বুধবার, ২৯ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঈদের ছবি : সিনেমা হল নিয়ে কাড়াকাড়ি

শোবিজ প্রতিবেদক

ঈদের ছবি : সিনেমা হল নিয়ে কাড়াকাড়ি

ঈদে মুক্তি পাচ্ছে ৪টি ছবি। সিনেমা হল আছে ৩০০টি। এর মধ্যে দুটি ছবি ‘বাদশা’ ও ‘শিকারি’ ইতিমধ্যে ২০০ হলে বুকিং সম্পন্ন করেছে। ‘সম্রাট’ এ পর্যন্ত পেয়েছে ৬০টি সিনেমা হল। বাকি ৪০টি তাহলে ‘রানা পাগলা’র ভাগ্যে জুটছে? এই প্রশ্ন করে নির্মাতারা বলছেন, এখন একটি ছবি নির্মাণে সর্বনিম্ন এক কোটি টাকা খরচ হয়। আর ঈদের ছবির বাজেট তো অনেক বেশি। কিন্তু পর্যাপ্ত সিনেমা হল না থাকলে লাভ দূরে থাক লগ্নিকৃত অর্থ ফেরত আসবে কোথা থেকে।

দেশে সিনেমা হল সংকট এখন চলচ্চিত্র ব্যবসার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সংকটের কারণে চলচ্চিত্র নির্মাণ কমে গেছে। চলচ্চিত্র নির্মাতাদের কথায় পণ্য উৎপাদন করার পর তা বিক্রির জন্য দোকান লাগবে। দোকান না থাকলে পণ্য উৎপাদন করে কি হবে। বিক্রি করব কোথায়। চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে এখন এই অচল অবস্থাই চলছে। নির্মাণের পর প্রদর্শনের জন্য সিনেমা হল নেই। ঈদ হচ্ছে চলচ্চিত্র ব্যবসার প্রধান মৌসুম। এই মৌসুমে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় আয় হয় বেশি। তাই বেশি পরিমাণে ছবি মুক্তি পায়। কিন্তু প্রায় এক দশক ধরে ছবি চালাতে গিয়ে নির্মাতারা হিমশিম খাচ্ছেন। কারণ সিনেমা হল কম। এবারও হয়েছে তাই। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিয়া আলাউদ্দীন বলেন, বর্তমানে দেশে রয়েছে ২৩০টি সিনেমা হল। ঈদে মৌসুমী সিনেমা হল হিসেবে খুলছে বন্ধ থাকা আরও ৭০টি হল। ৪টি ছবির জন্য এই সংখ্যা যথেষ্ট নয়। ছবি যদি ভালো হয় ও দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পায় তাহলে হয়তো দ্বিতীয় বা আরও কয়েক সপ্তাহ চালিয়ে কিছুটা পয়সা ঘরে তোলা যাবে। তবে সার্বিকভাবে ক্ষতির মুখেই পড়তে হবে নির্মাতাকে। চলচ্চিত্র বুকিং এজেন্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, সাধারণ সময়েই ছবি মুক্তি নিয়ে সিনেমা হল সংকটে পড়তে হয় আর ঈদে ছবি বেশি

থাকে বলে এই সংকট আরও তীব্র হয়। রেন্টাল, টেবিল কালেকশন থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই আয় থাকে মন্দ। এবার এখন পর্যন্ত ৪টি ছবির মুক্তি প্রক্রিয়া চলছে। এই ৪টি ছবির জন্যও পর্যাপ্ত সিনেমা হল নেই। তাই স্বাভাবিকভাবে নির্মাতাকে লোকসানের কবলেই পড়তে হবে। চলচ্চিত্রকার এবং চলচ্চিত্র সমিতিগুলোর কর্মকর্তাদের একটিই দাবি, সিনেমা হল বাড়াতে সরকারের সহযোগিতা চাই। সিনেমা হল বন্ধ রোধ ও শপিং কমপ্লেক্সে সিনেমা হল নির্মাণ বাধ্যতামূলক করা। নতুন সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারে সুদমুক্ত ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করা ও সরকারিভাবে জেলা-উপজেলায় সিনেমা হল নির্মাণ করা গেলে চলচ্চিত্রের ব্যবসা আবার প্রাণ ফিরে পাবে।

চলচ্চিত্র প্রদর্শক মিয়া আলাউদ্দীন বলেন, গত বছর নতুন সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য সরকার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সেই উদ্যোগ এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে চলচ্চিত্র ব্যবসার আরও অবনতি ঘটেছে। নব্বই দশক পর্যন্ত সিনেমা হল ছিল প্রায় সাড়ে ১২০০। বর্তমানে এ সংখ্যা মাত্র ২৩০টি। যা সত্যিই উদ্বেগজনক।

সর্বশেষ খবর