বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

আগে ঈদে সালামি পেতাম এখন দিই

নূরে আলম সিদ্দিকী, প্রবীণ রাজনীতিক

আগে ঈদে সালামি পেতাম এখন দিই

ঈদ প্রত্যেক মুসলমানের কাছেই সবচেয়ে আনন্দে উচ্ছ্বাসে ভরা একটা দিন। যে কোনো বয়সে, যে কোনো মানুষের কাছে এটা মহামিলনের দিন। শিশু-অর্ধ বয়স এমনকি জীবনসায়াহ্নে এসেও প্রতিটা মুহূর্তে অনুভব করেছি, ঈদের ভিন্ন আমেজ। পরিপূর্ণ রোজা রেখে ঈদ উদযাপনটা একটা স্নিগ্ধতা, একটা উচ্ছ্বাস, সিয়াম সাধনার একটা পরম প্রশান্তির পরশ লাগিয়ে দেয় ঈদের নামাজ পড়তে আসা থেকে সারা দিনটায়। এখন আমার পরিবারের বিস্তৃতি বেড়েছে, তিন প্রজন্মের স্ত্রী-পুত্র তো বটেই; দৌহিত্র-দৌহিত্রীর সানি্নধ্য আগের ঈদের চেয়ে বৈচিত্রের মাত্রা আরও বাড়িয়েছে। শৈশবের ঈদ ছিল আরও ভিন্ন মাত্রার। সৌভাগ্যক্রমে একটা বর্ণাঢ্য পরিবারে আমার জন্ম হওয়ায় বাবার কাছ থেকে তো বটেই, সব নিকটাত্দীয়ের কাছ থেকে নানা ধরনের উপহার- জামাকাপড়, জুতা, খেলনা পেতাম। এখন ভাবী, ভেবে রোমাঞ্চিত হই, রাতে ঘুম থেকে উঠে ঈদের উপহারসামগ্রী নেড়েচেড়ে দেখতে ভীষণ ভালো লাগত। বাবা-মা কোনো দিনই এ ব্যাপারে বাধা তো দেনইনি, মনে হয় তখন তারা ভীষণ তৃপ্তি পেতেন এই শিশুসুলভ উচ্ছ্বাস অবলকন করে। ছোটবেলার ঈদে আরেকটা বৈশিষ্ট ছিল আমাদের বাসায় এলে অথবা আমরা কোনো আত্দীয়ের বাসায় গেলে আমাদের বয়স্কদের সালাম করতে হতো। এটা পারিবারিক ঐতিহ্য হলেও এর একটা বাড়তি আনন্দ ছিল। আমি ও আমার বড় বোন সেই টাকা জমিয়ে রেখে দিতাম অন্যান্য উপভোগের জিনিস কেনার জন্য। এখন এ রেওয়াজটা উঠে গেলেও ঈদের দিনে আমাদের বয়কনিষ্ঠরা সালাম করলে আমরা ঐতিহ্যের আঙ্গিকে এখনো সালামি প্রদান করি। স্বাভাবিকভাবেই ছোটরা এতে ভীষণ খুশি হয়। রোজা রেখে ঈদ করা সত্যি অভূতপূর্ব আনন্দ ও অনুভবের বিষয়। আমার অনেক ঈদ কারাগারে কেটেছে। একটি ঈদ মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার জীবনে এসেছে বেদনাহত চিত্তে।

 

সর্বশেষ খবর