রবিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভালো নেই কাঙ্গালিনী সুফিয়া

পান্থ আফজাল

ভালো নেই কাঙ্গালিনী সুফিয়া

গ্রাম্য একটি গানের অনুষ্ঠানে ১৪ বছর বয়সে সংগীত জীবন শুরু। আর মাত্র ১৫ বছর বয়সে সুধীর হালদার নামের একজন বাউলের সঙ্গে বিয়ে। ১৯৬১ সালে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার রামদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন প্রসিদ্ধ এই লোকসংগীত শিল্পী। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক ডিজি ও প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার এই শিল্পীকে কাঙ্গালিনী উপাধি প্রদান করেন। তারপর থেকে তিনি দেশব্যাপী কাঙ্গালিনী সুফিয়া নামে পরিচিত হন। কিন্তু এই মাটির গানের শিল্পী বর্তমানে ভালো নেই। অনেক কষ্টে-সৃষ্টে কাটছে তার দিনকাল।  সম্প্রতি কাঙ্গালিনী সুফিয়াকে দেখা গেল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায়। বটতলার একটা চায়ের দোকানে বসে ছিলেন একা, সঙ্গে একটি একতারা আর সামনে রাখা একটি ঝুড়ি। বয়সে ভেঙে পড়া কণ্ঠে হাঁপড় নিতে নিতে তিনি গান গাচ্ছিলেন। সামনে দিয়ে অনেকে চলে যাচ্ছিল না চিনতে পেরে। যারা চিনতে পেরেছিল তারা বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে ছিল বাংলা লোকগানের এই সাধকের প্রতি। তার সামনে রাখা ঝুড়িতে অনেকে টাকা দিচ্ছিল, সেটার পরিমাণও সর্বসাকুল্যে দু-তিনশ হবে। সেদিন তার সঙ্গে কথা বলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরাফাত ইয়াসির বর্ণ। সে জানায়, ‘পরিবারের অভাব অনটনের কারণে ঘুরে ঘুরে গান গেয়ে টাকা তুলছেন, কোনো রকমে খেয়ে না খেয়ে চলছেন।’ এক সময় রাজবাড়ীর পাংশায় নিজ বাড়িতে মাশরুমের চাষ করতেন, সেটা দিয়েই চলতেন কোনো রকমে। সে সময়ের রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক হাসানুজ্জামান কল্লোল তার ভিটেতে ঘর তুলে দিয়েছিলেন, থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। বিভিন্ন জটিলতার কারণে ভিটে ছাড়তে হয়েছে তাকে। জানা যায়, এখন সাভারের রেডিও কলোনির পাশে থাকছেন। চলছেন এভাবেই না খেয়ে। উল্লেখ্য, এই ভাটির গানের শিল্পীর মোট রচিত গানের সংখ্যা প্রায় ৫০০। তিনি ‘রাজ সিংহাসন’ চলচ্চিত্রে প্রথম কণ্ঠ দেন।

সর্বশেষ খবর