খ বিভাগ-কবিতা
(যেকোনো ২টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১০)
১. সাম্প্রতিককালে মিয়ানমারে বসবাসরত মুসলিম রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দ্বারা নির্যাতিত ও নিষ্পেষিত হচ্ছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী শত শত রোহিঙ্গাকে হত্যা করছে। অনেক রোহিঙ্গা মিয়ানমার ভূখণ্ড ছেড়ে প্রাণভয়ে অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, এমনকি জাতিসংঘ পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হয়েছে।ক. ‘জেতের ফাতা’ অর্থ কী?
খ. ‘মূলে একজন, সে যে ভিন্ন নয়’ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে ‘মানব ধর্ম’ কবিতার কোন বিশেষ দিকটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘উদ্দীপকটি ‘মানব ধর্ম’ কবিতার আংশিক ভাব ধারণ করেছে’— মন্তব্যটি সম্পর্কে তোমার মতামত দাও।
২. ‘আম্মা, দেশের এ রকম অবস্থায় তুমি যদি আমাকে জোর করে আমেরিকায় পাঠিয়ে দাও, আমি হয়তো যাব শেষ পর্যন্ত। কিন্তু আমার বিবেক চিরকালের মতো অপরাধী করে রাখবে আমাকে। আমেরিকা থেকে হয়তো বড় ডিগ্রি নিয়ে এসে বড় ইঞ্জিনিয়ার হব; কিন্তু বিবেকের সামনে কোনো দিনও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব না। তুমি কি তাই চাও আম্মা?’ আমি জোরে দুই চোখ বন্ধ করে বললাম, ‘না, চাইনে। ঠিক আছে, তোর কথাই মেনে নিলাম। দিলাম তোকে দেশের জন্য কোরবানি করে। যা, তুই যুদ্ধেই যা।’ (একাত্তরের দিনগুলি— জাহানারা ইমাম)
ক. ‘মক্ষিকা’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘রেখো মা, দাসেরে মনে’ কবি এ কথা কেন বলেছেন? ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের সন্তান কোন দিক থেকে ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার কবির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. ‘উদ্দীপকের ভাববস্তু ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতার সামগ্রিক দিক নয়’— মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।
৩. পল্লী গ্রামের পিতৃহীন এক দুরন্ত বালক ছমির শেখ। ফসল বোনার ওস্তাদিতে দশ গ্রামে তার সুনাম আছে। বন্যা, খরা তথা গ্রামের শত বিপদে বৃক্ষের ছায়ার মতো তাকে সবাই কাছে পায়। যাত্রাপালার অভিনয়ে তার জুড়ি মেলা ভার। গ্রামের সবাই তাকে স্নেহ করে; যেমন প্রকৃতি করে গ্রামকে।
ক. চাষির ছেলের ‘গা-খানি’ দেখতে কেমন?
খ. ‘চাষিদের ওই কালো ছেলে সব করেছে জয়’— চরণটির মাধ্যমে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
গ. উদ্দীপক ও ‘রূপাই’ কবিতার আলোকে তোমার দেখা পল্লী গ্রামের বর্ণনা দাও।
ঘ. উদ্দীপকটি ‘রূপাই’ কবিতার খণ্ডাংশ মাত্র যুক্তিসহ বিশ্লেষণ কর।
গ বিভাগ : নির্মিতি অংশ
ক. সারাংশ লেখ : ৫
কোথা থেকে এসেছে আমাদের বাংলা ভাষা? ভাষা কি জন্ম নেয় মানুষের মতো? যেমন বীজ থেকে গাছ জন্মে, তেমনভাবে জন্ম নেয় ভাষা। না, ভাষা মানুষ বা তরুর মতো জন্ম নেয় না। বাংলা ভাষাও মানুষ বা তরুর মতো জন্ম নেয়নি, কোনো কল্পিত স্বর্গ থেকেও আসেনি। এখন আমরা যে বাংলা ভাষা বলি, এক হাজার বছর আগে তা ঠিক এমন ছিল না। সে ভাষায় মানুষ কথা বলত, গান গাইত, কবিতা বানাত। মানুষের মুখে মুখে বদলে যায় ভাষার ধ্বনি। রূপ বদলে যায় শব্দের, বদল ঘটে অর্থের। অনেক দিন কেটে গেলে মনে হয় ভাষাটি একটি নতুন ভাষা হয়ে উঠেছে। আর সে ভাষার বদল ঘটেই জন্ম হয়েছে বাংলা ভাষার।
অথবা, খ. সারমর্ম লেখ :
ভদ্র মোরা শান্ত বড়ো, পোষ-মানা এ প্রাণ,
বোতাম-আঁটা জামার নিচে শান্তিতে শয়ান।
দেখা হলেই মিষ্ট অতি,
মুখের ভাব শিষ্ট অতি,
অলস দেহ ক্লিষ্ট গতি,
গৃহের প্রতি টান
তৈল-ঢালা স্নিগ্ধ তনু নিদ্রা রসে ভরা
