বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ

একজন সাদা মনের মানুষ পেয়ে গেছি

আলাউদ্দীন মাজিদ

একজন সাদা মনের মানুষ পেয়ে গেছি

বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন ঢালিউড কন্যা মাহিয়া মাহি। এর ফলে এই জনপ্রিয় অভিনেত্রীর প্রেম ও বিয়ে নিয়ে দীর্ঘ জল্পনা-কল্পনা আর ঘটনা-রটনার অবসান ঘটল। হুট করে নাকি পরিকল্পনা মাফিকভাবেই বিয়ের সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে মুখ খুললেন মাহি। আরও অনেক কথা বললেন তিনি। এসব নিয়েই আজ মাহির ইন্টারভিউ—

 

জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো, কেমন লাগছে?

কই, কিছুই তো বুঝতে পারছি না, মনে হচ্ছে একটা ঘোরের মধ্যে আছি। মাঝে মাঝে হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসে। সত্যি আমি নতুন জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছি? এই জীবন সম্পর্কে আমার যে কোনো ধারণা নেই। তাহলে এখন কী হবে। যা হওয়ার তা হবে, তাতে আমার কিছু যায় আসে না। মনের মতো বর পেয়েছি এটাই বড় কথা। এটিই আমার জন্য মহা খুশির খবর। আর কিছুই চাই না।

 

এত খুশি, তাহলে বিয়েটা প্রেমের?

সংক্ষিপ্ত প্রেম বলতে পারেন। হুট করেই ওর সঙ্গে আমার দেখা। দেখাটা সিলেটেই হয়েছিল। চার বছর আগে ব্যক্তিগত কাজে সিলেট গিয়ে নাটকীয়ভাবে অপুর সঙ্গে পরিচয়। শুরুতেই ওর ব্যবহার আমাকে মুগ্ধ করেছে। এই মুগ্ধতা থেকেই প্রেম। ও সিলেটে ব্যবসা আর আমি ঢাকায় অভিনয় নিয়ে ব্যস্ত। তাই মুঠোফোনে বেশি সময় প্রেম হতো। সামনাসামনি নয়। হ্যাঁ সময়-সুযোগ করে ও ঢাকায় আসত আর আমি সিলেট যেতাম। দেখা হতো অল্প সময়ের জন্য। ব্যস, এভাবে কখন যে চার বছর কেটে গেছে টেরই পাইনি।

 

স্বামী হিসেবেও অপু মুগ্ধ করতে পারবে?

হান্ড্রেড পার্সেন্ট। ও শিক্ষিত। যুক্তরাজ্যে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়েছে। সিলেটের সম্ভ্রান্ত ব্যবসায়ী পরিবারের সন্তান। চার বছর ধরে ওর মনের যোগ-বিয়োগ নিয়ে অনেক হিসাব কষেছি। কখনো মাইনাস রেজাল্ট আসেনি। সৃষ্টিকর্তাকে অজস্র ধন্যবাদ। তিনি আমাকে আমার স্বপ্ন পুরুষের সন্ধান দিয়েছেন। আসলে মানুষের মনটাই সব। ধন-দৌলত তুচ্ছ। ওর মনের ভিতর অনেকবার ঘুরে দেখেছি। পুরোটাই সাদা। এমন সাদা মনের মানুষ কজনের ভাগ্যে জোটে বলেন। আমি সত্যিই লাকি। অপু গ্রামের একজন সহজ-সরল সাধারণ মানুষ। শিক্ষা এবং অর্থকড়ি দুই-ই থাকার পরেও ওর মনে কোনো অহংকার নেই। এমন জীবনসঙ্গীই চেয়েছিলাম। আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে এখন চিৎকার করে বলতে পারি ‘একজন সাদা মনের মানুষ পেয়ে গেছি আমি।’

 

প্রেমের কথা কে কাকে আগে বলল?

