বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ

অতীতকে কেউ মনে রাখে না

শোবিজ প্রতিবেদক

অতীতকে কেউ মনে রাখে না

দক্ষ অভিনেতা এবং সাবেক সৎ সরকারি কর্মকর্তা মহিউদ্দীন আহমেদ বাহার। বর্তমানে তার দিন কাটছে ঘরের  চার দেয়ালের মাঝে অসুখের সঙ্গে বসবাস করে। এই ব্যক্তিত্বের মুখেই শোনা যাক কেমন আছেন তিনি—

 

কেমন আছেন?

এই তো কোনোভাবে বেঁচে আছি। শরীরটা আর সাপোর্ট দিচ্ছে না। ২০০৬ সালে হার্টের বাইপাস সার্জারি করার পর ২০১২ সাল পর্যন্ত ভালো ছিলাম, ২০১৩ ও ২০১৬ সালে দুই দফা লাইফ সাপোর্ট থেকে ফিরে এলাম। চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। পেনশনের টাকা দিয়ে সংসার চলে না। দুই ছেলে আর নাতি-নাতনিদেরও দেখতে হয়। মেয়র আনিসুল হকের ‘শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশন’ সংগঠন থেকে মাসে ওষুধের খরচ বাবদ দশ হাজার করে টাকা পাই। তা দিয়ে অন্তত ওষুধটা চালিয়ে যেতে পারছি।

 

অভিনয় থেকে অনেক দিন দূরে আছেন?

হ্যাঁ, ওই যে বললাম, শরীরে কুলায়না। এখন শুধু  ‘ইত্যাদি’তে কাজ করছি। তাও অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে যাই আবার ওভাবে ফিরে আসি।

 

মিডিয়ার লোকজন খবর কি নেয়?

না, কেউ খোঁজ-খবর নেয় না। যখন লাইফ সাপোর্টে ছিলাম তখন শুধু হানিফ সংকেত আর সাংবাদিক কাশেম হুমায়ূন আমার পাশে থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। আর কেউ দেখতেও আসে না।

 

শিল্পীরা অসহায় বা অসুস্থ হলে অন্য শিল্পীরা পাশে দাঁড়ান না কেন?

কেউ তো অতীতকে মনে রাখে না। তাই বিপদে কেউ কারও খবর রাখে না। আমার অনুরোধ, একজন শিল্পীর দুর্দিনে অন্য শিল্পী কিছু করতে না পারুক, অন্তত সান্ত্বনা দিতে হলেও যেন এগিয়ে আসে।

 

বর্তমান সময়ের নাটক নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কেমন?

আগের মতো মানসম্মত নাটকের এখন বড়ই অভাব। ডেডিকেশন কম এবং বাণিজ্যিকতা বেশি। অভিনয়ে উৎকর্ষতাও নেই। মানসম্মত অভিনয় করতে গেলে ভালো গ্রুপ থিয়েটারে কাজ করে আসতে হবে।

 

আপনার কর্মজীবন নিয়ে কিছু বলুন?

আমি ৪০ বছর অভিনয় করেছি। ইত্যাদিতে কাজ করছি ২৫ বছর হলো। নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ে আলী যাকের, আসাদুজ্জামান নূর, আবুল হায়াত প্রমুখের সঙ্গে কাজ করেছি। হুমায়ূন আহমেদ থেকে শুরু করে এমন কোনো প্রখ্যাত নির্মাতা নেই যাদের নাটকে কাজ করিনি। বাদল রহমানের ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’ ও গিয়াস উদ্দিন সেলিমের ‘মনপুরা’ ছবিতেও কাজ করেছি। ১৯৭৩ সাল  থেকে বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করে সর্বশেষ সহকারী সচিব হিসেবে ২০০৫ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিই। সততা ও আদর্শ বজায় রেখে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করে গেছি বলে সরকারি দফতরসহ সব জায়গা থেকে এখনো সম্মান পাই। এটিই আমার বড় সন্তুষ্টি। এ ছাড়া ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও কাজ করেছি।   

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর