সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা
৪১ ছবির মুক্তি অনিশ্চিত

বকেয়া ৬ কোটি টাকা : বঞ্চিত এফডিসি

আলাউদ্দীন মাজিদ

বকেয়া ৬ কোটি টাকা : বঞ্চিত এফডিসি

ছবি নির্মাণ হয়, কিন্তু মুক্তি পায় না। ক্ষতিগ্রস্ত হয় এফডিসি। এ অবস্থা দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ১৯৯১ থেকে ২০০৯ সাল নির্মিত ৪১টি ছবি সেন্সর ছাড়পত্র পাওয়া সত্ত্বেও নানা কারণে মুক্তি পায়নি। এসব ছবি মুক্তি দিতে নির্মাতাদেরও কোনো আগ্রহ নেই। এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এফডিসি। সংস্থাটি এসব ছবি বাবদ বকেয়া হিসেবে পাবে ৫ কোটি ৫৩ লাখ ৭১ হাজার ৪৭০ টাকা। এ ছাড়া উল্লিখিত সময়ের আগেও ছবি বাবদ প্রচুর বকেয়া টাকা অনাদায়ী রয়ে গেছে এফডিসির।

এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এফডিসিতে বকেয়ায় কাজ করার সুযোগে অনেক নির্মাতা সংস্থাটিকে বিপাকে ফেলে। যে ৪১টি ছবি থেকে প্রায় ৬ কোটি টাকা বকেয়া পাওনা রয়েছে তা পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে অনেক নির্মাতাকে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে আবার সার্ভিজ চার্জ মওকুফের অনুরোধ জানাচ্ছেন। সার্ভিস চার্জ মওকুফ করলে হয়তো কিছু বকেয়া আদায় হবে। শিগগিরই বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করা হবে এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বেশ কজন নির্মাতা বলেন, ছবিগুলো অনেক আগের। মুক্তি দিতে বিলম্ব হওয়ায় এগুলো এখন দর্শক কতটা দেখবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই আর অর্থ নষ্ট করা সম্ভব নয়। এফডিসি যদি সার্ভিস চার্জ মওকুফ করে তাহলে সবার জন্যই ভালো হয়।

এফডিসি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১৫ এপ্রিল বকেয়া আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট নির্মাতাদের বরাবরে নোটিস পাঠানো হয়। কিন্তু এফডিসিতে এন্ট্রি করা ঠিকানায় বেশির ভাগ নির্মাতাকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এতে এই টাকা আদায় নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

এফডিসিতে বকেয়া রাখা ৪১টি ছবি হলো— নূরজাহানের প্রেম [বকেয়া ১০,৮৪,৯৪৫ টাকা], সজল প্রিয়া [বকেয়া ১২,১৫,১৯৮ টাকা], সাদ্দাম বাদশা [বকেয়া ৪,৩৮,২৬৮ টাকা], যেমন কর্ম তেমন ফল [বকেয়া ৩,৩৩,৮৩১ টাকা], দুই ওস্তাদ [বকেয়া ২,০৪,৪৭১ টাকা], প্রেমের প্রতিশোধ [বকেয়া ২৩,৩৮,৬৩০ টাকা], রশিক নাইয়া [বকেয়া ৯,৮৭,৮৫৯ টাকা], কেন আমি সন্ত্রাসী [বকেয়া ১৯,৮২,৪৫২ টাকা], কাফেলা [বকেয়া ১৫,৮১,৫৫০ টাকা], মা আমার দেশ [বকেয়া ১৫,৪২,১২৬ টাকা], ডাকু নাদিয়া [বকেয়া ১১,০৭,৪০২ টাকা], ছলনাময়ী নারী [বকেয়া ১৫,৮৮,৮৯১ টাকা], মন যারে চায় [বকেয়া ৮,৭৪,০৯০ টাকা], রাতের রানী মাস্তানের রাজা [বকেয়া ১২,১৫,২৬৮ টাকা], গণ্ডগোল [বকেয়া ২০,৪১,৭০৪ টাকা], এ লড়াই বাঁচার লড়াই [বকেয়া ২০,০৫,৮৮৪ টাকা],

লড়াকু সন্তান [বকেয়া ১৮,৬৬,৯১৮ টাকা], বিদ্রোহী নারী [বকেয়া ২,১৮,৭৭২ টাকা], জাঁদরেল পুলিশ [বকেয়া ১৫,১৪,৩৩২ টাকা], ধ্বংসলীলা [বকেয়া ১৬,৩৪,৬০৬ টাকা], আখেরি আঘাত [বকেয়া ১৫,১৯,৯৫৪ টাকা], পাচারকারী [বকেয়া ১৪,৩৪,০৮৭], অন্ধ গলির মাস্তান [বকেয়া ১১,৭৫,০৫৩ টাকা], দুর্ধর্ষ রাজা [বকেয়া ৭,৮৮,২৪৭ টাকা], ভালোবাসার মানুষ [বকেয়া ১৪,০৪,০৬৮ টাকা], গর্জে ওঠো জনতা [বকেয়া ১৫,৮৫,৭০৪ টাকা], মগজ ধোলাই [বকেয়া ১৪,১৪,৩৯১ টাকা], আদরের বউ [বকেয়া ১৫,৭৪,৪৫৮ টাকা], বাংলার দুশমন [বকেয়া ১৬,০৬,৩২৬ টাকা], আদরের ভাই [বকেয়া ১৪,৮৯,৮৩৮ টাকা], ফাঁসির আদেশ [বকেয়া ১৯,৪৯,৩৪২ টাকা], কালীগঙ্গা [বকেয়া ১৫,০৪,৬০৪ টাকা], ফাঁসি চাই [বকেয়া ১৭,০৬,৩২৯ টাকা], অপমানের জালা [বকেয়া ১৭,৬০,০৭০ টাকা], মায়ের আঘাত [বকেয়া ১৪,৯৭,৮২৭ টাকা], কঠিন নারী [বকেয়া ১৪,৭২,৯৭১ টাকা], প্রতিবাদী সন্তান [বকেয়া ১৫,৫৭,৮২৮ টাকা], অন্তরে প্রেমের আগুন [বকেয়া ৬,৬৯,২৪০ টাকা], এদেশ তোমার আমার [বকেয়া ৭,৯১,৬৮৮ টাকা], এ জীবনে আছো তুমি [বকেয়া ১৭,৪৯,৪০২ টাকা] এবং তুমি আমার কে [বকেয়া ৯,৪২,৮৪৬ টাকা]।

সর্বশেষ খবর