুলোতে জন্মনিয়ন্ত্রণের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করতে হবে। এ ছাড়া নারীশিক্ষা বৃদ্ধি, দারিদ্র্য দূরীকরণ, চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা, নারী-পুরুষের অধিকারের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণের ব্যবস্থা করলে এ সমস্যার অনেকাংশে সমাধান হবে।

 

৫.         সঠিক উত্তরটি উত্তরপত্রে লেখ :             ১–৫=৫        

            ক. উপরের অনুচ্ছেদে কী বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে?  

            i. জনসংখ্যা সমস্যা          

            ii. বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা ও প্রতিকারের উপায়

            iii. বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রতিকারের উপায়

            iv. বাংলাদেশের জনসংখ্যা সমস্যা

            খ. ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্রায় কত হতে পারে? 

            i. ১৫ কোটি  ii. ১৬ কোটি iii. ২০ কোটি  iv. ২৫ কোটি

            গ. জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে মানুষের জীবনযাপন কীরূপ হয়?

            i. দারিদ্র্যপূর্ণ        ii. আনন্দপূর্ণ    

            iii. বৈষম্যপূর্ণ      iv.আবেগপূর্ণ

            ঘ. কোন দেশে জনসংখ্যা খুব একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়নি?

            i. উন্নয়নশীল দেশে          ii.অনুন্নত দেশে

            iii. স্বল্প জনসংখ্যার দেশে   iv. বাংলাদেশে

            ঙ বাংলাদেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির উচ্চহারের প্রধান কারণ কী?

            i. বাল্যবিবাহ                ii. বহুবিবাহ

            iii. পুত্রসন্তানের আশা   iv. শিক্ষার অভাব

৬.         ছকে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া আছে। ওই শব্দটি দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ করে উত্তরপত্রে লেখ :              ১–৫=৫

                  

 

            ক. নারী পুরুষের মধ্যকার ...দূর করতে হবে।

            খ. শিক্ষা আমাদের মৌলিক.........।          

            গ. .......আমাদের দেশের একটি বড় সমস্যা।                                                                                       

            ঘ. আমি আমাদের বংশের একমাত্র পুত্র.........।          

            ঙ. ধর্মীয় কুসংস্কার নারী শিক্ষার পথে এক বিরাট....।

৭.         নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ :              ১–৩=১৫          

            ক. বাংলাদেশের জনসংখ্যা কেন সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে? পাঁচটি বাক্যে লেখ।

            খ. কী কী কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে? পাঁচটি বাক্যে লেখ।             

            গ. জনসংখ্যা বৃদ্ধি রোধে আমাদের কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে? পাঁচটি বাক্যে লেখ।

৮.         নিচের যুক্তবর্ণগুলো ভেঙে দেখাও এবং প্রতিটি যুক্তবর্ণ দিয়ে তৈরি শব্দ দ্বারা একটি করে বাক্য রচনা কর।  ২–৫=১০

            ক. ত্র্য      খ. স্ত্র      গ. জ্ঞ      ঘ. ঘ্ন      ঙ. হ্ম

৯.         উপযুক্ত স্থানে বিরাম চিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদটি তোমার উত্তরপত্রে লেখ :                 ৫            

            জগদীশ চন্দ্র এক বছর ডাক্তারি পড়ার পর ১৮৮১ সালে ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান, এখান থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করে তিনি ১৮৮৫ সালে দেশে ফিরে এসে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক পদে যোগ দেন। তখন দেশ ছিল পরাধীন। এ সময় একই পদে একজন ইংরেজ অধ্যাপক যে বেতন পেতেন ভারতীয়রা পেতেন তার তিন ভাগের দুই ভাগ

১০.       এককথায় প্রকাশ করে উত্তরপত্রে লেখ :                 ১–৫=৫        

            ক. সোনালি রঙের বুনো লতা

            খ. দেশ চালায় যে    গ. শুয়ে আছে এমন

            ঘ. নিজের লোক      ঙ. ভিন্ন দেশে বাস করে যে।

সর্বশেষ খবর