রবিবার, ২১ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা
ঘড়ি ধরে ৫ মিনিট

কাজেই আমার আনন্দ

মোস্তফা মতিহার

কাজেই আমার আনন্দ

শিল্প ও নান্দনিক রুচিবোধের সমীকরণে এ দেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে নতুন মাত্রা এনেছেন তানভীর মোকাম্মেল। একুশে পদকেও ভূষিত হয়েছেন বিকল্পধারার এই নির্মাতা। চলচ্চিত্র ও অন্যান্য বিষয়ে আজ তার আলাপচারিতা—

 

সম্মানজনক একুশে পদকপ্রাপ্তিতে আপনার অনুভূতি কী?

সত্যি কথা বলতে কী, আমি একটু নিভৃতচারী মানুষ। কাজেই আমি আনন্দ পাই। পুরস্কার-পদক এসব নিয়ে তেমন মাথা ঘামাই না। আমি একা তো কোনো চলচ্চিত্র নির্মাণ করি না। আমার একটা নিবেদিতপ্রাণ ফিল্ম ইউনিট আছে এবং আমরা সবাই মিলে কঠোর পরিশ্রম করে একেকটা ছবি তৈরি করি। আমার পদকপ্রাপ্তির ফলে সে সব কাজকে যদি স্বীকৃতি জানানো হয় তা হলে তা আমাদের ফিল্ম ইউনিটের সবার জন্যেই একটা আনন্দের বিষয় হয় বৈকি!

 

চলচ্চিত্রের স্বর্ণালী দিন ফেরাতে কী করা দরকার?

বাংলাদেশে ভালো ছবির সমস্যা হলো— চলচ্চিত্র শিক্ষার অভাব, বাংলাদেশে ভালো চলচ্চিত্রের জন্যে আধুনিক চলচ্চিত্রের ভাষা শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। সিনেমা প্রযুক্তিগত মাধ্যম। সেই প্রযুক্তিটা তো শিখতে হবে। তাই  ফিল্ম ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা প্রয়োজন। যেখান থেকে আগামী দিনের চলচ্চিত্র নির্মাতারা, সিনেমাটো গ্রাফাররা বা সাউন্ড-রেকর্ডিস্টরা প্রশিক্ষণ নিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পে যোগ দিতে পারবে। ন্যাশনাল ফিল্ম সেন্টারও প্রয়োজন।

 

বিকল্পধারা ও মূলধারা নিয়ে একটি দ্বন্দ্বে চলচ্চিত্রের লাভ-ক্ষতি কতটুকু?

পৃথিবীর সব দেশেই মূলধারা ও বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র আছে। এই ধারায় মূলত ফর্মূলামাফিক ছবি তৈরি করা হয়। বাণিজ্যটাই এখানে মূল, শিল্প সৃষ্টি নয়। বিকল্প সিনেমা নানা রকমই হতে পারে। আমরা বাংলাদেশে যে ধারা শুরু করেছিলাম। বিকল্পধারার ছবি সিনেমার সীমান্তকে প্রসারিত করে। তা ছাড়া বিকল্প সিনেমা বিকল্পভাবে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর নানা পথ খুঁজে বের করে থাকে। নির্মাতার স্বাধীনতার প্রশ্নে এটার দরকার আছে। অন্যথায় একজন চলচ্চিত্র নির্মাতাকে পুরোপুরিই প্রযোজক-পরিবেশক-হলমালিক এসব ব্যবসায়ীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়তে হয় এবং শিল্পসম্মত ছবি তৈরি করা কঠিন হয়ে পড়ে।  দেশে চলচ্চিত্র শিল্পের সঠিক বিকাশে তাই শক্তিশালী বিকল্পধারার চলচ্চিত্রের প্রয়োজন রয়েছে।

 

একুশে পদকপ্রাপ্তিতে নিঃসন্দেহে আপনার দায়িত্ব অনেকখানি বেড়ে গেল।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, সাতচল্লিশের দেশভাগ, ইসলামী মৌলবাদের আশঙ্কা, গার্মেন্টস শিল্প বা পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা, যা কিছু বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের বিষয় আমি সব সময় সেসব ব্যাপারে দায়িত্ব অনুভব করে এসেছি এবং সেসব নিয়ে ছবি তৈরি করেছি। আমার সারা জীবনের কাজই এসব নিয়ে। ফলে একুশে পদকপ্রাপ্তিতে আলাদা করে আমার দায়িত্ব বেড়েছে তা আমি মনে করি না। তবে আমি সচেষ্ট থাকব এই পদকের মর্যাদা রক্ষা করতে এবং আরও ভালো ভালো কাজ করতে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর