সোমবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
পরিচালক সমিতির জরুরি সভা আজ \ নিরাপত্তা জোরদার

শাকিব খান ইস্যুতে উত্তপ্ত এফডিসি

আলাউদ্দীন মাজিদ

শাকিব খান ইস্যুতে উত্তপ্ত এফডিসি

শাকিব খান ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এফডিসি। তাই নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে সংস্থাটিকে। শুক্রবার সংস্থাটিতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করেছিল একটি মহল। এ কারণে প্রশাসন ওই দিন থেকেই নিরাপত্তা বাড়িয়েছে এফডিসিতে। সন্তোষজনক পরিচয় দিতে না পারলে কাউকে এখন সংস্থার ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সাংবাদিকদের প্রবেশের ক্ষেত্রেও তাদের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে। ৩৩টি সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে এফডিসির চারদিকের রাস্তাসহ ভিতরের সব কর্মকাণ্ড মনিটর ও রেকর্ড করা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেপিআইভুক্ত এই এলাকায় কেউ যদি কোনোরকম বেআইনি কর্মকাণ্ড ঘটায় বা ঘটানোর চেষ্টা করে সে যেই হোক সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শাকিব খানকে উকিল নোটিস পাঠানো ইস্যুসহ অন্যান্য বিষয়ে আজ এফডিসিতে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। আর এই সভাকে ঘিরে সংস্থায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এফডিসি কর্তৃপক্ষ।

শুক্রবার ছিল এফডিসিতে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে শাকিব খানের সভা। চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক ও শিল্পীদের হেয় করে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ এনে পরিচালক সমিতি শাকিব খানকে উকিল নোটিস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর এই সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন শাকিব খান।

এর প্রতিবাদে ওই দিন বিকালে এফডিসিতে সভা করতে যান শাকিব খান। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায় এফডিসিতে তার প্রবেশের আগেই একদল সন্ত্রাসী মোটরসাইকেল নিয়ে এফডিসির চারদিকে চক্কর দিতে থাকে। এতে এফডিসিতে থাকা শিল্পী এবং আসন্ন শিল্পী সমিতির নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ডিবি এফডিসিতে অবস্থান নেয়। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে ভীত হয়ে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় এফডিসিতে প্রশাসনের তেমন কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না। তবে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সংস্থার কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার ঘোষ। তিনি চলে যাওয়ার পর পরই সন্ত্রাসীরা এফডিসিতে আসে। খবর পেয়ে তিনিও পুলিশ প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেন। বিষয়টি নিয়ে এখন পক্ষ প্রতিপক্ষ একে অপরের দিকে অভিযোগের তীর ছুড়ছে। শাকিব খান বলছেন, তার সভা বানচাল করতেই সন্ত্রাসী আনা হয়েছিল। অন্য এক পক্ষ বলছে নির্বাচন বানচাল এবং পরিচালক সমিতিকে ভয় দেখাতেই শাকিব খান এফডিসিতে সন্ত্রাসী মহড়ার আয়োজন করে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চলচ্চিত্রকাররা। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার কাজী হায়াৎ দুঃখ করে বলেন, শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার স্থানে সন্ত্রাসী নিয়ে আসা কারও কাম্য নয়। অতীতে অনেক প্রতাপশালী তারকা ছিলেন, তারা কখনো এফডিসিতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড করেনি। এখনকার তারকাদের তাদের পথ অনুসরণ করা উচিত। এফডিসিকে কুলষিত করা মানে একটি দেশের প্রধান গণমাধ্যমকে ধ্বংস করার নামান্তর। এদিকে পরিচালক সমিতি জানায়, রবিবার সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন। তাকে নিয়ে আজ সমিতি জরুরি সভা করবে এবং শাকিব খানের বিরুদ্ধে উকিল নোটিস পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এদিকে শাকিব খানের অভিযোগ ছিল তাকে উকিল নোটিস পাঠানোর কোনো এখতিয়ার পরিচালক সমিতির নেই।

এই প্রশ্নের জবাবে সমিতির এক কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, যে কোনো ব্যক্তি কারও বিরুদ্ধে মানহানিকর বা কাউকে হেয় করে বক্তব্য দিলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা পক্ষ আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে। আমরা তো শাকিব খানকে শিল্পী সমিতির সভাপতি বা সদস্য হিসেবে উকিল নোটিস পাঠাচ্ছি না। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই তার কাছে এই নোটিস যাবে। এদিকে পরিচালক সমিতির আজকের সভাকে ঘিরে কেউ যাতে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে তার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এফডিসি কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ খবর