বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ ০০:০০ টা

সংসার ভাঙা-গড়ার খেলায় রুমি

শামছুল হক রাসেল

সংসার ভাঙা-গড়ার খেলায় রুমি

প্রথম স্ত্রী অনন্যা এবং সন্তান আরিয়ানের সঙ্গে রুমি

এ যেন রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের মতো—‘শেষ হইয়াও হইলো না শেষ...’। বলা হচ্ছে রুমি-কামরুন্নেসা সংসারের কথা। অনন্যার সঙ্গে অনেক চড়াই-উত্রাই পেরিয়ে দাঁড়িয়েছিল রুমির নতুন সংসার। এখানেও সুখ-শান্তির বাতাবরণ বেশিদিন বইল না। অশান্তির দামামা বেজে উঠল। তাই দ্বিতীয় বিয়েও টিকল না আরফিন রুমির। গত ৩১ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্ত্রী কামরুন্নেসাকে ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছেন রুমি। মানসিক নির্যাতন, আগের স্বামীর সঙ্গে মেলামেশা ও খারাপ আচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে কামরুন্নেসাকে ডিভোর্স দিয়েছেন বলে জানা গেছে। রুমির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই তার কাজে বাধা দেওয়া শুরু করে কামরুন্নেসা। এমনকি শুটিং পর্যন্ত ঠিকভাবে করতে দিত না। তাছাড়া পরিবারের সঙ্গেও নাকি কামরুন্নেসা বাজে ব্যবহার করত। ভেবেছিলেন সময়ের সঙ্গে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু তা হয়নি।

বুধবার দিবাগত রাত থেকে ছড়িয়ে পড়ে বিচ্ছেদের খবরটি। একে ঘিরে সময়ের সঙ্গে বেগবান হচ্ছে নানা মুখরোচক গুঞ্জনও। এসব বিষয়ে জানতে গতকাল বেশ কয়েকবার রুমিকে ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি। তাই যোগাযোগ করা হয় রুমির মা নাসিমা আক্তারের সঙ্গে। তিনি প্রথমেই বললেন, ‘বাধ্য হয়েই ডিভোর্স লেটার পাঠিয়েছে রুমি। একটা পাঠিয়েছে ডাকযোগে, আরেক কপি সরাসরি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে কামরুন্নেসার বাবার হাতে। রুমির সঙ্গে বিয়ের আগে আমাদের জানানো হয়েছিল আগের স্বামীর সঙ্গে কামরুন্নেসার ডিভোর্স হয়ে গেছে। যা মিথ্যে। আমার ছেলের সঙ্গে বিয়ের পর কাজী আগের ঘরের তালাকনামা দিতে বললেন। তখন কামরুন্নেসা জানায়, তালাকনামা আমেরিকায় রয়েছে। এটা নিয়ে আমরাও খুব একটা মাথা ঘামাইনি। প্রকৃতপক্ষে তালাক না দিয়ে আগের স্বামী সোহাগ আলীর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে কামরুন্নেসা।’

রুমির মা আরও বলেন, ‘বেশ কয়েকবার সোহাগ আলীর (কামরুন্নেসার সাবেক স্বামী) সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার সময় কামরুন্নেসাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেছি আমরা। আর এ নিয়ে সংসারে শুরু হয় তিক্ততা। এমনকি কামরুনের পরিবারকেও এসব বিষয় জানানো হয়েছিল। এসব বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকবার আমাদের বাসায় বৈঠক হয়েছে কামরুনের বাবার সঙ্গে। তিনিও আশ্বস্ত করেছিলেন এসব সমস্যা আর হবে না। কিন্তু তা আর হলো কই? যাই হোক কি আর করা।’ বাবাকে পাঠালেন, কিন্তু কামরুন্নেসাকে ডিভোর্স লেটার পাঠালেন না কেন— এমনটা জানতে চাইলে রুমির মা বলেন, ‘ডিভোর্সের ব্যাপারটা প্রথম উচ্চারিত হয় কামরুনের মুখেই। সম্প্রতি সে আমেরিকা থেকে ফোন দেয় রুমিকে। বলা হয়, রুমি যেন তার শপিংয়ের জন্য দুই লাখ টাকা প্রস্তুত রাখে। দেশে ফিরেই নাকি শপিং করবে কামরুন্নেসা। কিন্তু আমার ছেলে সাফ জানিয়ে দেয় আগে সোহাগ আলীকে ছাড়, কোনো টাকাই দেওয়া হবে না। রুমি টাকা দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে কামরুন্নেসা সোজাসাপটা জানিয়ে দেয়, তাহলে যেন তাকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। যেহেতু আগামীকাল [আজ] দেশে ফেরার কথা রয়েছে তার, তাই কামরুন্নেসার বাবার কাছেই লেটার পাঠিয়েছি।’

শুনলাম জিডিও নাকি করেছেন, এটা কেন? ‘অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেই এ পদক্ষেপ নিয়েছি। ডিভোর্স লেটারের একটা কপি থানায় দিয়ে এসেছি। ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার জন্য সাধারণ ডায়রিও করে রেখেছি।’

রুমির প্রথম স্ত্রী অনন্যার কাছে বিষয়টি তুলে ধরলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কিছুই বলার নেই। রুমি এখন আমার জীবনে অতীত। এখন যা ঘটছে এটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সুতরাং রুমিকে নিয়ে প্রশ্ন না করলেই খুশি হব।’ অন্যদিকে, ডিভোর্সের খবরটি নিয়ে ফেসবুকে ঝড় উঠেছে। কেউ পক্ষ নিচ্ছেন রুমির, কেউ বা আবার বিপক্ষে। আঙ্গুল তোলা হচ্ছে রুমির অতীত কর্মকাণ্ডের দিকেও। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নানা মন্তব্যে তীর্যকবিদ্ধ হচ্ছে ডিভোর্সের ঘটনা।  

এদিকে, কামরুন্নেসা উড়োজাহাজে থাকায় তার মন্তব্য নেওয়া যায়নি। আজ তার মন্তব্য পাওয়া যাবে।

সর্বশেষ খবর