শুক্রবার, ২২ জুলাই, ২০১৬ ০০:০০ টা

চাঙ্গা হয়ে উঠেছে নাট্যাঙ্গন

মোস্তফা মতিহার

চাঙ্গা হয়ে উঠেছে নাট্যাঙ্গন

ঈদের পরে নতুন করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে ঝিমিয়ে পড়া নাট্যাঙ্গন। শৈল্পিক সেটে, চরিত্রানুযায়ী কস্টিউম ও মিউজিকের নান্দনিকতার তালে তালে শিল্পীদের সংলাপ প্রক্ষেপণে ঢাকার মঞ্চগুলো এখন নতুন রঙে নতুন সাজে সেজেছে। মহিলা সমিতি মিলনায়তন, শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন, পরীক্ষণ থিয়েটার হল, স্টুডিও থিয়েটার হল ও সুত্রাপুরের জহির রায়হান মিলনায়তনসহ রাজধানীর সব মিলনায়তনই বর্তমানে নাট্যকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত। ঈদের পরে এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধ শতাধিক নাটক মঞ্চায়ন হয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন মঞ্চে। যা নাকি গত এক মাসের চেয়ে তিনগুণ বেশি। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ও সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার পর নাট্যাঙ্গনে দর্শকদের আকাল দেখা দেওয়ার কথা থাকলেও বরং নাট্যানুরাগীরা প্রতিদিন সন্ধ্যায়ই ভিড় জমাচ্ছেন শিল্পকলা একাডেমি ও মহিলা সমিতির মিলনায়তনে। সংস্কৃতির মাধ্যমে জঙ্গিবাদ নির্মূলের প্রয়াসে সংস্কৃতিকর্মীরা নাটককেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। যার কারণে ঢাকার মঞ্চগুলো এখন সেজেছে নাটকের শৈল্পিকতায়। ঈদের পরে মঞ্চস্থ হওয়া বেশ কয়েকটি নাটক হলো : বহুবচন থিয়েটারের ‘দেবী,পদাতিকের ‘গহনযাত্রা, দ্যাশ বাংলা থিয়েটারের ‘সারস ডানায় পরান পাখি’, ঢাকা পদাতিকের ‘হেফাজত; থিয়েটারের ‘নিখাই’ বাংলাদেশ থিয়েটারের ‘সিরাজ যখন নবাব সিরাজ উদ্দৌলা’ স্বপ্নদলের ‘চিত্রাঙ্গদা’, ম্যাড থেটারের ‘নদ্দিউ নতিম’ ঢাকা থিয়েটারের ‘বিনোদিনী’, থিয়েটারের ‘মায়ানদী’ নাগরিক নাট্যাঙ্গনের ‘গহর বাদশা ও বানেছা পরী’, লোক নাট্যদল (বনানী)র ‘কঞ্জুস’ দৃষ্টিপাত নাট্যদলের ‘জ্বালা’, উন্মোচন থিয়েটারের গতিময় জীবন’ ইত্যাদি। এছাড়া আরও বিভিন্ন নাট্যদলের অনেক নাটক মঞ্চায়ন হয়েছে গত ১৫ দিনে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ নাট্যকর্মীরা সব অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে নাট্যকর্মীরা সংস্কৃতি তথা নাটককে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়াতে ঈদের পরে নাটকের অঙ্গনে নতুন জোয়ার প্লাবিত হচ্ছে। শুধু নাট্যকর্মীরাই নয় নাট্যানুরাগী দর্শকরাও নাটকের মঞ্চের শিল্পীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন মিলনায়তনে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ থিয়েটারের অধিকর্তা খন্দকার শাহআলম বলেন, রমজানের সময়টাতে দর্শকদের আকাল থাকবে এটাই স্বাভাবিক। প্রতিবছরেই ঈদের পরে নাট্যাঙ্গন নতুনভাবে জেগে উঠে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতিতে এবারের ঈদের পরে আমাদের অর্থাৎ নাট্যাঙ্গনের মানুষদের সফলতাটা বেশি। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নাট্যাঙ্গনে যেন কোনো ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য আমরা বেশি বেশি নাটক মঞ্চায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। কারণ দেশের যেকোনো ক্রান্তিকালে নাট্যকর্মীরা এগিয়ে আসে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ নিয়ে। আমাদের প্রতিরোধ ও প্রতিবাদের হাতিয়ার হচ্ছে নাটক। এবারের ঈদের পর নাট্যাঙ্গন যেভাবে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে এর সব সফলতা আমাদের নাট্যানুরাগী দর্শকদের।

কারণ তারা যদি আমাদের উৎসাহ না দিত এবং ভয় পেয়ে যদি দর্শকরা নাটক দেখতে আসা বন্ধ করে দিত তাহলে আমাদের নাট্যাঙ্গন নতুন করে উজ্জীবিত হতো না। থিয়েটারের রাশেদ শাওন বলেন, ঈদের পরে যেভাবে নাটকের অঙ্গন চাঙ্গা হয়ে উঠেছে এ সফলতা অটুট থাকুক এটাই আমি প্রত্যাশা করি।

সর্বশেষ খবর