মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

কিরণমালায় জ্বলছে দেশ

শোবিজ প্রতিবেদক

কিরণমালায় জ্বলছে দেশ

স্টার জলসা, জি বাংলাসহ ভারতীয়  চ্যানেলগুলো সংসারের ঝগড়াঝাটি ও পৌরাণিক কাহিনীনির্ভর সিরিয়ালগুলো সাধারণ বাংলাদেশিদের মধ্যে তৈরি করছে ভয়াবহ আসক্তি। পরিবারের কাজকর্ম ফেলে গৃহবধূরা মগ্ন থাকছেন ওইসব সিরিয়ালে। এতে ঘটছে নানা অঘটন। আবার কোথাও কোথাও সিরিয়াল দেখা নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও ঘটছে। আর এর সর্বশেষ উদাহরণ স্টার জলসায়  প্রচারিত ভারতীয় বাংলা টেলিভিশন ধারাবাহিক কিরণমালা। প্রতি সোম থেকে রবিবার রাত ৮টায় প্রচারিত এ সিরিয়াল নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় পড়ে গেছে। কদিন আগে এক পরিবারের সদস্যরা সিরিয়াল দেখায় মগ্ন থাকায় দুর্ঘটনায় শিশুমৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে এর কিছুদিন আগে সিরিয়াল দেখতে বারণ করায় আত্মহত্যা করেছে এক তরুণী। এখানেই শেষ নয়, সম্প্রতি হবিগঞ্জে সিরিয়াল দেখা নিয়ে দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত হয়েছে শতাধিক। এমনকি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদের ঘটনাও ঘটছে এই সিরিয়াল নিয়ে। সাধারণ মানুষের জীবনে এই সিরিয়ালের ভয়ঙ্কর প্রভাব নিয়ে আতঙ্কিত সচেতন মহল। গত বছরের ১৪  সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর বড়দাপ (সরকারপাড়া) গ্রামে কিরণমালা সিরিয়ালটি দেখতে গিয়ে ১৬টি পরিবারের বসতবাড়ি-জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। কিরণমালার সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে গত শনিবার সাতক্ষীরার শ্যামনগরে। ওই দিন সকাল ৯টায় উপজেলার বাদুড়িয়া গ্রামের সবুর মোল্লা নামের এক পরিবারের সবাই একত্রে দেখছিলেন কিরণমালা। একই সময় পুকুর পাড়ে খেলা করছিলেন সবুর মোল্লার ছেলে আসাদুর রহমান (৬) ও তার চাচাতো বোন মনিরা খাতুন (৪)। যখন সিরিয়াল শেষ হয় ততক্ষণে না ফেরার দেশে চলে যায় অবুঝ শিশু দুটি।

কিরণমালার এই দৌরাত্ম্য এবং ভারতীয় চ্যানেলের আগ্রাসন নিয়ে  নাট্যব্যক্তিত্ব আলী যাকের বলেন,

ভারতীয় টিভি সিরিয়াল নিয়ে নানা উন্মাদনার খবর শুনেছি। আসলে ভিনদেশি নাটকের প্রভাবের জন্য দায়ী আমাদের নির্মাতারা। এই উন্মাদনা রুখতে সমস্যার মূলে যেতে হবে। দর্শক নিরবচ্ছিন্ন বিনোদন চায়। আর আমরা তাদের তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছি। ফলে এই নেতিবাচক অবস্থার উদ্ভব হয়েছে। এ অবস্থার উত্তরণে দর্শকদের নিরবচ্ছিন্ন বিনোদন দিতে হবে। সমস্যার মূল খুঁজতে হবে প্রথমে। অভিনেত্রী দিলারা জামান বলেন, আমাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন এখন ভারতীয় টিভি চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। তাই চিৎকার করে কোনো লাভ নেই। সবাইকে সচেতন হতে হবে। রাইসুল ইসলাম আসাদ বলেন, এই ব্যর্থতা আমাদের সবার। আমরা আমাদের অনুষ্ঠান কেন দেখছি না তার কারণ খুঁজে বের করলেই সমাধান হয়ে যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর