শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

জুটি ভাঙায় আমার কোনো হাত নেই : বুবলী

শামছুল হক রাসেল

জুটি ভাঙায় আমার কোনো  হাত নেই : বুবলী

সাংবাদিকতার প্রতি অনুরাগ থেকেই টেলিভিশনে সংবাদ উপস্থাপনায় এসেছিলেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করছেন। ইকোনোমিক্সে অনার্স শেষ করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। হতে চেয়েছিলেন ব্যারিস্টার। এমনকি ব্রিটিশ স্কুল অব ল’তে দুই বছর এলএলবিও করেছেন। কিন্তু চাকরি এবং এমবিএর চাপে সেটা আর শেষ করা হয়নি। কদিন আগেও দেশের মানুষের কাছে সংবাদ উপস্থাপিকা হিসেবে ছিলেন পরিচিত মুখ। আর আজ রুপালি জগতের মানুষ। বলছি বুবলীর কথা।

সম্প্রতি ঈদুল আজহায় মুক্তি পায় তার অভিনীত ‘বসগিরি’ ও ‘শুটার’ ছবি। দুটি ছবিতেই তার বিপরীতে ছিলেন শাকিব খান। মূলত বসগিরি দিয়েই আলোচনায় চলে আসেন বুবলী।

তার এ পথচলা এত সহজ ছিল না। এ কথা জানতে হলে, তাকাতে হবে একটু পেছনের দিকে। ব্যারিস্টার হওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সেই পথে আর পুরোপুরি পা বাড়াননি। ছোটবেলায়  বাংলা ছবির ভক্ত ছিলেন এই লাস্যময়ী। তবে এ জগতে জড়ানোর কোনো ইচ্ছা ছিল না বুবলীর। একটা পর্যায়ে ঝোঁক গিয়ে পড়ে নাচের প্রতি। মেয়ের এমন আগ্রহ দেখে

বাবা-মা ভর্তি করে দেন নাচের স্কুলে। সময়ের পরিক্রমায় বদলে যায় অনেক কিছু। যোগ দেন একটি বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলের সংবাদ উপস্থাপিকা হিসেবে। কিন্তু মনের কোটরে হয়তো অভিনয়ের কোনো ইচ্ছা স্ফুলিঙ্গের মতো জ্বলজ্বল করছিল। তাই তো অনেক চড়াই-উত্রাই পেরিয়ে পরিবারের মত-অমতের বাধা পেরিয়ে নাম লেখান শামীম আহমেদ রনির ‘বসগিরি’ ছবিতে। আর এই যাত্রা আরও বেগবান হলো এবারের ঈদে। মুক্তিপ্রাপ্ত দুটি ছবিই দর্শক ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে। তবে শুটারের তুলনায় বসগিরি ছবিটি দর্শকরা সানন্দে গ্রহণ করেছেন।

দর্শক ভালোবাসা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বুবলী বলেন, ‘দর্শকরা এভাবে আমার অভিনয়ের প্রতিদান ফিরিয়ে দিবে তা কল্পনাও করিনি। তবে এটা ঠিক যে, আত্মবিশ্বাস ছিল। সবকিছু মিলিয়ে ভালো একটা কিছু হচ্ছে বলে সবসময় মনে-প্রাণে বিশ্বাস রেখেছি। তাই তো যেখানেই গিয়েছি সেখানেই প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ভালোবাসা পেয়েছি। দর্শকদের এ ভালোবাসা অভিনয়ের সেরাটা দিয়ে সবসময় ফিরিয়ে দিতে চাই।’ বুবলী আরও বলেন, ‘যখন ছবি দুটি মুক্তি পেল আর খবর পাচ্ছিলাম যে, দুটি ছবি ভালো যাচ্ছে। তখন কি যে আনন্দ তা মুখে প্রকাশ করা যায় না। সেই আনন্দ এখনো বিরাজমান আমার মনে। আরেকটি কথা না বললেই নয়, বসগিরি এক ধরনের ছবি শুটার আরেক ধরনের। অর্থাৎ শুটারেরও একটি নির্দিষ্ট দর্শক রয়েছে। তাই দুটি ছবিই ভালো চলছে। কেউ কেউ শুধু বসগিরির কথাই বলছেন। অথচ শুটারও যে ভালো ব্যবসা করছে, সেটা অনেকেই এড়িয়ে যাচ্ছেন।’

বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে জানতে চাইলে বুবলী বলেন, ‘ঈদের পর আমার প্রতি দর্শকের যে প্রত্যাশা দেখলাম তা ভবিষ্যতের যাত্রাকে আরও বেগবান করবে। ইতিমধ্যে অনেক পরিচালক ও প্রযোজনা সংস্থা যোগাযোগ করেছেন। শাকিব ভাইয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে ছবি করার প্রস্তাব পাচ্ছি বেশি। আমি খুব ধীরে-সুস্থে এগুতে চাই। যেহেতু শুরুটা ভালো করেছি তাই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার চিন্তা ভাবনা এঁটেছি। নতুন ছবির পরিকল্পনা আরেকটু সময় নিয়ে জানাব।’

কেউ কেউ বলছেন, শাকিব-অপুর সেই জুটির কফিনে আপনি পুরোপুরি পেরেক ঠুকে দিয়েছেন, এ বিষয়ে কিছু বলবেন কি? এবার বললেন, ‘দেখুন, সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই বদলে যায়। শাকিব-অপুর জুটি নিঃসন্দেহে অন্যতম পরীক্ষিত সেরা জুটি। এখন দর্শকরা যদি আমাদের চায় তাতে দোষের তো কিছু নেই। ওই যে বললাম, একটা সময় শাকিব ভাইয়ের সঙ্গে শাবনূর, পূর্ণিমা, সাহারা আপাও কাজ করেছেন। এখন পরিচালক ও প্রযোজকরা শাকিব-বুবলী গ্রহণ করতে চাচ্ছেন। কোনো জুটি পেছনে পড়ে গেলে বা ভাঙতে তাতে দর্শকেরই হাত থাকে। এতে ব্যক্তিগত কোনো হাত বা বিষয় কাজ করে না। সুতরাং এতে আমারও কোনো হাত নেই। ওই যে বললাম দর্শক চাহিদা। পরিশেষে, এটাই বলতে চাই যার সঙ্গেই কাজ করি না কেন অভিনয়ের সেরাটা দিয়েই এগিয়ে যেতে চাই।’

একটা সময় সংবাদ পড়তেন, এখন নিজেই সংবাদের খোড়াক। বিষয়টা কেমন উপভোগ করছেন, এমনটা জানতে চাইলে বুবলী বলেন, ‘এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশের নয়। সত্যিই আমি ভাগ্যবতী।’

সর্বশেষ খবর