বৃহস্পতিবার, ২৯ জুন, ২০১৭ ০০:০০ টা

চলে গেলেন নাজমুল হুদা বাচ্চু ও সুধীন দাশ

চলে গেলেন নাজমুল হুদা বাচ্চু ও সুধীন দাশ

নাজমুল হুদা বাচ্চু - সুধীন দাশ

ঈদের আনন্দকে ম্লান করে দিয়ে চলে গেলেন শোবিজ জগতের দুই কীর্তিমান শিল্পী। একজন প্রখ্যাত অভিনেতা নাজমুল হুদা বাচ্চু অন্যজন বিশিষ্ট সংগীতজ্ঞ সুধীন দাশ। তাদের মৃত্যুতে মিডিয়াতে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। তাদের নিয়ে লিখেছেন—পান্থ আফজাল

 

নাজমুল হুদা বাচ্চু

ঈদের দুই দিন আগেও শুটিং করেছেন বাচ্চু। কাজ থেকে ফিরে জ্বরাক্রান্ত হন তিনি। একই সঙ্গে রক্তচাপ মাত্রাতিরিক্ত কমে যায়। ঈদের দিন দুপুরেই তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৭ জুন সকালে বাচ্চুর হার্টে সমস্যা ধরা পড়ে। বুধবার ভোর ৪টা ২০ মিনিটে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই প্রবীণ অভিনেতা নাজমুল হুদা বাচ্চু।  মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি একাধারে চলচ্চিত্র, নাটক, মঞ্চে কাজ করে জনপ্রিয় হন।

গতকাল বাদ জোহর গুলশানের আজাদ মসজিদে নাজমুল হুদা বাচ্চুর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বনানী গোরস্তানে তার বাবার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। বাচ্চুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি, শিল্পী ঐক্যজোটসহ বিভিন্ন মিডিয়া সংগঠন। সংগঠনগুলো তার আত্মার শান্তি কামনা ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। নাজমুল হুদা বাচ্চুর না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় শোকে মুহ্যমান কণ্ঠশিল্পী তিমির নন্দী। তিনি তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেন, ‘বুকটা ভেঙে যাচ্ছে! এমনিতেই শরীর ভালো যাচ্ছে না, তার ওপর প্রিয়জনদের চলে যাওয়া সহ্য করতে পারছি না।’  নাটক ও বিজ্ঞাপন ছাড়াও জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র বিভিন্ন পর্বে নিয়মিত দেখা গেছে নাজমুল হুদা বাচ্চুকে। প্রবীণ এ অভিনেতার উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে অজ্ঞাতনামা, রানওয়ে, চন্দ্রগ্রহণ, ডাক্তার বাড়ী, বিদ্রোহী পদ্মা, শ্রাবণ মেঘের দিন, শঙ্খনীল কারাগার, সূর্য দীঘল বাড়ী, দরিয়া পাড়ের দৌলতী, সারেং বৌ প্রভৃতি।

 

সুধীন দাশ

প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ ও নজরুল গবেষক সুধীন দাশ   মঙ্গলবার না ফেরার দেশে চলে যান। ওইদিন রাত ৮টা ২০ মিনিটে  শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। সুধীন দাশ অনেক দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। সুধীন দাশের মরদেহ গতকাল সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয় এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হয় পোস্তগোলা শ্মশানে। সুধীন দাশ ১৯৮৮ সালে একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। এ পর্যন্ত তিনি নজরুল ইনস্টিটিউট থেকে ১৬টি ও নজরুল একাডেমি থেকে পাঁচটিসহ মোট ২১টি খণ্ডে নজরুলগীতির স্বরলিপির বই বের করেছেন। লালনগীতির ক্ষেত্রেও তার অবদান সর্বজন স্বীকৃত। তিনিই প্রথম লালনগীতির স্বরলিপির গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। প্রবীণ এই শিল্পীর মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে সংগীত জগতসহ পুরো শোবিজ অঙ্গনে। মিডিয়াব্যক্তিত্ব ও শ্রোতাদের কথায় এমন একজন গুণী শিল্পীর শূন্যতা কখনো পূর্ণ হওয়ার নয়।

সর্বশেষ খবর