সোমবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

এবার উচ্চাঙ্গ সংগীত মাতাবেন যারা

পান্থ আফজাল

এবার উচ্চাঙ্গ সংগীত মাতাবেন যারা

এক সময় শীতের শুরুতেই গ্রাম আর শহরের অলি-গলির পথে দেখা যেত বিভিন্ন কনসার্টের হিড়িক। সারা দিনব্যাপী চলত গানের সেই জমজমাট আয়োজন। তবে একটু রাত হলেই সমাপ্তি টানতে হতো। সেই চিত্রটার পরিবর্তন ঘটেছে গত কয়েক বছর ধরে। রাতভর নির্ঘুম থেকে সংগীতপিপাসুরা দল বেঁধে উপভোগ করছে সংগীতসুধা। বরাবরের মতো এবারও দেশ-বিদেশের গুণী সংগীতজ্ঞ ও নৃত্য দলগুলোর অংশগ্রহণে পর্দা উঠবে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় সংগীত উৎসবের। আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর ষষ্ঠবারের মতো বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আয়োজিত পাঁচ দিনের উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসব-২০১৭ অনুষ্ঠিত হবে প্রদীপের আলোকচ্ছটায়। উপমহাদেশের প্রথম সারির উল্লেখসংখ্যক শিল্পীর অংশগ্রহণে এবং দর্শক সংখ্যা বিচারে এই উৎসব পৃথিবীর সবচেয়ে বড় উচ্চাঙ্গ সংগীত আসর হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এবারকার সংগীত উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামানের নামে। ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগিতায় এবং স্কয়ার নিবেদিত এবারের উৎসবের সম্প্রচার সহযোগী হিসেবে থাকছে চ্যানেল আই। এবার উপমহাদেশের শুধু শাস্ত্রীয় সংগীতই নয়, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ওয়েস্টার্ন ক্লাসিক্যাল। উৎসবটি প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত চলবে। উৎসবের প্রথম দিন সন্ধ্যা ৭টায় কাজাখস্তান থেকে আসা ৫৮ সদস্যের আস্তানা সিম্ফনি ফিলহারমনিক অর্কেস্ট্রার সঙ্গে গ্রামী-মনোনীত প্রখ্যাত বেহালা শিল্পী পদ্মভূষণ ড. এল সুব্রহ্মণ্যনের যুগল-বাদন পরিবেশিত হবে। পাঁচ দিনের এই মহোৎসবে আরও থাকবেন মেওয়াতি ঘরানার প্রবাদপ্রতিম শিল্পী পদ্মভূষণ পণ্ডিত যশরাজ (খেয়াল), পণ্ডিত বিশ্বমোহন ভট্ট (মোহনবীণা), বিদুষী কালা রামনাথ (বেহালা), পদ্মভূষণ বিদ্বান ভিক্কু বিনায়করাম (ঘাটম), ওডিশি নৃত্যশিল্পী সুজাতা মহাপাত্র, পণ্ডিত বুধাদিত্য মুখার্জি (সেতার), পণ্ডিত  কৈবল্যকুমার গুরভ (খেয়াল), সাসকিয়া রাও (চেলো) এবং কত্থক নৃত্যদল অদিতি মঙ্গলদাস ড্যান্স কোম্পানি প্রমুখ। এদের সঙ্গে মঞ্চ আলোকিত করবেন বিদুষী পদ্মা তলওয়ালকার (খেয়াল), পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার (সরোদ), ড. মাইসোর মঞ্জুনাথ (বেহালা), পণ্ডিত রনু মজুমদার (বাঁশি), পণ্ডিত কুশল দাস (সেতার), পণ্ডিত দেবজ্যোতি বোস (সরোদ), রাকেশ চৌরাসিয়া (বাঁশি), পূর্বায়ন চট্টোপাধ্যায় (সেতার), রাজরূপা চৌধুরী (সরোদ), আবীর হোসেন (সরোদ) প্রমুখ। এই আয়োজনের মধ্যমণি হিসেবে থাকবেন পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা, পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, ওস্তাদ রাশিদ খান, পণ্ডিত উল্লাস কশলকার, ওস্তাদ শাহিদ পারভেজ খান প্রমুখ। তবলায় সঙ্গত করবেন পণ্ডিত অভিজিৎ ব্যানার্জি, পণ্ডিত শুভঙ্কর ব্যানার্জি, পণ্ডিত যোগেশ সামসি প্রমুখ। বিদেশি শিল্পী ছাড়াও বাংলাদেশের পাঁচজন প্রতিভাবান নবীন নৃত্যশিল্পী স্নাতা শাহরিন, সুইটি দাশ, অমিত চৌধুরী, সুদেষ্ণা শ্যামাপ্রভা ও মেহরাজ হক তুষারসহ সরকারি সংগীত বিদ্যালয়, পরম্পরা সংগীতালয়ের ছাত্রছাত্রী এবারের উৎসবে অংশগ্রহণ করবেন। জানা যায়, উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি, আবাহনী লিমিটেডের সভাপতি সালমান এফ রহমান এবং স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী। বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে গত রবিবার ষষ্ঠবারের মতো সংবাদ সম্মেলনে এ উৎসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়। গত পাঁচ বছর ধরে নিয়মিত শাস্ত্রীয় সংগীতের এই অনুষ্ঠানটি রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে হলেও এ বছর ভেন্যু না পেয়ে প্রথমে বাতিল হয়। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে আয়োজনটি ঘিরে বিদেশি শিল্পীদেরও দাওয়াত দেওয়া সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ সময়ে এসে আর্মি স্টেডিয়ামে জায়গা না পাওয়ায় অনুষ্ঠানের ষষ্ঠ আসরটি বাতিল করা হয়েছিল। পরবর্তীতে জানানো হয়, গত ১৪ নভেম্বর বেঙ্গল ফাউন্ডেশন এই উৎসবের জন্য আবাহনী মাঠের বরাদ্দপত্র  পেয়েছে।

সর্বশেষ খবর