না ওভাবে আসলে ঘটা করে কেউ কাউকে বলিনি যে আমি তোমাকে ভালোবাসি বা চাই। সত্যিকারের ভালোবাসা হচ্ছে ফিলিংসের ব্যাপার। দুজনই ফিল করতাম যে আমরা একজন আরেকজনকে চাই। তারপর ভাবনার সাগরে হারিয়ে আমরা মেঘের দেশে শুভ্রতার বসত গড়েছি। ধীরে ধীরে শিশু প্রেমকে যৌবন দিয়েছি। তারপর ভরা যৌবনে মিলনের ঘণ্টা বাজিয়েছি।

 

পরিবার কি এই গোপন প্রেমের কথা জানত?

প্রেম কি কখনো গোপন থাকে। সে তো সবার অজান্তে সব আঙ্গিনা ছেড়ে মুক্ত আকাশে উড়াল দেয়...হাঁ...হাঁ...হাঁ...। পরিবার প্রথমে কিছুটা টের পেয়েছে বাকিটা পরে ঘটা করে জানিয়েছি। প্রথম প্রথম নানা খুনসুটি করলেও পরে সবদিক যাচাই করে দুই পরিবারই আমাদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছে।

 

এর আগে তো অনেকের সঙ্গে আপনার প্রেম আর বিয়ের খবর রটেছিল?

সেলিব্রেটিদের জীবনে রটনা-ঘটনা তো থাকবেই। না হলে মজা কোথায়। আর যেসব খবর এতদিন বাতাসে ভেসে বেড়িয়েছে তা কি কখনো সত্যি হয়েছে? ওসব উড়ো কথায় আমি কখনো কান দেইনি। আপনারাও দেবেন না। কারণ এগুলো কেউ মজা করার জন্য আবার কেউবা মজা পাওয়ার জন্য করে। এতে ক্ষতি আছে। কোনো লাভ নেই।

 

হুট করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নাকি কোনো এক বিশেষ ব্যক্তির ওপর অভিমান করে দ্রুত বিয়ে?

এসব ঠাকুরমার ঝুলির গল্প আর শুনতে চাই না। জীবনটা আমার নিজের। তাই সিদ্ধান্তটাও আমার। যাকে ভালো লাগে না তার এক তরফা ভালোবাসায় কিছু যায় আসে না আমার। আর যাকে ভালো লাগবে তাকে কখনো ছাড়ব না। অপুকে সত্যি ভালোবেসেছি তাই ওকে নিজের করে নিয়েছি। অপু চাইছিল বিয়েটা তাড়াতাড়ি হোক। আমার পরিবারেরও সেই ইচ্ছে ছিল। দুই দিকের ইচ্ছে এক হয়েছে বলে ব্যাপারটা দ্রুত গড়িয়েছে।

 

অভিনয় জীবন কি বহমান থাকবে?

অবশ্যই, চলচ্চিত্র আমার ভালোবাসা আর প্রাণের জায়গা। কাজ কমিয়ে দেব। কারণ স্বামী সংসারকেও তো সময় দিতে হবে। বছরে মাত্র ২/১টি ছবিতে কাজ করব। বাকি সময়টা পরিবারের জন্য থাকবে। জুলাই থেকে বদিউল আলম খোকনের ‘হারজিৎ’ ছবিতে কাজ শুরু করব। এভাবেই সংসার আর চলচ্চিত্র জীবন নিয়ে এগিয়ে যাব।

 

নায়িকারা বিয়ে করলে নাকি পর্দায় চাহিদা কমে যায়?

আমি এ কথা মানতে চাই না। শাবানা, ববিতা, কবরী, মৌসুমী আপুরা তো বিয়ের পর দীর্ঘদিন ধরে দিব্যি কাজ করে গেছেন। কই তাদের জনপ্রিয়তায় তো এতটুকু কমেনি। আসলে জনপ্রিয় তারকাদের দর্শকপ্রিয়তায় কখনো ভাটা পড়ে না। এসব কথা যারা বলেন তারা না বুঝেই বলেন। বিয়ে নয়, জনপ্রিয়তা কমে বিশ্বাসযোগ্যতার অভাবে।

সর্বশেষ খবর