সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

ঈদ আনন্দে শোকের ছায়া

শোবিজ প্রতিবেদক

ঈদ আনন্দে শোকের ছায়া

রাজধানীর গুলশানে ঘটে যাওয়া রক্তাক্ত ঘটনায় সারা দেশে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। স্বাভাবিক নিয়মে শোবিজ তারকারাও এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন এবং মর্মাহত। তাদের কাছে এ ঘটনা ‘সুন্দর বাংলাদেশ’র পিঠে ছুরিকাঘাত। তাই শিল্পীদের ঈদের আনন্দের মধ্যে বিরাজ করছে শোক। সবাই শুধু একটাই কথা বলছেন— ‘একি হলো! এই দেশে এমন ঘটনা!’ শিল্পীরা অনেকেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ফেসবুকে। ফোনেও অনেকে কথা বলেছেন।

জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের জন্য একটি দুঃখের দিন।’ অভিনেত্রী শাওন লিখেছেন, ‘পরম করুণাময় তোমার কাছে করুণা ভিক্ষা চাই।’

পরিচালক রেদওয়ান রনির পোস্ট করেছেন, ‘আমি খুব আশাবাদী মানুষ। যদিও কাল [শুক্রবার] থেকে নানান হতাশা আমাকে গ্রাস করেছিল, তবে আজ [শনিবার] একটু একটু করে মনোবল জোগানোর চেষ্টা করছি। আইএস শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, পৃথিবীর সমস্যা। আমাদের নিজের দেশ নিয়ে এত হীনমন্যতার কিছু নেই। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করে— এই তথ্যটা জোর গলায় পৃথিবীকে জানানো প্রয়োজন। তবে দেশে আইএস নেই বলে চোখ বন্ধ করে থাকারও আমি পক্ষপাতী নই। যত তাড়াতাড়ি বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলা যায়, ততই মঙ্গল।’

যখন সন্ত্রাসীরা রেস্টুরেন্টে তাণ্ডব চালাচ্ছিল তখন অভিনেত্রী মম লিখেছেন, ‘আজ যারা জিম্মি, তাদের সবার নিরাপদ মুক্তির অপেক্ষায় জেগে আছি, আল্লাহ সহায় হোন।’

এদিকে জয়া আহসানের মনও ভীষণ খারাপ। কারণ যে রেস্টুরেন্টে হামলা হয়েছে সেটি তার ছোট বোনের মালিকানায় ছিল। কিছুদিন আগে মালিকানা হস্তান্তর হয়েছে। জয়া বলেন, ‘আমার সব সময় গর্ব হয়, আমি বাংলাদেশের শিল্পী। কিন্তু আমার প্রিয় দেশ ভালো না থাকলে কষ্ট পাই।’ অন্যদের মতো আরেফিন শুভও শোকাহত। তার শোকের সবচেয়ে বড় কারণ, তার পরিচিত একজন হামলায় নিহত হয়েছেন। তাই শোকস্তব্ধ কণ্ঠে শুভ বলেন, ‘এটা খুবই নৃশংস হামলা। মানবতার শরীরে বিশাল আঘাত। গুলশানকে আমি খুবই নিরাপদ এলাকা হিসেবেই জানতাম। এখানে এমন একটি হামলা হবে এটা কল্পনারও বাইরে। বিশ্বাস করতে পারছি না। স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে আমরা সবাই কি তাহলে এতটাই নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বাস করছি? এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবেই কাম্য নয়। হামলায় আমার পরিচিত একজন মারা গেছেন।’

শুভর মতো কণ্ঠশিল্পী শাকিলা জাফরেরও পরিচিত একজন নিহত হয়েছেন। তাই তিনি বাকরুদ্ধ, কোনো কথাই বলছেন না ঘটনার পর থেকে।

হামলার সময় শিল্পী আঁখি আলমগীর ফেসবুকে লেখেন, ‘ভাবতেও পারছি না, জিম্মিরা এই মুহূর্তে কিসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমি ঘুমাতে পারছি না। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রক্ষা কর।’

নায়ক শাকিব খান হামলার সময় গুলশানে নিজের বাসায় যেতে পারেননি আতঙ্কে। তিনি ছিলেন নিকেতনে বোনের বাসায়। শাকিব বলেন, ‘শান্তিতে ঈদ করা আর হলো না। শুধুই আতঙ্ক কাজ করছে মনে। আমার দেশে এমন ঘটনা ঘটেছে আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।’ ফেসবুকে অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তফা লিখেছেন, ‘এ ঘটনায় আমরা যেন ধর্মকে না টানি। এটা সন্ত্রাস। এখানে ধর্মের কিছু নেই; আছে টাকা, উগ্রতা, রাজনীতি। আমাদের স্মৃতি তো গোল্ডফিশের মতো। মনে আছে ধর্মের নামে হেফাজত ঢাকায় কি করেছিল?’

উল্লিখিত শিল্পী ছাড়াও সবাই একইভাবে নিজেদের মন্তব্য করেছেন। ধিক্কার জানিয়েছেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর