৩১ জুলাই, ২০১৮ ১৭:১৫

রাজশাহী সিটি নির্বাচন বাতিল চেয়ে বুলবুলের লিখিত অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী


রাজশাহী সিটি নির্বাচন বাতিল চেয়ে বুলবুলের লিখিত অভিযোগ

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সোমবার নগরীর বিনোদপুর ইসলামীয়া কলেজ ভোট কেন্দ্রে বৃষ্টিতে ভিজে ভোট কারচুপির প্রতিবাদ করেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে বিএনপির। মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপি প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এ অভিযোগ দাখিল করেন। লিখিত অভিযোগে ভোটে অনিয়ম, কারচুপি এবং প্রকাশ্যে ভোট ডাকাতির কথা উল্লেখ করে নির্বাচন বাতিল করে পুণরায় ভোট গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

রিটার্নিং অফিসারের কাছে দাখিল করা অভিযোগে বুলবুল উল্লেখ করেছেন, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন এবং পুলিশ বিভাগ নির্বাচনের তফসিলের পর থেকে প্রকাশ্যে অনিয়ম, বেআইনি কার্যকলাপ এবং পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে, যা লিখিতভাবে, মৌখিকভাবে ও মিডিয়ার মাধ্যমে জানানো হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৫০টি অভিযোগ জানানো হয়েছে, কিন্তু রিটার্নিং অফিসার কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পূর্ণ সমর্থন করেছে, সরকার দলীয় প্রার্থীর পছন্দমত বেছে বেছে কট্টর আওয়ামীপন্থি প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ প্রশাসন, সরকার দলীয় কর্মী-সমর্থক যৌথভাবে বেআইনিভাবে ৩৭টি কেন্দ্রে ধানের শীষ প্রতীকের পোলিং এজেন্টদের প্রবেশ করতে দেয়নি। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ বিভাগ এবং আওয়ামী লীগ যৌথভাবে মোট ৭৭টি কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বলপূর্বক বের করে দেয়। প্রিজাইডিং অফিসাররা পোলিং এজেন্টদের ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপারের হিসাব দেয়নি এবং তাদের কাছে থাকা ফর্মে বিএনপির এজেন্টদের স্বাক্ষর নেয়নি। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশেনের ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে প্রায় ২০টি ওয়ার্ডের প্রত্যেকটি কেন্দ্রে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভোট দিতে না দিয়ে তাদেরকে কেন্দ্র থেকে লাঞ্ছিত করে বের করে দেওয়া হয় এবং কোথাও কোথাও ৩টার পরেই ভোট গ্রহণ বন্ধ করে সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। 

অভিযোগে আরও বলা হয়, প্রায় ১০-১১টি কেন্দ্রে আনুমানিক সকাল ১০টায় ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং জালিয়াতির মাধ্যমে ওইসব ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকের সীল মেরে ব্যালট বাক্সে ঢুকানো হয়। পরবর্তীতে ভোটাররা মেয়র পদের ব্যালট ছাড়াই শুধুমাত্র কাউন্সিলর পদের ব্যালটে ভোট দিয়ে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে আসে, বেলা ১১টায় প্রায় ৩৫টি, ১২টায় মোট ৪৮টি এবং দুপুর ১টার মধ্যে ১৩৮টি কেন্দ্রে আমাদের পোলিং এজেন্টদের বলপূর্বক তাড়িয়ে দিয়ে প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ বিভাগ এবং আওয়ামী লীগ যৌথভাবে ৮২টি কেন্দ্র সম্পূর্ণভাবে দখল করে নেয় এবং সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নজিরবিহিন জালিয়াতি শুরু করে, বিভিন্ন কেন্দ্রে বিএনপির প্রায় ৫০ জন কর্মীকে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের হাতে লাঞ্ছনা ও মারধরের শিকার হতে হয়। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার আগে আংশিক ভর্তি ব্যালট বাক্স প্রিজাইডিং অফিসার পুলিশের সহযোগিতায় পোলিং এজেন্টদের বাধা উপেক্ষা করে বুথ থেকে গোপনে সেগুলো দুরে সরিয়ে রাখে এবং পরবর্তীতে সেগুলো জাল ব্যালট পেপার দিয়ে ভর্তি করা হয়, ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর বিকেল ৪টায় প্রিজাইডিং অফিসার এবং পুলিশ বিএনপির সব পোলিং এজেন্টকে জোলপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স নিজ হেফাজতে নিয়ে নেয় এবং ব্যপকভাবে জাল ভোট প্রদান করে। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী ফলাফল সীটে সব প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের স্বাক্ষর নেওয়ার বিধান থাকলেও তা অমান্য করে বিএনপির সব পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে রেজাল্ট সীট তৈরি করা হয়। এসব অভিযোগের কথা উল্লেখ করে বুলবুল নির্বাচন বাতিলের দাবি জানান।

বিডি-প্রতিদিন/৩১ জুলাই, ২০১৮/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর