সোমবার, ৩০ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

একাধিক বিয়ে : মাহির অস্বীকার

আলাউদ্দিন মাজিদ ও শামছুল হক রাসেল

একাধিক বিয়ে : মাহির অস্বীকার

অপু-মাহির বিয়ে

এ যেন রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের মতো— ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’। বলছি মাহির বিয়ের কথা। কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না মাহির গোপন বিয়ের খবর।

গত ২৫ মে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের পর আবারও সামনে এসেছে সেই শাওনের সঙ্গে মাহির গোপন বিয়ের খবর ও ছবি। তথাকথিত এ বিয়ের স্ফুলিঙ্গ জ্বলে উঠেছিল গত ডিসেম্বরে। সেই স্ফুলিঙ্গ থেকেই আবার আগুনের গোলা বেরুচ্ছে গত কয়েক দিন ধরে। আর ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ নানা গণমাধ্যমে। তবে বরাবরের মতো এ খবরকে অস্বীকার করে মাহি হুমকি দিয়ে বলেন, ‘যারা আমার সংসার ভাঙতে অপতত্পরতা চালাচ্ছে তাদের আমি ছাড়ব না। ইতিমধ্যে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রয়োজনে আরও অ্যাকশনে যাব। বাকিটা সময় হলেই দেখতে পাবেন’।

বুধবার বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন জনপ্রিয় এই নায়িকা। কিন্তু বিয়ের দুদিনের মাথায় শুক্রবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয় যে, মাহি আগেও বিয়ে করেছেন। শাওন শাহরিয়ার নামে এক ছেলের সঙ্গে মাহির বিয়ের ছবিও ফেসবুকে ছাড়া হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথমবার মাহির সঙ্গে এই শাওনের বেশ কিছু ছবি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়। উভয়ের আইডি থেকেই ছবিগুলো আপলোড করা হয়। তখনই শাওনের সঙ্গে মাহির গোপন ‘বিয়ের খবর’ উচ্চারিত হয়। মাহি তখন এ খবরকে স্রেফ গুজব বলে দাবি করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছিলেন, ‘ছবি আপলোড করলেই কী বিয়ে হয়ে যায়?’ তবে তার ঘনিষ্ঠ এক সূত্র দাবি করেছিল দুজন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন এবং এক সপ্তাহ ধরে তারা ময়মনসিংহে অবস্থান করছেন। সেই সময় এ খবরটি চাপা পড়ে যায় অন্যান্য খবরের অন্তরালে। কিন্তু সেই গুঞ্জনটি ফের বেগবান হলো মাহির সঙ্গে সিলেটের ব্যবসায়ী পারভেজ মোহাম্মদ অপুর বিয়ের পর। নতুন করে আবার এই ধরনের খবর প্রচারে মাহি বলেন, ‘যে সব নিউজ পোর্টাল আমার সঙ্গে কথা না বলে এসব খবর প্রকাশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। শাওনসহ এ কাজে জড়িতদের ছাড়ব না। তাদের আইনের মুখোমুখি করব।’ মাহি আরও বলেন, ‘আগেও এমন অপপ্রচার চালানো হয়। তখনই এ ব্যাপারে অ্যাকশনে যাওয়া উচিত ছিল। চুপ থাকায় শত্রুরা সাহস পেয়ে গেছে। এবার আর ছাড় দেব না।’

এদিকে শাওনের সঙ্গে হালের প্রকাশিত তার ঘনিষ্ঠ ছবি সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহি বলেন, ‘ও আমার ছোটবেলার বন্ধু। একজন ভালো বন্ধু ছাড়া আর কিছুই তাকে কখনো ভাবিনি। এক সময় বুঝতে পারলাম আমার প্রতি সে দুর্বল। তখন তাকে এড়িয়ে চলতে থাকি। ভালো বন্ধু ও দুই পরিবারের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল বলে বিভিন্ন সময় মজা করে কিছু ছবি তুলেছিলাম। শাওন এখন এসব ছবিকে অন্য ব্যাখ্যা দিয়ে প্রচার করছে।’ তবে তার সঙ্গে অন্তরঙ্গভাবে তোলা ছবি সম্পর্কে নিশ্চুপ ছিলেন মাহি।

প্রকাশিত ছবিতে তাকে বধূবেশে দেখা যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাহি বলেন, ‘ওগুলো আসলে একটি ছবির শুটিংয়ের সময় তোলা। তখন শাওনও সেখানে ছিল। মজা করে তখন ক্যামেরাবন্দী হয়েছিলাম আমরা। এই ছবিগুলোই এখন আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। শাওনসহ আমার শত্রুরা ছবিগুলো ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর সুযোগ পাচ্ছে।’ কোন ছবির দৃশ্য এটি জানতে চাইলে মাহি তা মনে করতে পারছেন না বলে জানান। মাহি বলেন, ‘অপুকে বিয়ে করায় শাওন জেলাস ফিল করছে। তাই সে এসব মিথ্যা ছবি ও কথা ছড়িয়েছে।’ এদিকে মাহির বক্তব্যকে ঘিরে প্যারোডি করে নানারকম মুখরোচক স্ট্যাটাস ও ছবি আপলোড হচ্ছে ফেসবুকে। যেখানে কেউ কেউ ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘আমরা মজা করে গতকাল রাতে বিয়ে করেছি। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী নই।’ এরকম নিত্যনতুন প্যারোডি বেগবান হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ সাইটে।

অন্যদিকে মাহির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, শনিবার সেই শাওনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মাহি বলেন, ‘আগেই বলেছি, যারা এসব অপকর্ম করছে তাদের ছাড় দেব না। তাই শাওনও পার পায়নি। ইতিমধ্যে সে গ্রেফতার হয়েছে। তার কর্মকাণ্ডে আমি সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়েছি। সম্মুখীন হচ্ছি নানা প্রশ্নের। বিশেষ করে বিয়ের পরপর এই ধরনের ঘটনায় শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে আমাকে বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।’ মাহি আরও বলেন, ‘সুস্থ মানসিকতার কোনো ব্যক্তি এ ধরনের কাজ করতে পারে না। শাওন আমার ভালো বন্ধু ছিল সে-ই এখন চরম শত্রু প্রমাণ হলো। যেসব নিউজপোর্টাল আমার সঙ্গে কথা না বলে অতিরঞ্জিত ও মুখরোচক করে এখবর ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও সাইবার ক্রাইম অ্যাক্টে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নিউজ পোর্টালগুলো যদি শাওনের বরাত দিয়েও এসব মিথ্যে খবর প্রচার করত তাহলে কিছুই বলতাম না।’ তিনি বলেন, ‘আগেও এ ধরনের খবর প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু ছাড় দিয়েছি, কিছু বলিনি। এখন মনে হচ্ছে এটাই ছিল আমার জন্য মহা ভুল সিদ্ধান্ত। এতে তারা দুঃসাহস নিয়ে আমার বিরুদ্ধে বেশি করে অপপ্রচার চালিয়ে যাওয়ার সাহস দেখাচ্ছে। সাধারণ মানুষ হিসেবে আমার সামাজিক ও পারিবারিক মর্যাদা আছে। সেই মর্যাদা ক্ষুণ্ন করার অধিকার কারও নেই। তাই বাধ্য হয়ে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে। সবার মনে রাখা দরকার এখন আমি বিয়ে করেছি। শান্তিতে সংসার করতে চাই। এর জন্য সবার দোয়া চাই। যেন সংসার জীবনে সুখী হতে পারি।’

সর্বশেষ খবর