সোমবার, ১০ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

হাবিব-তিশা ইস্যুতে তোলপাড় মিডিয়াপাড়া

শামছুল হক রাসেল

হাবিব-তিশা ইস্যুতে তোলপাড় মিডিয়াপাড়া

বেশ কিছুদিন ধরে গুঞ্জন উঠছে, সংগীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ ও তানজিন তিশার মধ্যে প্রণয়ঘটিত কিছু একটা চলছে। এমনকি মাঝে কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে খবর হয় যে, হাবিব এবং রেহানের বিচ্ছেদের কারণ মডেল-অভিনেত্রী এই তানজিন তিশা। এবার এ গুঞ্জনকে বেগবান করতে বলতে গেলে বিচ্ছেদের অনুঘটক হিসেবে ‘পরোক্ষভাবে’ তানজিন তিশার দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুললেন রেহান। আগুনে ঘি ঢালার মতো তিনি এ অভিযোগটি করেছেন তার ফেসবুক ওয়ালে। সম্প্রতি ইয়াবা ডন কার্লোসকে ঘিরে তারকাপাড়ার কয়েকজনের নাম খুব জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, কার্লোসের সঙ্গে বিশেষ বান্ধবী হিসেবে সম্পর্ক ছিল পিয়া বিপাশা, পিয়াসা, সাবিনা ও মিথিলার। আর এই ইস্যুকে সামনে এনে বৃহস্পতিবার রাতে হাবিবের সাবেক স্ত্রী রেহান একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘পিয়া বিপাশা আমাকে হার্ট করেছিলে। দেখো, বছর হয়নি দুইবার তোমার নাম আসলো তোমার নষ্ট কুকর্ম নিয়ে। এখন তানজিন তিশা তোমার পালা। আসবে ভেরি সুন।’ এ স্ট্যাটাসের আদি-অন্ত জানতে যোগাযোগ করা হয় রেহানের সঙ্গে। বাংলাদেশ প্রতিদিনকে তিনি বলেন, ‘বলতে পারেন বুকের ভিতর জমে থাকা ক্ষোভ থেকে এ স্ট্যাটাস লিখেছি। আমার আর হাবিবের সংসার ভাঙার পেছনে টনিক হিসেবে কাজ করেছে পিয়া বিপাশা ও তানজিন তিশা। পিয়া বিপাশা তার কুকর্মের ফল পাওয়া শুরু করেছে। এবার তিশার পালা।’ ঠিক বুঝলাম না, একটু পরিষ্কার করে বলবেন কী? রেহান বলেন, ‘ডিভোর্সের আগে থেকে হাবিবের সঙ্গে তিশার যোগাযোগ, বলতে লজ্জা নেই লিভ টুগেদার করত। কেউ কেউ তো এটাও বলছে, তারা নাকি বিয়েও করে ফেলেছে।’ মুখের কথা থামিয়ে এবার বলতে হলো, বিয়ে যদি করেও থাকে সমস্যাটা কোথায়? আপনি তো এখন ডিভোর্সড। এবার রেহান বলেন, ‘জি আপনার কথা ঠিক আছে। কিন্তু ওই যে বললাম ডিভোর্সের আগে থেকেই তাদের মধ্যে পরকীয়া ছিল। সে আমাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে ভাইভার-মেসেঞ্জারে মেসেজ পাঠিয়েছে এবং এখনো পাঠাচ্ছে।’

রেহানের এ অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিশা বলেন, ‘দেখুন হঠাৎ করে এসব আলোচনা কেন উঠল তা বোধগম্য নয়। যে-যাই বলুক না কেন হাবিব আর আমার কোনো ইস্যু নিয়ে কথা বলতে চাই না। এটা একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার।’ তার মানে সত্যিই আপনারা লিভ টুগেদার করছেন? তিশা বলেন, ‘উত্তর একটাই। পার্সোনাল বিষয়ে কেন কথা বলব? তারপরও একটি কথা না বললেই নয়। রেহানের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। ও এখন হাবিবের পাস্ট। ওর মতো সাধারণ একটি মেয়ে এসব কথাবার্তা বলে আলোচনায় আসতে চাচ্ছে। কিন্তু আমরা তো সেটা পারব না। সমাজে আমাদের একটা অবস্থান তৈরি হয়েছে। রেহান যদি এসব কথা বলে থাকে তাহলে তাকে প্রমাণ করতে বলুন।’ রেহানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিশা তো আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না। তাহলে হঠাৎ কেন এ আলোচনা? এবার রেহান বলেন, ‘তিশা মিথ্যা বলেছে। গত ৫ জুলাইও সে ফোন করেছে। কিন্তু ইচ্ছা করে ফোন ধরিনি। ফোন ধরলেই উল্টা-পাল্টা কথা বলে। ডিভোর্সের আগেও তিশা আমাকে বহু মেসেজ পাঠিয়েছে। যা এখনো সংরক্ষিত আছে। আমার নামে বেশ কয়েকটি ফেক অ্যাকাউন্টও চালাচ্ছে তিশা।’ অন্যদিকে, ফোনে হুমকির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তিশা বলেন, ‘রেহান সব মনগড়া কথা বলছে। আমি কেন ওকে হুমকি-ধমকি থ্রেট করব। উল্টা সে আমাকে হুমকি দিচ্ছে। যখন আইনি পদক্ষেপ নেব তখন সবাই জানবে। তা ছাড়া ওকে যদি কখনো ফোন করেও থাকি সেটা অন্য কোনো কারণে, হয় তো অনেক আগে। আর আমি নই, রেহানই আমার নামে উল্টা-পাল্টা আইডি চালাচ্ছে। চাইলে সে আইডির স্ক্রিনশট পাঠাতে পারি। আর ৫ জুলাই যদি ফোন পেয়েও থাকে ভুলে প্রেস পড়ে গিয়েছিল। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে।’

তিশা আরও বলেন, ‘মনে হচ্ছে রেহান মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে।  না হলে সে কীভাবে বলতে পারে অন্য একজন সেলিব্রেটি এবং আমার সঙ্গে তার স্বামীর সম্পর্ক ছিল ও আছে। তার উচিত হাবিবের বর্তমান নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি না করা। কারণ সে তো এখন পাস্ট। তার উচিত পাস্টেই থাকা। রেহান তাদের বিচ্ছেদের জন্য অনেকের দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন। বিশেষ করে আমার দিকে। এটা বোঝা উচিত, শুধু একটা মেয়ের জন্য বিচ্ছেদ হয় না। আরও অনেক কারণ থাকতে পারে।’ এদিকে কনসার্ট করতে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন হাবিব। তানজিন তিশা এবং রেহানের এ ইস্যু নিয়ে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়েছেন হাবিব ওয়াহিদ। তিনি লিখেছেন, ‘আমি এখন অস্ট্রেলিয়াতে অবস্থান করছি কনসার্টের জন্য। কিছুটা দুঃখজনক যে, একটা বিষয় নিয়ে আবারও কথা বলতে হচ্ছে। নিউজ দেখলাম। যেখানে বলা হয়েছে যে, তানজিন তিশার কারণে আমার সঙ্গে রেহানের ডিভোর্স হয়। কথাটি ঠিক নয়, কারণ “এক হাতে তালি বাজে না।” তানজিন তিশার সঙ্গে আমার কী সম্পর্ক  সেটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত বিষয় এবং এটি নিয়ে কিছু বলতে আমি বাধ্য  নয়,  কেনই বা আমার ডিভোর্সের কয়েক মাস পর এসব কথা রেহানই বলল এটাও আমার কাছে আশ্চর্যজনক। বলার হলে আরও আগেই বলত। ডিভোর্সের কারণ যাই হোক না কেন আমি তো জোর করে ডিভোর্স করতে বলিনি তাকে। সমঝোতার মাধ্যমেই তা হয়। তাহলে এখন এত কাদা ছোড়াছুড়ি কেন? এসব  করে কারোই তো কোনো লাভ আমি দেখি না। এসব মোটেই কাম্য নয়।’

সর্বশেষ খবর