মঙ্গলবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
ঘড়ি ধরে ৫ মিনিট

আমি সংগীতবোদ্ধা নই, সংগীতপ্রেমী

ধ্রুব গুহ

শোবিজ প্রতিবেদক

আমি সংগীতবোদ্ধা নই, সংগীতপ্রেমী

এলেন, দেখলেন আর জয় করলেন—ধ্রুব গুহর ক্ষেত্রে কথাটা দারুণ মানায়।  ‘যে পাখি ঘর বোঝে না’, ‘শুধু তোমার জন্য’ গানগুলো এখন শ্রোতাদের মুখে মুখে। শুরু করেছেন সংগীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ধ্রুব মিউজিক স্টেশন। আজ থাকছে তার সাক্ষাৎকার—

 

অন্যদের তুলনায় গানের জগতে আপনার আগমনটা বেশ বিলম্বে। এটা কেন?

আমি আসলে পরিকল্পনা করে গানের জগতে আসিনি। ছোটবেলা থেকেই গান ভালোবাসতাম, প্রচুর গান শুনতাম। স্কুলের অনুষ্ঠানে টুকটাক গেয়েছিও। কিন্তু গায়ক হতে চাইনি। একবার এক বন্ধুর সঙ্গে একটি স্টুডিওতে যাই। বন্ধুর ভয়েস দেওয়ার সময় আমি নিজের জায়গা থেকে সুরের প্রসঙ্গে একটু মন্তব্য করি। মিউজিক ডিরেক্টর সেটা শুনে অবাক হন। কোথায় গান গাই, গান শিখেছি কিনা নানা প্রশ্ন করেন।

আমি বললাম আমি গান করি না। তখন সংগীত পরিচালক অবাক। বললেন আপনার গাওয়া উচিত। এরপর সবাই উৎসাহ দিল। আমি ঠিক প্রস্তুত ছিলাম না। তবে আপাদমস্তক গানপাগল মানুষ ছিলাম। একসময় সাহস করে গেয়ে ফেললাম।

 

সাহস করে গাওয়ার পর এত রেসপন্স। অনুভূতি কেমন?

বলে বোঝানোর মতো নয়। নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছি। সত্যি করে বলতে কী এই গান আমাকে নতুন করে জন্ম দিয়েছে।

 

গানের রেসপন্স যেমন বেড়েছে, তেমনি প্রতিদিনই আপনার মিউজিক ভিডিওর ভিউয়ারস বাড়ছে। প্রত্যাশিত ছিল?

মোটেও না। ঐ যে বললাম পরিকল্পনা ছাড়াই গানে এসেছি। শ্রোতা-দর্শক যখন আমাকে এভাবে গ্রহণ করল তখন আমি নতুনভাবে জন্মেছি। এখন আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। সারা দেশে যখন নানা স্থানে আমার গানগুলো বাজে তখনকার অনুভূতিটা বলে বোঝানো যাবে না।

 

আপনি কী মনে করেন গানের ইউটিউব ভিউ গানের জনপ্রিয়তা বা ভালো মন্দের মাপকাঠি হতে পারে?

এক কথায় এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাবে না। ডিজিটাল মাধ্যমকে যেমন অস্বীকার করা যাবে না, তেমনি ইউটিউব গান প্রচার ও প্রকাশের একটা মাধ্যম মাত্র। মূল ব্যাপারটা নির্ভর করছে দর্শক-শ্রোতাদের ওপর। তারাই সবচেয়ে বড় মাপকাঠি। তবে ইউটিউবের মাধ্যমে দৃশ্যমান ভিউয়ারস পাওয়া যায়। মানসিক তৃপ্তি আসে যে এই গান এতবার ভিউ হয়েছে। অনেকটা আগে যেমন সবাই বলত এত কপি সিডি বিক্রি হয়েছে সেরকম। তবে সর্বশেষ কিন্তু ভিডিও কিংবা ইউটিউব নয়, টিকে থাকার গানই টিকে থাকবে।

 

মাঝখানে দেশের অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা বেশ খারাপ ছিল। আপনি কী মনে করেন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সেটা জেগে উঠেছে?

এটা সাড়া জাগিয়েছে বটে, কিন্তু সারভাইব করার জন্য যথেষ্ট নয়। মাঝখানের অচলাবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চলছে ঠিক কিন্তু এটা যথেষ্ট নয়। ইন্ডাস্ট্রিকে টিকিয়ে রাখতে শিল্পী-কলাকুশলী-প্রযোজক আর সরকারকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। নির্দিষ্ট নীতিমালা দরকার। সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে কিছুটা ছাড় দিতে হবে।

 

নতুন গানের খবর কী?

ফেব্রুয়ারিতে নতুন অ্যালবাম বেরিয়েছে। এখানে কলাকুশলী হিসেবে কাজ করেছেন প্লাবণ কোরেশী, আহমেদ রিজভী, তারেক তুহিন ও প্রিন্স রুবেল। এখানকার দুটি গানের ভিডিও শিগগির আসবে। আসলে ধ্রূব মিউজিক স্টেশনের ব্যানারে অন্য শিল্পীদের একাধিক প্রজেক্ট এসেছে। তাই আমারটা পিছিয়ে গেছে।

 

শিল্পী থেকে অডিও প্রযোজক। এটা কেন?

আমি সংগীতবোদ্ধা নই, কিন্তু সংগীতপ্রেমী। গান ভালোবাসি বলেই এখানে এসেছি। নবীন-প্রবীণ সব শিল্পীর একটা নির্ভরযোগ্য প্লাটফর্ম তৈরির জন্যই ধ্রূব মিউজিক স্টেশন। বলতে পারেন এটার মাধ্যমেই গানের জগতে আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে চাই। একাধারে একজন শিল্পী হিসেবে যেমন সবার অধিকার বুঝব ঠিক তেমনি প্রযোজক হিসেবেও কাউকে ঠকানোর কোনো চিন্তা আমার নেই। এই অডিও ইন্ডাস্ট্রিতে খানিক ভূমিকা রাখার জন্যই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করেছি।

 

আপনি তো করপোরেট জগতের মানুষ। গানে সময় দেন কীভাবে?

আমি বিশ্বাস করি ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। ব্যস্ততার মাঝেও গানের মানুষদের সঙ্গে মিশি। গানকে সময় দিই। সব কাজ শেষে রাতে যখন বাসায় ফিরি স্ত্রী হাসিমুখেই গ্রহণ করে। সেও গানের মানুষ। বাইরে শ্রোতা শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসা। ঘরে ও বাইরে এমন সমর্থনই আমার কাজের অনুপ্রেরণা!

সর্বশেষ খবর