শনিবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

আমায় ডেকো না, ফেরানো যাবে না...

আলী আফতাব

আমায় ডেকো না, ফেরানো যাবে না...

বিশ্ব মানবতার জয়গান গাইতে গিয়ে যুগশ্রেষ্ঠ হাজারো সোনার মানুষ শিল্পকে মনে-প্রাণে ধারণ করেন। সব বাধাকে জয় করার ব্রত হিসেবে বেছে নেন নান্দনিক সংগীত চর্চার পথ। শ্রোতার বিক্ষিপ্ত মনকে যথাস্থানে সন্নিবেশ করতে নিজের গায়কী বা সংগীতকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেন অনেকেই। তেমনি একজন শিল্পী লাকী আখন্দ। জীবনের শেষ বেলায় ভয়াল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে বাসা আর হাসপাতালে কেটেছে তার বেশির ভাগ সময়। অবশেষে গতকাল সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন এই গুণী সংগীতশিল্পী।

স্বাধীনতা-পরবর্তী আশির দশকে লাকী আখন্দ অসংখ্য কালজয়ী গানের সুর করেছেন এবং নিজেই গেয়েছেন। ‘আমায় ডেকো না, ‘এই নীল মনিহার’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘মামনিয়া’, ‘লিখতে পারি না কোনো গান’, ‘ভালোবেসে চলে যেও না’, ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’, ‘কি করে বললে তুমি’, ‘এত দূরে যে চলে গেছ’ গানগুলো নিজে গেয়েছেন কিংবা সমকালীন অপরাপর খ্যাতিমান শিল্পীর কণ্ঠে তুলে দিয়েছেন। সেসব সুরামৃত এখনো আমাদের বিমোহিত করে রাখে।

গত বছর লাকী আখন্দ গুরুতর অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে চিকিৎসকরা ফুসফুসের ক্যান্সার শনাক্ত করেন। এরপর ঢাকা থেকে থাইল্যান্ডের একটি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসায় পাঁচ লাখ টাকা অর্থ সহায়তাও দেন।

এক সময়ের তুমুল জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী লাকী আখন্দ একাধারে সংগীত পরিচালক, সুরকার ও গীতিকার। ১৯৮৪ সালে সারগামের ব্যানারে প্রথমবারের মতো একক অ্যালবাম বের করেন লাকী আখন্দ। ওই অ্যালবামের ‘এই নীল মণিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘রীতিনীতি জানি না’, ‘মামনিয়া’, ‘আগে যদি জানতাম’, ‘সুমনা’র মতো গান তখন শ্রোতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগায়। ১৯৮৭ সালে ছোটভাই ‘হ্যাপী আখন্দের’ মৃত্যুর পরপর সংগীতাঙ্গন থেকে অনেকটাই স্বেচ্ছায় নির্বাসন নেন এই গুণী শিল্পী। মাঝখানে প্রায় এক দশক নীরব থেকে লাকী আখন্দ ১৯৯৮ সালে ‘পরিচয় কবে হবে’ ও ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’ অ্যালবাম দুটি নিয়ে এই শিল্পী শ্রোতাদের মাঝে আবারও ফিরে আসেন।

সর্বশেষ খবর