বুধবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা
ইলেকট্রনিক মিডিয়া মার্কেটিং অ্যাসোসিয়েশনের মানববন্ধন

বিদেশি টিভিতে দেশি বিজ্ঞাপন বন্ধের দাবি

শোবিজ প্রতিবেদক

বিদেশি টিভিতে দেশি বিজ্ঞাপন বন্ধের দাবি

মানববন্ধনের একটি মুহূর্ত

বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলে দেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধের দাবি জানিয়েছে ইলেকট্রনিক মিডিয়া মার্কেটিং অ্যাসোসিয়েশন [ইমা]। গতকাল কারওয়ান বাজারে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচির মাধ্যমে এ দাবি জানান সংগঠনের নেতারা। মানববন্ধনে অংশ নেন সব বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলের মার্কেটিং বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মীরা। এ ছাড়া সংহতি প্রকাশ করেছেন মিডিয়া অঙ্গনের শিল্পী, কলাকুশলী, নাট্যকার, পরিচালক, প্রযোজক এবং বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্টজনরা। এ ছাড়া এতে যোগ দেন সব টিভি স্টেশনের সাংবাদিকও।

মানববন্ধনে ইমার সভাপতি রঞ্জন কুমার দত্ত সরকারের কাছে ১১টি দাবি জানান। এগুলো হলো- দেশের টাকায় বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করতে হবে, তথ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী বাংলাদেশি চ্যানেলগুলো ১ থেকে ২৫-এর মধ্যে প্রচার করতে হবে, বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের নামে মুদ্রাপাচার বন্ধ করতে হবে, বিদেশি চ্যানেল বন্ধ করে বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষা করতে হবে, বাংলাদেশে বিদেশি চ্যানেলের জন্য বিকল্প ফিড প্রচার করে বিজ্ঞাপন প্রচারের নামে প্রতারণা বন্ধ করতে হবে, বিদেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন দেশেই যেন তৈরি হয় সে জন্য প্রয়োজনীয় আইন চাই, বিদেশি বিজ্ঞাপন ডাবিং করে চালানো যাবে না এবং বাংলাদেশের চ্যানেল  ভারতে দেখাতে তথ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সক্রিয় ভূমিকা দেখতে চাই।

মানববন্ধন প্রসঙ্গে রঞ্জন কুমার দত্ত বলেন, ‘আমরা যখন সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, তখন নানা প্রতিক‚লতা তৈরি হচ্ছে। এসব প্রতিক‚লতা দূর না হলে বাংলাদেশের টিভি চ্যানেল বাঁচবে না। তাই আমরা চুপ থাকতে পারি না। আমাদের প্রাণের ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হবে। তাই আমাদের এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। আমরা আনন্দিত এই ভেবে যে, এই কর্মসূচিতে প্রায় সব অঙ্গনের বিশিষ্টজন যোগ দিয়েছেন। এতে আমাদের মনোবল বেড়েছে। দাবি আদায়ের প্রতি আমরা আরও সোচ্চার হব।’    

মানববন্ধনে ইমার সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, ‘আমাদের দাবি, আমাদের সবার দাবি, এ বিদেশি চ্যানেলের আগ্রাসন থেকে আমার দেশের সংস্কৃতিকে রক্ষা করতে হবে। আমরা সেই পথে এগিয়ে যাব।’

এ সময় ইমার আরেক সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম শফি জানান, শিল্পী, কলাকুশলী এমনকি সাধারণ মানুষের একটাই দাবি, দেশের সংস্কৃতিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে, বাংলাদেশকে অপসংস্কৃতির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে আমরা, বাংলাদেশের মিডিয়া ধুঁকে ধুঁকে মরছি সেখানে বাংলাদেশের পৃষ্ঠপোষকরা বিদেশি চ্যানেলকে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। আমরা এ লজ্জা থেকে মুক্তি চাই। আমাদের সংস্কৃতি আজ ভূলুণ্ঠিত। একে রক্ষা করার জন্য আমরা সবাই আজ একতাবদ্ধ।’

মানববন্ধনের প্রতি সংহতি জানাতে আসা লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘দাবি যৌক্তিক। তাই সংহতি প্রকাশ করতে এসেছি। আমাদের সংস্কৃতির প্রতি এক ধরনের কালোছায়া ধেয়ে আসছে। এই অপছায়াকে রুখতে হবে।’

অভিনেতা মামুনুর রশীদ বলেন, ‘এসব কর্মসূচি আরও আগে হওয়া উচিত ছিল। তবে দেরিতে হলেও আমরা সবাই সোচ্চার হয়েছি, এটা ইতিবাচক।’

অভিনেতা ড. ইনামুল হক বলেন, ‘অনেক কষ্টে আমাদের ইলেকট্রনিক মাধ্যম একটি স্থির অবস্থানের দিকে এসেছে। এখন এ অবস্থানকে অস্থির করা হচ্ছে। এটা অন্যায়। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ জানানো প্রতিটি সচেতন মানুষের দায়িত্ব। আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে এসেছি।’

সর্বশেষ খবর