বৃহস্পতিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা : বাংলা

শফিকুল ইসলাম, শিক্ষক

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা : বাংলা

অনুচ্ছেদটি পড়ে ১ ও ২ নম্বর ক্রমিকের উত্তর দাও :

ছেলেটির বাবার বাড়ি বিক্রমপুরের রাঢ়িখাল গ্রামে। তবে তার জন্ম ময়মনসিংহে। ১৮৫৮ সালের ৩০ নভেম্বর। ওর পড়াশোনায় হাতেখড়ি হয়েছিল বাড়িতেই। তারপর ময়মনসিংহে স্কুল শিক্ষার ধাপ শেষ করে সে ভর্তি হয় কলকাতায়। সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে ১৮৭৪ সালে সে কৃতিত্বের সঙ্গে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করে। কৃতিত্বের ধারায় সে ১৮৭৮ সালে এফএ পাস করে। তারপর ১৮৮০ সালে বিজ্ঞান শাখায় বিএস পাস করে বিলেতে যায় ডাক্তারি পড়তে। সেই ছেলেটিই বড় হয়ে প্রথম বাঙালি বৈজ্ঞানিক হিসেবে জগৎ জাড়া খ্যাতি অর্জন করে। তোমরা অনেকেই হয়তো বুঝতে পেরেছ কে তিনি? হ্যাঁ, সেদিনকার সেই ভাবুক ছেলেটিই পরবর্তীকালের বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু। জগদীশচন্দ্র এক বছর ডাক্তারি পড়ার পর ১৮৮১ সালে ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। এখান থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন তিনি। ১৮৮৫ সালে দেশে ফিরে এসে কলকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক পদে যোগ দেন। তখন দেশ ছিল পরাধীন। এ সময় একই পদে একজন ইংরেজি অধ্যাপক যে বেতন পেতেন ভারতীয়রা পেতেন তার তিন ভাগের দুই ভাগ। জগদীশচন্দ্র অস্থায়ীভাবে চাকরি করছিলেন বলে তাঁর বেতন আরও এক ভাগ কেটে নেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে তিনি দীর্ঘ তিন বছর বেতন না নিয়ে কর্তব্য পালন করেন। শেষ পর্যন্ত ইংরেজ সরকার তাঁকে স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। সব বকেয়া পরিশোধ করে চাকরিতে স্থায়ী করে তাঁকে। তখন থেকেই তিনি বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু হয়ে ওঠেন।

১. প্রদত্ত শব্দগুলোর অর্থ লেখ। (৭টির মধ্যে ৫টি)     ১–৫=৫

ক) জগৎ   খ) খ্যাতি

গ) ভাবুক     ঘ) হাতেখড়ি

ঙ) প্রবেশিকা চ) পরাধীন ছ) কর্তব্য

২. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :                       ২+৪+৪=১০

ক) জগদীশচন্দ্র বসুর জন্মস্থান কোথায়? তিনি বড় হয়ে কী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন? ২

খ) জগদীশচন্দ্র বসুর স্কুলজীবন থেকে শুরু করে বিলেত যাত্রা পর্যন্ত লেখাপড়ার কাহিনী চারটি বাক্যে লেখ। ৪

গ) জগদীশচন্দ্র বসুর জীবনী থেকে আমরা কী শিখতে পারি? চারটি বাক্যে লেখ।       ৪

প্রদত্ত অনুচ্ছেদটি পড়ে (পাঠ্যবই বহির্ভূত) ৩ ও ৪ নম্বর ক্রমিকের উত্তর লেখ।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান। দেশের এই মহান সন্তান ১৯৪১ সালের ২৯ নভেম্বর ঢাকার আগা সাদেক রোডের পৈতৃক বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর আদি বাড়ি বর্তমান নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার রামনগর (বর্তমান মতিউর নগর) গ্রামে। মতিউর রহমানের প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু হয় ঢাকার কলেজিয়েট স্কুলে। এরপর তিনি ভর্তি হন সারগোদার বিমানবাহিনী পাবলিক স্কুলে। এখান থেকেই তিনি ডিস্টিংশনসহ প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৬১ সালের ১৫ আগস্ট তারিখে তিনি পাকিস্তান বিমানবাহিনী একাডেমি, রিসালপুরে ফ্লাইট ক্যাডেট হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৩ সালের ২৩ জুন তারিখে তিনি পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি পাক-ভারত যুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখেন। তিনি ফ্লাইং ইনস্ট্রাকটরস স্কুল থেকে ট্রেনিং কোর্স সম্পন্ন করে রিসালপুর একাডেমিতে ‘কোয়ালিফাইড ফ্লাইং ইনস্ট্রাকটর’ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ১৯৬৭ সালের ৪ অক্টোবর তাঁকে ‘সিতারায়ে হার্ব’ খেতাবে ভূষিত করা হয়। ১৯৬৭ সালে মিগ কনভারশন কোর্সের জন্য তিনি সারগোদায় যান। সেখানে ২১ জুলাই একটি মিগ ১৯ বিমান চালনার সময় তাতে আগুন ধরে যায়। এ সময় প্রায় দুই হাজার ফুট উপরে থাকা অবস্থায় প্যারাসুট নিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তিনি ভূমিতে অবতরণ করেন। পাকিস্তানি সফররত ইরানের রানি ফারাহ দিবার সম্মানে যে বিমান মহড়া অনুষ্ঠিত হয়, তাতে তিনিই একমাত্র বাঙালি পাইলট ছিলেন। এরপর তিন করাচির বিমান ঘাঁটিতে ফ্লাইং ইনস্ট্রাকটর হিসেবে বদলি হয়ে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে উন্নীত হন। ২৫শে মার্চ রাতে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালালে মতিউর সিদ্ধান্ত নেন, তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেবেন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি ২০ আগস্ট করাচির মাসরুর বিমান ঘাঁটি থেকে টি-৩৩ জঙ্গিবিমানটি হাইজ্যাক করে অন্তরীক্ষে পাড়ি জমান। বিমানটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য প্রশিক্ষক মতিউর ও তরুণ পাইলট অফিসার মিনহাজ রশীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। মতিউরের স্বপ্নপূরণের আগেই ভারতীয় সীমান্ত থেকে মাত্র ৩৫ মাইল দূরে বিমানটি বিধ্বস্ত হলে তিনি শাহাদাত.বরণ করেন। অনন্য দেশপ্রেম ও চরম আত্মদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সামরিক খেতাব ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ দিয়ে তাঁকে সম্মানিত করা হয়। তাঁর এই আত্মত্যাগের কথা বাঙালি জাতি চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

৩। নিম্নে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া আছে। উপযুক্ত শব্দটি দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ করে উত্তর পত্রে লেখ :   ১–৫=৫

শব্দ—শব্দার্থ

ভূমিতে—মাটিতে।

বিধ্বস্ত—ধ্বংস।

নক্ষত্র—তারকা।

অন্তরীক্ষে—আকাশে প্রশিক্ষণ।

ধস্তাধস্তি—হাতাহাতি।

ক) স্বাধীনতার ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক উজ্জ্বল ... ।

খ) বৈমানিক বিমানটি নিয়ে ... অবতরণ করেন।

গ) অসীম বিশ্বকে জানার জন্য মানুষ ছুটে চলেছে জলে, স্থলে ...।

ঘ) মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মিলিত আক্রমণে পাকিস্তানিদের সাতটি দিগন্ত বোট ... হয়।

ঙ) জসীম শহর থেকে আসা ছেলেদের কাছ থেকে রাইফেল চালানোর ... নেন।

৪। নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ :                                              ৫–৩=১৫

ক) মতিউর রহমান কে ছিলেন? তাঁর শিক্ষাজীবন সম্পর্কে চারটি বাক্য লেখ।            ১+৪=৫

খ) মতিউর রহমান কত সালে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন পান? তাঁর সাফল্য লাভের কথা চারটি বাক্যে লেখ। ১+৪=৫

গ) ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ। ৫

৫। নিচের বাক্যগুলোর শব্দে ক্রিয়াপদের চলিত রূপ উত্তরপত্রে লেখো (যেকোনো পাঁচটি)           ১–৫=৫

ক) জলপ্রপাত দেখার সৌভাগ্য একবার আমার হইয়াছিল। খ) তখন বংশ-মর্যাদার কথা বলিবে না। গ) জানখাঁরটেকে একটি বৌদ্ধ বিহারের সন্ধান পাওয়া গিয়াছে। ঘ) সে তার কথা বলার মধ্যে নানা রকম খুঁত ধরিতেছে। ঙ) রাজা দুহাতে জড়াইয়া ধরেন রাখাল বন্ধুকে।

চ) পরদিন আমরা দেখিতে গেলাম কুমোর পাড়া।

ছ) বৃষ্টির তোড়ে ডুবিয়া যায় মাঠঘাট।

৬। অনুচ্ছেদটি পড়ে (কে, কী কোথায়, কিভাবে, কেন, কখন) শব্দগুলো দিয়ে ৫টি প্রশ্ন তৈরি করে উত্তরপত্রে লেখ :     ১–৫=৫

