শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ

১৯৭১টি মোমবাতি প্রজ্বালন করা হবে

১৯৭১টি মোমবাতি প্রজ্বালন করা হবে

দেশের জনপ্রিয় আবৃত্তিশিল্পী শিমুল মুস্তাফা। একজন দুরন্ত, দুর্নিবার এবং চির আপসহীন মানুষ তিনি। আশির দশকের গোড়ার দিক থেকেই জড়িয়ে পড়েন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে। কণ্ঠে আওয়াজ তোলেন। তার ভয়হীন কণ্ঠ আজও ভয়হীন। বিজয়ের মাস উপলক্ষে ডিসেম্বরে তিনি ৭১টি কবিতা আবৃত্তি করবেন। এই আয়োজন ও তার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন— পান্থ আফজাল

   

১৭ অক্টোবর ছিল আপনার ৫২তম জন্মদিন। দিনটি কেমনভাবে উদযাপন করলেন?

দেখতে দেখতে জীবন থেকে পেরিয়ে গেছে অনেকগুলো বসন্ত। আসলে তেমন করে জন্মদিন পালন হয় না। তবে জন্মদিন উপলক্ষে বরাবরই অনেকের অভিনন্দন বার্তা পাই। জন্মদিনে সেদিন বৈকুণ্ঠের সবাই মিলে আমার বাসায় এসে আমাকে চমকে দেয়। ছোট্ট একটা আয়োজনে সবাই মিলে গান, কবিতায় কিছুটা সময় কাটিয়েছি। 

 

 

বিজয়ের মাস উপলক্ষে এবারও ৭১টি কবিতা আবৃত্তি করবেন। এই আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাই...

২০১০ থেকে আয়োজনটি শুরু করে বৈকুণ্ঠ আবৃত্তি একাডেমি। এবার অষ্টমবারের মতো একই ভেন্যু ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে এই আয়োজনটি হবে। ‘আপস করিনি কখনই আমি এই হলো ইতিহাস’ শিরোনামের এই অনুষ্ঠানটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। বিকাল সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠানটি শুরু হবে। বরাবরের মতো একাত্তর স্মরণে ৭১টি কবিতা আবৃত্তি করব। অনুষ্ঠান চলবে প্রায় ৬ ঘণ্টা। প্রথমে ২৫টি কবিতা পাঠ শেষ করব। এরপর নামাজের বিরতি। বিরতি শেষে ২৬ মার্চ কালরাতকে স্মরণ করে ১৯৭১টি মোমবাতি প্রজ্বালন করা হবে। আগে আয়োজনে ৭১টি ফানুস ওড়ানো হতো, তবে সেটা বাদ দিতে হচ্ছে। কারণ অফিশিয়ালি এটা রিস্কি হয়ে যায়। এই আয়োজনে চেয়ার দেওয়া হয় প্রায় ৫ হাজারটি আর মানুষ হয় প্রায় ৬-৭ হাজারের মতো।

 

এবারের আয়োজনে কোনো চমক থাকবে?

গতবার ইন্ডিয়া থেকে সৌম্য এসেছিল। পিন্টু ঘোষ বাঁশি বাজিয়েছিল। আসতে বললে যে কেউ আসবে। ব্রততীও আসতে চায়। আসলে এই অনুষ্ঠানে কাউকে আনতে তেমন বাজেট আমাদের নেই। এর আগে নির্মলেন্দু গুণ, হেলাল হাফিজ, রবীন্দ্র গোপ, আসাদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল, প্রিয়াংকা গোপ গান গেয়েছিল। এবার প্রিয়াংকা গোপ যদি না হয় সাদিয়া পুতুলকে আনতে পারি। এখনো ঠিক হয়নি, কথা হয়েছে মাত্র। ঢাকায় থাকলে পুতুল আসবে বলেছে।

 

অনুষ্ঠানে ‘সবকটা জানালা খুলে দাও না’ গানটি থাকবে?

এই গানটি সব সময়ই আমার অনুষ্ঠানে থাকে। তবে এবার এই গানটি গাওয়ার জন্য সাবিনা ইয়াসমিনকে আনতে চেষ্টা করছি। তাকে এই গানের জন্য সম্মান দেখাতে চাই। চ্যানেল আই-এর বাবু ভাইকে বলেছি যে, এবারের অনুষ্ঠানে সাবিনা আপাকে চাই।

 

কিছু দিন আগে চট্টগ্রামের নন্দনমঞ্চের আয়োজনে আবৃত্তি করেছেন...

বোধনসহ আরও কিছু সংগঠনের তত্ত্বাবধানে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই আয়োজনটি হয়। প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টাব্যাপী ২৫-২৬টি কবিতা পড়েছিলাম। আমি সেদিন সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা দিয়েই শুরু করেছিলাম পরিবেশনা। জেনেছিলাম প্রায় ৫০০ টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। তারপর এই টিকিটগুলোকেই রি-টিকিট হিসেবে বিক্রি করা হয়েছিল।

 

আবৃত্তির পাশাপাশি অভিনয়ও করেছিলেন, ফটোগ্রাফিও করেন...

অনেক আগে জহির রায়হানের অনুরোধে ‘শুধু সেই জানে’ নাটকে অভিনয় করেছিলাম। এরপর আরও একটি নাটকে অভিনয় করি। শিমুল মুস্তাফার চরত্রেই। আর আবৃত্তির পাশাপাশি আমি টুকটাক ফটোগাফিও করি ভালো লাগা থেকে।

 

পেশা হিসেবে আবৃত্তি শিল্পের ভবিষ্যৎ কী?

আবৃত্তি পেশা হিসেবে দাঁড়াবে— এমনটা আমি চাই না। শিল্প যখন পেশা হয়ে যায় তখন শিল্পত্বহানি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবৃত্তি আসলে আত্মতৃপ্তির জন্যই করা উচিত।

 

সর্বশেষ খবর