সোমবার, ২৮ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ : কনকচাঁপা

সুই-সুতায় কাপড়ে ছবি আঁকতাম

গান ও কনকচাঁপা এই দুটি হচ্ছে সমার্থক। কণ্ঠশিল্পীর বাইরেও তার আরও একটি পরিচয় আছে— তিনি চিত্রশিল্পী। নিজের আঁকা ছবি নিয়ে একক চিত্র প্রদর্শনী হতে যাচ্ছে পয়লা এপ্রিল। সবমিলিয়ে আজ তার ইন্টারভিউ—

সুই-সুতায় কাপড়ে ছবি আঁকতাম

হুট করে প্রদর্শনীর পরিকল্পনা কেন?

আমার বাবার কাছ থেকেই আঁকাআঁকির গুণটি পেয়েছি। তিনি ছিলেন একজন চিত্রকর। তিনি খুব ভালো ছবি আঁকতেন। ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকার প্রতি আমার ভীষণ ঝোঁক। কিন্তু আব্বা চাইতেন আমি যেন একজন ভালো সংগীতশিল্পী হই। তিনি আমাকে সব বিষয়ে অল্প অল্প করে না শিখিয়ে এই একটি বিষয়েই সেরা হিসেবে তৈরি করতে চেয়েছিলেন। আর এ জন্য বাড়ির সব রং-তুলি বাবা লুকিয়ে রাখতেন। যেন গান থেকে আমার মনোযোগ ছবি আঁকার দিকে না ঝুঁকে যায়। তখন সুই-সুতার সাহায্যে কাপড়কে ক্যানভাস বানিয়ে সেখানেই ছবি আঁকতাম। এখন মা আমাকে ছবি আঁকার বিষয়ে অনেক অনুপ্রেরণা দেন। আমার বিশ্বাস, বাবা বেঁচে থাকলে তিনিও আমার এই কাজকে এখন উৎসাহিত করতেন।

এটি তো আপনার প্রথম একক চিত্র প্রদর্শনী।

হ্যাঁ, আর তাই অনেক বেশি উত্তেজনা কাজ করছে। কোনো অনুষ্ঠানে গান গাইতে গেলেও মনে হচ্ছে ছবিগুলো ঘরে ঠিকমতো রাখা আছে কিনা, সবাই আমার আঁকা ছবিগুলো পছন্দ করবে কিনা— এসব। এক সময় ভাবলাম আমি কি গানের থেকে ছবি আঁকতে বেশি ভালোবাসি? তারপর নিজেই এর উত্তর পেলাম। আসলে, সংগীত আর ছবি আঁকা দুই-ই আমার ভালোবাসার জায়গা। তবে প্রথম কোনো কাজের অন্য রকম একটা উত্তেজনা তো থাকবেই। ১ এপ্রিল বিকাল ৪টায় প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার।

এই প্রদর্শনীতে কোন কোন ছবি স্থান পাচ্ছে?

এখানে আমার পাঁচ-ছয় বছর বয়সের আঁকা ছবিও প্রদর্শিত হবে। থাকবে সুই-সুতার কিছু কাজ। আবার ডিজিটাল পদ্ধতিতে আঁকা একদম নতুন কিছু ছবিও আছে। সব মিলিয়ে প্রায় একশরও বেশি ছবি প্রদর্শন করার পরিকল্পনা আছে।

প্লে-ব্যাকে আজকাল কম দেখা যায়। কারণ কী?

নতুনরা আসবে, পুরনোদের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে, এটি চিরায়ত সত্য। এখন নতুন সংগীত পরিচালকরা কাজ বেশি করছেন। তারা নতুন শিল্পীদের বিষয়ে বেশি আগ্রহী। এ জন্য প্লে-ব্যাকে ব্যস্ততা অনেকটা কমে গেছে। এ নিয়ে আমার কোনো অতৃপ্তি নেই। কারণ গত কয়েক দশকে অসংখ্য চলচ্চিত্রে গান গেয়েছি। কাজের স্বীকৃতিও পেয়েছি। একজন শিল্পী হিসেবে এর বেশি কিছু প্রত্যাশাও করিনি।

লেখালেখি কেমন হচ্ছে?

নিয়মিত লেখালেখিও চলছে। কিছু দিন আগে আমার একটি বই প্রকাশিত হয়েছে। তবে এটি কোনো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বাজারে আনা হয়নি। আমার সন্তানসম প্রয়াত রাশেদীন ফয়সালের উদ্যোগ আর আগ্রহ থেকেই কাজটি করা।  তাছাড়া সংসার, নাতনিকে সময় দেওয়া— এসব করে দিনকাল ভালোই কেটে যাচ্ছে। আমি আসলে কাজের মধ্যে থাকতেই ভালোবাসি। অবসর নিতে চাই না, আমার একমাত্র অবসর হবে মৃত্যু।

আলী আফতাব

সর্বশেষ খবর