মাথায় ছোট, বহরে বড় বাঙালি সন্তান।
ইহার চেয়ে হতাম যদি আরব বেদুইন,
চরণতলে বিশাল মরু দিগন্তে বিলীন।
ছুটছে ঘোড়া উড়ছে বালি,
জীবন স্রোত আকাশে ঢালি
হৃদয় তলে বহ্নি জ্বালি, চলেছি নিশিদিন
বরশা হাতে, ভরসা প্রাণে,
সদাই নিরুদ্দেশ
মরুর ঝড় যেমন বহে
সকল বাধা-হীন।
৫. যেকোনো ১টি ভাব-সম্প্রসারণ লেখ : ৫
ক. জ্ঞানহীন মানুষ পশুর সমান।
অথবা,
খ. ‘এ জগতে হায় সে-ই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি,
রাজার হস্ত করে সমস্ত
কাঙালের ধন চুরি।’
৬. যেকোনো একটি পত্র/দরখাস্তের লেখ : ৫
ক. মনে কর তোমার নাম সাকিব। অষ্টম শ্রেণিতে তোমার রোল নম্বর ৩। হঠাৎ করে তোমার বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে তোমার পড়ালেখা বন্ধ হতে বসেছে। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ তহবিল থেকে সাহায্য চেয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে একখানা আবেদনপত্র লেখ।
অথবা, খ. মনে কর তোমার নাম সুহৃদ। তোমার বন্ধুর নাম জাওয়াদ। সে ময়মনসিংহ থাকে। বৃক্ষ রোপণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে তার কাছে একটি পত্র লেখ।
৭. যে কোনো একটি বিষয়ে প্রবন্ধ রচনা কর। ১৫
ক. স্বদেশপ্রেম খ. অধ্যবসায়
উত্তরমালা : খ বিভাগ-কবিতা
ক. ‘জেতের ফাতা’ অর্থ হলো— জাত বা ধর্মের বৈশিষ্ট্য।
খ. ‘মূলে একজন, সে যে ভিন্ন নয়’ বলতে মনুষ্য ধর্মই যে মূল কথা, জাত-পাতের ভিন্নতা বাহ্যিক ব্যাপার মাত্র, উপর্যুক্ত চরণটি দ্বারা এ কথাই বোঝানো হয়েছে।
‘মানব ধর্ম’ কবিতার কবি লালন শাহ বলেছেন, তিনি জাতকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না। গর্তে গেলে যে জল কূপজল হয়, গঙ্গায় পড়লে সেই জলই আবার গঙ্গাজল হয়। সব কিছুরই মূলে আসলে একই জল। ঠিক তেমনি জাত-পাতের ভিন্নতা বাহ্যিক ব্যাপার, মনুষ্য ধর্মই আসল কথা।
গ. উদ্দীপকে ‘মানব ধর্ম’ কবিতার যে বিশেষ দিকটি ফুটে উঠেছে তা হলো সাম্প্রদায়িক বৈষম্য।
‘মানব ধর্ম’ কবিতায় কবি লালন শাহ মানুষের জাত-পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। মানুষ জাত, ধর্ম ও সম্প্রদায়ভেদে যে ভিন্নতার কথা বলে লালন শাহ তা বিশ্বাস করেন না।
উদ্দীপকের রোহিঙ্গারা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। মিয়ানমার তাদেরকে নিজেদের নাগরিক হিসেবে মেনে নেয়নি। সে দেশের সেনাবাহিনী কর্তৃক তারা নির্মমভাবে নির্যাতিত, নিষ্পেষিত হয়ে নিজেদের ভূখণ্ড ছেড়ে প্রাণভয়ে অন্যত্র পালিয়ে যাচ্ছে। উদ্দীপকের জাত-ধর্মের এই বাহ্যিক পার্থক্যই ‘মানব ধর্ম’ কবিতার উপর্যুক্ত বক্তব্যে ফুটে উঠেছে।
ঘ. ‘মনুষ্য ধর্মই যে মূল কথা’— এই দিকটি উদ্দীপকে নেই বলে এটি ‘মানব ধর্ম’ কবিতার আংশিক ভাব ধারণ করেছে।
‘মানব ধর্ম’ কবিতায় বলা হয়েছে, জাত-ধর্ম-বর্ণ ও সম্প্রদায় নিয়ে মানুষের যে বাহ্যিক পরিচয়, সেটি কোনো বড় কথা নয়। কারণ জন্ম বা মৃত্যুকালে কোনো মানুষই দেহে জপমালা বা তসবি ধারণ করে না। আবার কূপজল বা গঙ্গাজল যা-ই নামকরণ হোক না কেন, সব কিছুর মূলেই প্রকৃতপক্ষে জল। মানুষের বাহ্যিক পরিচয়ের আড়ালে যে চরম সত্য তা হলো মনুষ্য ধর্ম। জাত-ধর্মের পার্থক্য মানুষের বাহ্যিক রূপ বা স্বীকৃতিমাত্র।
উদ্দীপকের মিয়ানমারের সেনাবাহিনী জাত-ধর্মের বাহ্যিক পার্থক্য নিরূপণ করে নিজ বাসভূমি থেকে মুসলিম রোহিঙ্গাদের নির্যাতন ও নিষ্পেষণ করে তাড়িয়ে দিচ্ছে, সেখানে মানব ধর্ম মূল কথা না হয়ে, হয়েছে ভূলুণ্ঠিত।
উপর্যুক্ত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাই সিদ্ধান্তে পৌঁছা যায় যে, ‘মানব ধর্ম’ কবিতার ‘মনুষ্য ধর্মের যে সমতার কথা বলা হয়েছে, উদ্দীপকে তা নেই বলে উদ্দীপকটি ‘মানব ধর্ম’ কবিতার আংশিক ভাব ধারণ করেছে মাত্র।