তখন কেবল সূর্য উঠছে, পূর্ব দিগন্তে লাল সূর্য। এ রকম একটা মুহূর্তে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকাকে এভারেস্টের শীর্ষে উড়িয়ে দিলেন এক তরুণ। নাম তাঁর মুসা ইব্রাহীম। সেই প্রথম কোনো বাংলাদেশির এভারেস্ট বিজয়। দিনটা ছিল ২৩ মে, ২০১০ সাল। সময় ভোর ৫টা ১৬ মিনিট। ছেলেবেলা থেকেই মুসার স্বপ্ন ছিল দুর্লঙ্ঘনীয় ওই পাহাড়চূড়ায় ওঠার। মুসার বয়স তখন মাত্র ছয় বছর। মা-বাবার সঙ্গে পঞ্চগড় থাকেন। একদিন বাবা তাঁকে উঁচু এক জায়গায় নিয়ে গেলেন, যেখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার কিছুটা অংশ দেখা যায়।

৭। নিচের যুক্তবর্ণগুলো ভেঙে দেখাও এবং প্রতিটি যুক্তবর্ণ দিয়ে তৈরি শব্দ দ্বারা একটি করে বাক্য রচনা কর।                                               ২–৫=১০

ক) ন্ত খ) প্র গ) ষ্ট ঘ) ট্ট ঙ) ক্ষ চ) ন্দ্র ছ) ষ্ণ

৮। উপযুক্ত স্থানে বিরাম চিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদটি তোমার উত্তরপত্রে লেখো : ৫

দুইজনের জন্মদিন নিয়ে ওদের মা-বাবার এক একটি গল্প আছে ওদের মা রাহেলা বলে যেদিন রুমার জন্ম হয় সেদিন বাড়ির উঠানের শিউলি গাছটা ফুলে ফুলে ভরে ছিল এত ফুল নাকি আর কখনো দেখেনি রাহেলা বানু

৯। এককথায় প্রকাশ কর : ১–৫=৫

ক) কোথাও উন্নত কোথাও অবনত

খ) জানার ইচ্ছা

গ) এক যুগের পর আরেক যুগ

ঘ) উপায় নেই যার

ঙ) যা কষ্টে ভেদ করা যায়

চ) শক্তি আছে যার

ছ) বিচার নেই এমন

১০। প্রদত্ত শব্দগুলোর সমার্থক শব্দ লেখো : (৭টি থেকে যেকোনো ৫টি)                 ১–৫=৫

ক) অন্ধকার খ) আকাশ গ) সাগর ঘ) শিক্ষক ঙ) শৈশব চ) বিশ্ব ছ) পানি

১১। কবিতাংশটুকু পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখো:                      ২+৫+৩=১০

শহরের পাতি কাক ডাকে ঝাঁকে ঝাঁকে

ঘুম দেয়া মুশকিল হঁর্নের হাঁকে।

সিডি চলে, টিভি চলে, বাজে টেলিফোন

দরজায় বেল বাজে, কান পেতে শোন।

গলিপথে ফেরিঅলা হাঁকে আর হাঁটে

ছোটদের হইচই ইশকুল মাঠে।

পল্লির সেই সুরে ভরে যায় মন

শহুরে জীবন জ্বালা-শব্দদূষণ।

ক) কবিতাংশটুকু কোন কবিতার অংশ? কবিতাটির কবির নাম কী? ২

খ) কবিতাংশটির মূলভাব লেখো। ৫

গ) শব্দদূষণ রোধ করার তিনটি উপায় লেখো। ৩

১২। মনে কর, তোমার নাম তানিম/তানিয়া। তোমার পিতার নাম আবদুর রহমান, মাতার নাম সালেহা বেগম। তুমি রশিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র/ছাত্রী। জাতীয় শোকদিবস উপলক্ষে তুমি চিত্রাঙ্কন/রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য নিচের ফরমটি পূরণ কর।       ৫

প্রতিযোগিতা ফরম

১। প্রার্থীর নাম : ... ... ... ... ....

২। (ক) পিতার নাম : ... ... ... ...

(খ) মাতার নাম : ... ... ... ... ...

৩। বিদ্যালয়ের নাম : ... ... ... ...

৪। শ্রেণি : ... ... ... ... ... ... ...

৫। যে বিষয়ে প্রতিযোগিতা করতে ইচ্ছুক : .... .... ... ....

 

প্রতিযোগীর স্বাক্ষর : ..           [চলবে]

 

সর্বশেষ খবর