রবিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির জীববিজ্ঞান প্রথমপত্র

সুনির্মল চন্দ্র বসু

একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির জীববিজ্ঞান প্রথমপত্র

প্রথম অধ্যায় : কোষ ও এর গঠন

সৃজনশীল প্রশ্ন :

নিচের উদ্দীপকটি লক্ষ কর এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

ক. স্যাটেলাইট কী?  ১

খ. লাইসোসোমকে আত্মঘাতী থলিকা বলা হয় কেন?  ২

গ. উদ্দীপকের ‘B’ সৃষ্টির কৌশলটি ব্যাখ্যা কর।      ৩

ঘ. উদ্দীপকের A ও B এর মধ্যে তুলনা কর।         ৪

উত্তর : ক. কোনো কোনো ক্রোমোসোমের এক বাহুর প্রান্তে ক্রোমাটিন সূত্র দ্বারা সংযুক্ত প্রায় গোলাকৃতির একটি অংশ দেখা যায়। ক্রোমোসোমের প্রান্তের দিকের এই গোলাকৃতি অঞ্চলকে স্যাটেলাইট বলে।

খ. সাইটোপ্লাজমে অবস্থিত যে অঙ্গাণু হাইড্রোলাইটিক এনজাইমের আধার হিসেবে কাজ করে তাকে লাইসোসোম বলে। তীব্র খাদ্যাভাবের সময় এর প্রাচীর ফেটে যায় এবং আবদ্ধকৃত এনজাইম বের হয়ে কোষের অন্য অঙ্গাণুগুলো বিনষ্ট করে দেয়। এই কাজকে বলে স্ব-গ্রাস বা অটোফ্যাগি। এভাবে সমস্ত কোষটিও পরিপাক হয়ে যেতে পারে। একে বলা হয় অটোলাইসিস। এরা জীবদেহের অকেজো কোষসমূহকে অটোলাইসিস পদ্ধতিতে ধ্বংস করে বলে লাইসোসোমকে আত্মঘাতী থলিকা বলা হয়।

গ. উদ্দীপকের ‘ই’ হলো RNA|

উঘঅ থেকে RNA উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ট্রান্সক্রিপশন বলে। আমিষ সংশ্লেষণের প্রথম ধাপ হলো ট্রান্সক্রিপশন। DNA-এর যতটুকু অংশ নিরবচ্ছিন্নভাবে একটি RNA অণু সৃষ্টি করে তাকে ট্রান্সক্রিপশন একক বলে। একটি ট্রান্সক্রিপশন এককে প্রোমোটার, শুরুও বিন্দু (প্রারম্ভিক স্থান) এবং শেষ বিন্দু (চূড়ান্তকরণ স্থান) এই তিনটি অংশ আছে।

সাধারণত তিনটি ধাপে ট্রান্সক্রিপশন ঘটে।

১। প্রারম্ভিক ধাপ : এ ধাপে DNA অণুর প্রোমোটার স্থান নামক অংশে জঘঅ পলিমারেজ এনজাইম যুক্ত হয়। এই এনজাইমের অংশগ্রহণে DNA-এর সূত্রক দুটি আলাদা হতে থাকে।

২। MRNA শিকল দীর্ঘকরণ ধাপ : সূত্রদ্বয় আলাদা হলে র্৩-র্৫ মেরুত্বের সূত্রকটি ছাঁচ হিসেবে কাজ করে। এই ছাঁচ সূত্রককে এন্টিসেন্স স্ট্রান্ড বলে। DNA-এর অপর সূত্রককে সেন্স স্ট্রান্ড বলে। RNA পলিমারেজ এনজাইম, Mg2+ ও Mn2+ এর সহায়তায় এন্টিসেন্স স্ট্রান্ডের ভিত্তিতে নিউক্লিওটাইতে যুক্ত হয়ে MRNA-এর শিকল দীর্ঘকরণ চলতে থাকে। ট্রান্সক্রিপশন 5Æà3 অভিমুখে চলে।

৩। MRNA শিকল সমাপ্তিকরণ ধাপ : চূড়ান্তকরণ স্থানে পৌঁছলে RNA পলিমারেজ এনজাইমটি মুক্ত হয়ে যায় এবং MRNA সংশ্লেষণ শেষ হয় অর্থাৎ ট্রান্সক্রিপশনের সমাপ্তি ঘটে।

ঘ. উদ্দীপকে অ  হলো DNA এবং ই হলো RNA।

নিচে DNA ও RNA-এর মধ্যে তুলনা দেওয়া হলো—

১। DNA প্রধানত ক্রোমোসোমে পাওয়া যায়। কখনো মাইটোকন্ডিয়া ও ক্লোরোপ্লাস্টে থাকে। অন্যদিকে RNA সাইটোপ্লাজম, ক্রোমোসোম, রাইবোসোম ও নিউক্লিওলাসে থাকে।

২। DNA দ্বিসূত্রক, ঘুরানো সিঁড়ির মতো। অন্যদিক RNA একসূত্রক, শিকলের ন্যায়।

৩। DNA -তে ডিঅক্সিরাইবোজ সুগার থাকে। এর পাইরিমিডিনে সাইটোসিন ও থাইমিন বেস হিসেবে থাকে। অন্যদিকে RNA-তে রাইবোজ সুগার থাকে। এর পাইরিমিডিনে সাইটোসিন ও ইউরাসিল বেস হিসেবে থাকে।

৪। অনুলিপনের মাধ্যমে নতুন DNA সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে RNA-এর কোনো অনুলিপন হয় না। নতুনভাবে RNA সৃষ্টি হয়।

৫। DNA অণুর কোনো প্রকারভেদ নেই। অন্যদিকে কার্যগত দিক হতে RNA পাঁচ প্রকার। যথা mRNA, tRNA, rRNA, gRNA, gvBbi RNA ।

৬। DNA বংশগতির ধারক, বাহক ও নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে। অন্যদিকে RNA প্রোটিন সংশ্লেষ করাই কাজ।

৭| DNA-এর নিউক্লিয়োটাইডের সংখ্যা অনেক বেশি। অন্যদিকে RNA-এর নিউক্লিয়োটাইডের সংখ্যা অনেক কম।

৮। DNA-এর আণবিক ওজন দশ লাখ হতে বহু কোটি ডাল্টন পর্যন্ত হয়। অন্যদিকে RNA-এর আণবিক ওজন কয়েক লাখের বেশি হয় না।

সর্বশেষ খবর