রবিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
মিডিয়া ইউনিটির সংহতি সমাবেশ

ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার শপথ

শোবিজ প্রতিবেদক

ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার শপথ

করমর্দন করছেন ফরিদুর রেজা সাগর, ড. মাহফুজুর রহমান। পাশে ইকবাল সোবহান চৌধুরী

অবৈধ পথে বিদেশি টিভি চ্যানেলে দেশি বিজ্ঞাপন প্রচার ও অবৈধ ডাউনলিঙ্ক চ্যানেল বন্ধসহ টেলিভিশন চ্যানেলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সরকারি আশ্বাসে চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছে সাংবাদিক, শিল্পী-কলাকুশলী, প্রযোজক, ব্রডকাস্টার ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত বিনিয়োগকারীদের সংগঠন মিডিয়া ইউনিটি। যৌক্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন বলে এ সময় সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতাও জ্ঞাপন করেন মিডিয়া ইউনিটির নেতারা। অবিলম্বে সরকারি আশ্বাস বাস্তবায়ন হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা। মিডিয়া ইউনিটের পক্ষে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন ৭১ টিভির সিইও মোজাম্মেল বাবু। গতকাল ঢাকা ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংহতি সমাবেশের মাধ্যমে তারা আন্দোলন স্থগিতের এই ঘোষণা দেন। মিডিয়া ইউনিটের আন্দোলনের সফলতা অর্জনের নানা বিষয় তুলে ধরে বক্তৃতা করেন ইনডিপেন্ডেন্ট টিভির স্বত্বাধিকারী সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের আমদানি-রপ্তানির সার্কুলারে অনেক ফাঁক ছিল বলে অবৈধ পথে বিদেশি টিভি চ্যানেলে আমাদের দেশের ৪০০ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। আমরা যদি ফাঁকটি যথাসময়ে চিহ্নিত করতে পারতাম তাহলে এই বিশাল অঙ্কের টাকা পাচার হতে পারত না। এ বছরের শেষের দিকে অথবা আগামী বছরের শুরুর দিকে টিআরপি নিয়ে নতুন আইন হচ্ছে। দেশের সব চ্যানেলকে সিএসএ সিস্টেমের আওতায় আনা হবে।’ মিডিয়ার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে বর্তমান সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতি ধন্যবাদ জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, দেশের মিডিয়াকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নীত করতে হলে এর মানোন্নয়ন করতে হবে। আর মানোন্নয়নের সঙ্গে বাজেটের সম্পর্ক রয়েছে বলে অনুষ্ঠান নির্মাণে বাজেট বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারলে মিডিয়াও উন্নত হবে।’

চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, ‘আমরা সবাই বন্ধু-সুহৃদ। আলোচনার মাধ্যমে সব কিছুই আদায় করা সম্ভব।’ এ সময় তিনি ৭১ টিভির সিইও মোজাম্মেল বাবু ও এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মানহানি মামলাটি প্রত্যাহারের ঘোষণাও দেন।

অ্যাটকোর সদ্য বিদায়ী সভাপতি মোসাদ্দেক আলী ফালু বলেন, ‘অ্যাটকোর মাধ্যমে এ আন্দোলন শুরু করেছিলাম। সে সময় আন্দোলন ভালোভাবে করেত পারিনি বলেই আজকের এ অবস্থা। শুধু বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধ করলেই হবে না, আরও অনেক কাজ করতে হবে। সরকারি ঘোষণার পাশাপাশি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। শিল্পীসমাজকে মাঠে নামতে বাধ্য করা হয়েছে। তাদের দাবিগুলো যদি না মানা হয় তাহলে আমাদের সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে যাবে।’

এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘ফরিদুর রেজা সাগর আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব। তা আমি ওইদিন টিভি চ্যানেলেও বলেছি। মিডিয়ার সম্প্রসারণে তার ভূমিকা রয়েছে।’ মিডিয়া ইউনিটিকে নিয়ে কোনো ধরনের অপপ্রচার না করার জন্য এ সময় মিডিয়াসংশ্লিষ্ট সবার প্রতি অনুরোধ জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ও ডিবিসির চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের একতা প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ কমিয়ে দেবে। অ্যাটকোর সদস্যরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। এই শিল্পের বিকাশে অর্থমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আমাদের উদ্যোগের মাধ্যমে শিল্পী-কলাকুশলী সবার উন্নয়ন সম্ভব।

এই শিল্পের সমস্যা সমাধানে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

চ্যানেল ২৪-এর স্বত্বাধিকারী এ কে আজাদ অভিযোগের সুরে বলেন, ‘চ্যানেল মালিকরা মিডিয়াকে ব্যবহার করে একে অন্যের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন। মিডিয়াকে ব্যবহার না করলে ঘটনা এত দূর গড়াত না।’

অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ৭১ টিভির সিইও মোজাম্মেল বাবু। আরও উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ‘নিউজ টোয়েন্টিফোর’-এর সিইও এবং বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, দেশ টিভির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফুল ইসলাম, চ্যানেল আইয়ের বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, এশিয়ান টিভির হারুন অর রশিদ, মাই টিভির নাসির উদ্দিন সাথী প্রমুখ। আরও ছিলেন এফটিপিওর সদস্যসচিব গাজী রাকায়েত, ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলিক, বিজ্ঞাপন নির্মাতা ও অভিনেতা আফজাল হোসেন প্রমুখ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর